ঢাকা ০১:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
ঢাকায় যুক্ত হচ্ছে ৪০০ ইলেকট্রিক বাস! ছিনতাইকারীর কবল থেকে ইরানী দম্পতিকে উদ্ধার করলো সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা ক্যাম্প থাকলে স্থানীয়দের চাকরি থাকবে এটাই শেষ কথা! বৈছাআ ও বিএনপি নেতাদের সেনাবাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদ, রংপুরে ছুটে এলেন সারজিস দেশের ১৮ কোটি মানুষেরই পরিবেশ সচেতন হওয়া জরুরি – উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান টাকার বিনিময়ে ইরানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করছে ইসরায়েলিরা মেঘনায় ট্রলার ডুবিতে সাব পোস্টমাস্টারসহ ২জনের মৃত্যু, নিখোঁজ-২ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জনগণের সাথে আরও নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে – পানি সম্পদ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে জড়িয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ প্রকাশে নিন্দা ও প্রতিবাদ এনসিপি’র যুক্তরাজ্যে ই-সিগারেট বিক্রি নিষিদ্ধ

কোরবানির হাট কাঁপাবে কালু মামা

শেরপুর সংবাদদাতা
  • Update Time : ০৮:১১:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ জুন ২০২৩
  • / ২৭৫ Time View

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ষাঁড় গরু কালু মামার আকৃতি ও সৌন্দর্য নজর কেড়েছে সবার। গরুর মালিকের দাবি, এটিই শেরপুরের সবচেয়ে বড় গরু। কেউ কেনার আশায় দেখতে আসছেন,আবার কেউ শুধু এত বড় ষাঁড়টি সামনাসামনি দেখার জন্যই আসছেন।

২২ মণ ওজনের ষাঁড় গরু কালু মামার মালিক শেরপুর পৌরসভার কসবা কাঠগড় এলাকার বাহাদুর ইসলাম। তিনি পেশায় গাড়ী চালক। কালু মামার গায়ের রং কালো মিচমিচে, উচ্চতা ৫ ফুট আর লম্বায় ৯ ফুট।

খামারি বাহাদুর জানান, করোনার সময় পাবনা ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেখানকার গরুগুলা অনেক বড় আকৃতির হয়। তাই সেখান থেকে একটি গরু কেনার খুব ইচ্ছে জাগে আমার। পরে আমার বন্ধুর মামা পাবনা থেকে ৮৫ হাজার টাকায় একটি হলস্টেইন জাতের ষাড় গরু কিনে দেন। সেখান থেকে গরুটি বাড়িতে নিয়ে আসতে সব মিলে খরচ হয় ১লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রায় ২ বছর ধরে গরুটি লালনপালন করতে গিয়ে মায়া জন্মেছে। প্রতিদিন এর পিছনে একজন লোকের খাটতে হয় । আর প্রতিদিন গরুটি ৬-৭শ টাকার খাবার খায়। গোসল দিতে হয় ২-৩ বেলা। আমার এখন পর্যন্ত তার পিছনে খরচই হয়েছে ৪ লাখ টাকা। তাহলে কেনা সহ খরচ পরলো ৫ লাখ টাকা। আমি এখন কালু মামাকে বিক্রির জন্য ১০ লাখ টাকা চাচ্ছি। বিভিন্ন জায়গা থেকে কেনার জন্য মানুষ আসছে দরদাম করছে। এখন পর্যন্ত ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম হয়েছে। উপযুক্ত দাম পেলে বিক্রি করবো।

বাহাদুর বলেন, সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতির খাবার খাইয়ে লালন পালন করা হয়েছে ষাঁড়টি । ভুট্টা, জব, কাঁচা ঘাস, কালাইয়ের ভুষি, গমের ভুষি এবং ধানের খড় খাইয়ে বড় করেছি ষাঁড়টিকে। সাথে আরও বিভিন্ন রকমের ফল খাইয়েছি। এটি আমার আদরের গরু। তাই যখন যা হাতের কাছে পেয়েছি তাই খাইয়েছি। তার পছন্দের ফল আঙ্গুর ।

ষাড় গরুটির নাম কালু মামা রাখার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার এই গরুটি আমার বন্ধুর মামা কিনে দিয়েছিলেন পছন্দ করে। আর ষাড়টির রং হলো কালো। তাই দুই মিলে নাম রেখেছি কালু মামা।

