ঢাকা ০৮:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ক্লোজড হবার পরও থানায় বসে কাজ করছেন পীরগঞ্জের সেই ওসি 

Reporter Name
  • Update Time : ০৬:৫৩:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৩
  • / ১২৪ Time View

কামরুল হাসান টিটু,রংপুর: রংপুরে ঘুষ নেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় পীরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেনকে প্রত্যাহার করা (ক্লোজড) হলেও এখনও তিনি বহাল তবিয়তে আছেন।

জেলা পুলিশ সুপার চার দিন আগে তাকে পীরগঞ্জ থানা থেকে রংপুর পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ চার দিনেও বাস্তবায়িত হয়নি। উল্টো তার বিরুদ্ধে থানায় বসেই ওসির দায়িত্ব পালন করার অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, পীরগঞ্জ থানায় যোগদানের পর ওসি জাকির হোসনের বিরুদ্ধে নদী, খাল-বিল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, বিভিন্ন স্থানে জুয়া পরিচালনায় সহযোগিতা, মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে মোটা অংকের মাসোয়ারা নেওয়াসহ অসংখ্য অভিযোগ ওঠে। এছাড়াও গ্রেপ্তার বাণিজ্য, থানায় ধরে এনে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ লিখিতভাবে আইজিপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে দিয়েছে এলাকাবাসী।

সম্প্রতি এক বালু ব্যবসায়ীর কাছে ঘুষ হিসেবে মোটা অংকের টাকা নেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়। তবে ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে পীরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন বলেন, কিছু দিন আগে বালু ব্যবসায়ীদের দুটি পক্ষের মধ্যে অর্থনৈতিক লেনদেন নিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় আমার কাছে আসলে আমি তাদেরকে নিয়ে সমাধানের জন্য বসেছিলাম। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে টাকার লেনদেন হয়েছে। সেখানে তারা নিজেদের সমস্যা নিরসন করে। ওইদিন তাদের কেউ আমাকে ব্ল্যাকমেইলের উদ্দেশ্যে এ ধরনের ভিডিও ধারণ করেছে। প্রকৃত পক্ষে সেখানে আমার সঙ্গে কারো কোনো অর্থনৈতিক লেনদেন হয়নি। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি প্রাথমিক তদন্ত করা হলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। ২৪ এপ্রিল দুপুরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে ওসি জাকির হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়। পাশাপাশি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে একটি কমিটিও করা হয়েছে। আদেশ নামার কপি ওই দিনই পাঠানো হয়। কিন্তু চার দিনেও বাস্তবায়িত হয়নি।

ক্লোজড করার পরও থানায় বহাল তবিয়তে থাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আদেশের কপিতে কবে রংপুর পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত হতে হবে এটা লেখা নেই, অবিলম্বে আদেশ কার্যকর করার জন্য বলা হয়েছে। আমি দ্রুত সময়ের মধ্যে আদেশ অনুযায়ী পীরগঞ্জ থানার দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত হবো।

এ বিষয়ে গতকাল দুপুরে পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওসি জাকির হোসেনকে পীরগঞ্জ থানা থেকে রংপুর পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করার লিখিত আদেশ দেওয়া হয়েছে। কেন তিনি এখনও দায়িত্ব হস্তান্তর করেনি পুরো বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

ক্লোজড হবার পরও থানায় বসে কাজ করছেন পীরগঞ্জের সেই ওসি 

Update Time : ০৬:৫৩:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৩

কামরুল হাসান টিটু,রংপুর: রংপুরে ঘুষ নেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় পীরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেনকে প্রত্যাহার করা (ক্লোজড) হলেও এখনও তিনি বহাল তবিয়তে আছেন।

জেলা পুলিশ সুপার চার দিন আগে তাকে পীরগঞ্জ থানা থেকে রংপুর পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ চার দিনেও বাস্তবায়িত হয়নি। উল্টো তার বিরুদ্ধে থানায় বসেই ওসির দায়িত্ব পালন করার অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, পীরগঞ্জ থানায় যোগদানের পর ওসি জাকির হোসনের বিরুদ্ধে নদী, খাল-বিল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, বিভিন্ন স্থানে জুয়া পরিচালনায় সহযোগিতা, মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে মোটা অংকের মাসোয়ারা নেওয়াসহ অসংখ্য অভিযোগ ওঠে। এছাড়াও গ্রেপ্তার বাণিজ্য, থানায় ধরে এনে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ লিখিতভাবে আইজিপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে দিয়েছে এলাকাবাসী।

সম্প্রতি এক বালু ব্যবসায়ীর কাছে ঘুষ হিসেবে মোটা অংকের টাকা নেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়। তবে ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে পীরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন বলেন, কিছু দিন আগে বালু ব্যবসায়ীদের দুটি পক্ষের মধ্যে অর্থনৈতিক লেনদেন নিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় আমার কাছে আসলে আমি তাদেরকে নিয়ে সমাধানের জন্য বসেছিলাম। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে টাকার লেনদেন হয়েছে। সেখানে তারা নিজেদের সমস্যা নিরসন করে। ওইদিন তাদের কেউ আমাকে ব্ল্যাকমেইলের উদ্দেশ্যে এ ধরনের ভিডিও ধারণ করেছে। প্রকৃত পক্ষে সেখানে আমার সঙ্গে কারো কোনো অর্থনৈতিক লেনদেন হয়নি। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি প্রাথমিক তদন্ত করা হলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। ২৪ এপ্রিল দুপুরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে ওসি জাকির হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়। পাশাপাশি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে একটি কমিটিও করা হয়েছে। আদেশ নামার কপি ওই দিনই পাঠানো হয়। কিন্তু চার দিনেও বাস্তবায়িত হয়নি।

ক্লোজড করার পরও থানায় বহাল তবিয়তে থাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আদেশের কপিতে কবে রংপুর পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত হতে হবে এটা লেখা নেই, অবিলম্বে আদেশ কার্যকর করার জন্য বলা হয়েছে। আমি দ্রুত সময়ের মধ্যে আদেশ অনুযায়ী পীরগঞ্জ থানার দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত হবো।

এ বিষয়ে গতকাল দুপুরে পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওসি জাকির হোসেনকে পীরগঞ্জ থানা থেকে রংপুর পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করার লিখিত আদেশ দেওয়া হয়েছে। কেন তিনি এখনও দায়িত্ব হস্তান্তর করেনি পুরো বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।