খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলবে লন্ডন ক্লিনিকে

- Update Time : ০৭:২৯:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৯৩ Time View
উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য নেওয়া হচ্ছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে। সেখানে লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হবে তাকে। মঙ্গলবার রাতে ঢাকা থেকে রওয়ানা হয়ে পরদিন লন্ডন পৌঁছে এই হাসপাতালে ভর্তি হবেন তিনি। সোমবার (৬ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে যেসব ফর্মালিটিজ আছে সেগুলো সম্পন্ন করে আগামীকাল রাত ১০টায় ইনশাআল্লাহ কাতারের আমিরের স্পেশাল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ম্যাডাম ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন ‘
‘লন্ডন ক্লিনিক বলে একটা পুরোনো ঐহিত্যবাহী হাসপাতাল আছে এটি এনএইচএসের অধীনে একটি হাসপাতাল… সেখানে উনাকে (খালেদা জিয়া) ভর্তি করা হবে। হিথ্রো ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দর থেকে উনাকে সরাসরি সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। এই হাসপাতাল উনি চিকিৎসাধীন থাকবেন।’
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার খবর জেনে রাজকীয় বহরের এ বিশেষ বিমান দিয়েছেন জানিয়ে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ‘কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। এই বিমানেই ম্যাডামের আগামীকাল রাতে লন্ডন যাত্রা শুরু হবে।’
‘আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের রাজকীয় কাতারের চারজন চিকিৎসক ও প্যারা মেডিকস থাকবেন। ঢাকা থেকে খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের ছয়জন সদস্য এই বিমানে যাবেন। তারা হলেন- অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার, অধ্যাপক এফএম সিদ্দিক, অধ্যাপক নরুদ্দিন আহমেদ, ডা. জাফর ইকবাল, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন ও ডা. মোহাম্মদ আল মামুন।’
তিনি বলেন, ‘এছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার ছোট ছেলের স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এনামুল হক চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল ও খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তারসহ ব্যক্তিগত কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।’
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, কিডনি সমস্যাসহ নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছেন।
দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা
ডা. জাহিদ বলেন, ‘আপনাদের মাধ্যমে সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই যারা ম্যাডামের সুস্থতার জন্য দোয়া করেছেন, বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বিভিন্নভাবে প্রার্থনা করেছেন, তাদের সবার কাছে দলের পক্ষ থেকে আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই, ধন্যবাদ জানাই। ম্যাডাম সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন, দল ধন্যবাদ জানিয়েছে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব ধন্যবাদ জানিয়েছেন।’
‘ম্যাডামের আগামী চিকিৎসাটা যাতে সুস্থ হয়ে আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে উনি আবার আমাদের মাঝে ফেরত আসতে পারেন সেজন্য দেশবাসীকে দোয়া করার জন্য দলের পক্ষ থেকে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটি সবাই আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। ম্যাডামের পরিবারও ম্যাডামের জন্য দোয়া চেয়েছেন।’
এখন লন্ডনের হাসপাতালেই চিকিৎসা
এজেডএম জাহিদ বলেন, ‘ম্যাডামের নানা শারীরিক জটিলতা রয়েছে যা আমরা বিভিন্ন সময় বলেছি। সর্বোপরি উনার লিভারের জটিলতাটা অর্থাৎ লিভার সিরোসিস পরবর্তিতে কম্পেনসেন্টারি লিভার ডিজিজ বলে গ্রেট-টু সেটার জন্য টিপস (চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিশেষ পদ্ধতি টিআইপিস-টিপস) করা হয়েছে। টিপসের কিছু টেকনিক্যাল অ্যাসপেক্ট আছে অ্যাডজাস্টমেন্টের বিষয় আছে… আপনি দেখতে হার্টে স্টান্টিং করার পর চেক করে আবার সেটার জন্য রি-স্টান্টিং করে অথবা চেক করে দেখে যে, স্টান্টিংটা ভালোভাবে কাজ করছে কি না… এই জিনিসগুলো তো আমরা করতে পারি নাই।’
‘হার্টে উনার ব্লক ছিল একাধিক। আমরা খালি লাইফ সেভিং যেটুকু পোরসন সেটুকু করা হয়েছিল ওই সময়ে। কারণ ওই সময়ে উনার শারীরিক সুস্থতা ওইরকম ছিল না। উনার আরও যে ব্লক আছে সেটা অ্যাড্রেস করার দরকার আছে, উনার ক্রনিক কিডনি ডিজিজ যেটা আছে সেটা অ্যাড্রেস করতে হবে… উনার করোনা পরবর্তিতে কিছু জটিলতা হয়েছে সেগুলো নিরসন করার ব্যবস্থা নিতে হবে… এটা ওভারঅল থ্রো চেকিংয়ের জন্য যেটা আমাদের দেশে হয়েছে.. আমাদের দেশের ফিজিশিয়ানরা, এভারকেয়ার হসপিটালের স্টাফ তারা বেস্ট…. এ ব্যাপারে আমাদের ম্যাডামের পক্ষ থেকে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে, পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের ডি-স্যাটিসফেকশন নাই, সবাই হ্যাপি, উই আর হ্যাপি অলসো, দল হ্যাপি। কাজেই আরও কিছু উন্নত করার জন্য সেখানে আরও থ্রো চেকিং হবে।’
তিনি বলেন, ‘লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টের …আমাদের মনে রাখতে হবে উনার যে বয়স… লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টের বিষয়টি সিদ্ধান্ত দেবে লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট ইউনিটে যাওয়ার পরে…ওখানে ওই সুবিধাটা আছে… সো দে উইল ডিসাইড যে, ওয়াট উইল বি দ্য নেক্সক্ট কোর্স অব টিট্রমেন্ট।’
যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ‘যদি ওখানে (লন্ডন ক্লিনিক) সুপারিশ করে যে, ইয়েস সি নিডস ..তাদের এখানে নাই, জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে নিতে হবে… তখন হয়তো যাওয়ার একটা প্রশ্ন আসে।’
পবিত্র ওমরাহ পালনে সৌদি আরব যাবেন কি না- এ রকম প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সুস্থ থাকলেই ফেরার সময়ে বা কোনো একসময়ে মানুষ চাইলে কিন্তু ওমরাহ করা যায় না… আল্লাহ চাইতে হয়। কাজে রাব্বুল আলামিন যদি ইনশাআল্লাহ কবুল করেন ডেফিনেটলি ম্যাডাম সেটা করবে… এটা কিন্তু প্রিডিসাইড না যে, এটা করবেনই।’
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়