খামারি বাহাদুরের কাকা রহমত বলেন, গরুটি খুব শখ করে পেলেছে। গরুটির প্রতি সবারই মায়া জন্মে গেছে। একটি সন্তানকে যেভাবে লালন পালন করে কালু মামাকেও সেভাবে লালন পালন করছে। আমরাও গরুটিকে এসে দেখাশোনা করি । খুবই ভালো লাগে। সামনে কোরবানির ঈদে গরুটিকে বিক্রি করে দিতে হবে। বিক্রি হলে খুব কষ্ট হবে তবুও বিক্রি করে দিতে হবে।

বাহারি নামের বড় আকৃতির এই ষাঁড় নিয়ে উৎসাহী আশপাশের এলাকার মানুষ। শহর থেকে দেখতে আসা মো. জিহাদ বলেন, আমি কখনও এত বড় ষাঁড় দেখিনি। শহরের মধ্যেই এতবড় ষাঁড় রয়েছে তা ফেইসবুকে দেখে বাস্তবে দেখতে আসলাম। একটা সেলফিও নিলাম। সদরের চরশেরপুর থেকে আসা রফিক বলেন, সব সময় টিভিতে দেখি, বড় বড় গরু কোরবানির হাটে ওঠে। আজ বাস্তবে দেখলাম। গরু দেখতে আসা হুমায়ুন বলেন, আমার বাড়ি পাশের গ্রামেই। আমি আগে কখনও এত বড় গরু দেখিনি। তাই লোকজনের কাছে শুনে দেখতে আসছি। গরুটি দেখতে অনেক বড়। দেখতেও সুন্দর। নাম আর গরুর চেহারায় অনেক মিল আছে।

বড় ষাঁড় গরুর কথা শুনে দরদাম করতে আসছেন পাইকাররা। গরুর পাইকার হাসান বেলাল জানান, ষাঁড় গরুটি কেনার জন্য এসেছি। দরদাম করে যদি নিতে পারি তাহলে ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করবো।

শেরপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড.মো.মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জেলায় অনেক খামারি এমন গরু কোরবানির জন্য তৈরি করেছেন। অনেকের বাড়ি থেকেই গরু বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এবার গরুর যে বাজার রয়েছে এতে খামারিরা বেশ লাভবান হবেন। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে খামারিদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা
করা হয়। ফলে প্রাকৃতিক উপায়ে খামারিরা গরু মোটাতাজাকরণ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, জেলায় এবার মোট ২০টি কোরবানীর হাট বসবে। পাশপাশি ৫টি অনলাইন প্লাটফর্ম থাকবে। প্রতিটা হাটে প্রাণী সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে একটি করে ভ্যাটেনারি টিম নিয়োজিত থাকবে।

Please Share This Post in Your Social Media

কোরবানির হাট কাঁপাবে কালু মামা

শেরপুর সংবাদদাতা
Update Time : ০৮:১১:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ জুন ২০২৩

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ষাঁড় গরু কালু মামার আকৃতি ও সৌন্দর্য নজর কেড়েছে সবার। গরুর মালিকের দাবি, এটিই শেরপুরের সবচেয়ে বড় গরু। কেউ কেনার আশায় দেখতে আসছেন,আবার কেউ শুধু এত বড় ষাঁড়টি সামনাসামনি দেখার জন্যই আসছেন।

২২ মণ ওজনের ষাঁড় গরু কালু মামার মালিক শেরপুর পৌরসভার কসবা কাঠগড় এলাকার বাহাদুর ইসলাম। তিনি পেশায় গাড়ী চালক। কালু মামার গায়ের রং কালো মিচমিচে, উচ্চতা ৫ ফুট আর লম্বায় ৯ ফুট।

খামারি বাহাদুর জানান, করোনার সময় পাবনা ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেখানকার গরুগুলা অনেক বড় আকৃতির হয়। তাই সেখান থেকে একটি গরু কেনার খুব ইচ্ছে জাগে আমার। পরে আমার বন্ধুর মামা পাবনা থেকে ৮৫ হাজার টাকায় একটি হলস্টেইন জাতের ষাড় গরু কিনে দেন। সেখান থেকে গরুটি বাড়িতে নিয়ে আসতে সব মিলে খরচ হয় ১লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রায় ২ বছর ধরে গরুটি লালনপালন করতে গিয়ে মায়া জন্মেছে। প্রতিদিন এর পিছনে একজন লোকের খাটতে হয় । আর প্রতিদিন গরুটি ৬-৭শ টাকার খাবার খায়। গোসল দিতে হয় ২-৩ বেলা। আমার এখন পর্যন্ত তার পিছনে খরচই হয়েছে ৪ লাখ টাকা। তাহলে কেনা সহ খরচ পরলো ৫ লাখ টাকা। আমি এখন কালু মামাকে বিক্রির জন্য ১০ লাখ টাকা চাচ্ছি। বিভিন্ন জায়গা থেকে কেনার জন্য মানুষ আসছে দরদাম করছে। এখন পর্যন্ত ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম হয়েছে। উপযুক্ত দাম পেলে বিক্রি করবো।

বাহাদুর বলেন, সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতির খাবার খাইয়ে লালন পালন করা হয়েছে ষাঁড়টি । ভুট্টা, জব, কাঁচা ঘাস, কালাইয়ের ভুষি, গমের ভুষি এবং ধানের খড় খাইয়ে বড় করেছি ষাঁড়টিকে। সাথে আরও বিভিন্ন রকমের ফল খাইয়েছি। এটি আমার আদরের গরু। তাই যখন যা হাতের কাছে পেয়েছি তাই খাইয়েছি। তার পছন্দের ফল আঙ্গুর ।

ষাড় গরুটির নাম কালু মামা রাখার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার এই গরুটি আমার বন্ধুর মামা কিনে দিয়েছিলেন পছন্দ করে। আর ষাড়টির রং হলো কালো। তাই দুই মিলে নাম রেখেছি কালু মামা।

খামারি বাহাদুরের কাকা রহমত বলেন, গরুটি খুব শখ করে পেলেছে। গরুটির প্রতি সবারই মায়া জন্মে গেছে। একটি সন্তানকে যেভাবে লালন পালন করে কালু মামাকেও সেভাবে লালন পালন করছে। আমরাও গরুটিকে এসে দেখাশোনা করি । খুবই ভালো লাগে। সামনে কোরবানির ঈদে গরুটিকে বিক্রি করে দিতে হবে। বিক্রি হলে খুব কষ্ট হবে তবুও বিক্রি করে দিতে হবে।

বাহারি নামের বড় আকৃতির এই ষাঁড় নিয়ে উৎসাহী আশপাশের এলাকার মানুষ। শহর থেকে দেখতে আসা মো. জিহাদ বলেন, আমি কখনও এত বড় ষাঁড় দেখিনি। শহরের মধ্যেই এতবড় ষাঁড় রয়েছে তা ফেইসবুকে দেখে বাস্তবে দেখতে আসলাম। একটা সেলফিও নিলাম। সদরের চরশেরপুর থেকে আসা রফিক বলেন, সব সময় টিভিতে দেখি, বড় বড় গরু কোরবানির হাটে ওঠে। আজ বাস্তবে দেখলাম। গরু দেখতে আসা হুমায়ুন বলেন, আমার বাড়ি পাশের গ্রামেই। আমি আগে কখনও এত বড় গরু দেখিনি। তাই লোকজনের কাছে শুনে দেখতে আসছি। গরুটি দেখতে অনেক বড়। দেখতেও সুন্দর। নাম আর গরুর চেহারায় অনেক মিল আছে।

বড় ষাঁড় গরুর কথা শুনে দরদাম করতে আসছেন পাইকাররা। গরুর পাইকার হাসান বেলাল জানান, ষাঁড় গরুটি কেনার জন্য এসেছি। দরদাম করে যদি নিতে পারি তাহলে ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করবো।

শেরপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড.মো.মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জেলায় অনেক খামারি এমন গরু কোরবানির জন্য তৈরি করেছেন। অনেকের বাড়ি থেকেই গরু বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এবার গরুর যে বাজার রয়েছে এতে খামারিরা বেশ লাভবান হবেন। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে খামারিদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা
করা হয়। ফলে প্রাকৃতিক উপায়ে খামারিরা গরু মোটাতাজাকরণ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, জেলায় এবার মোট ২০টি কোরবানীর হাট বসবে। পাশপাশি ৫টি অনলাইন প্লাটফর্ম থাকবে। প্রতিটা হাটে প্রাণী সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে একটি করে ভ্যাটেনারি টিম নিয়োজিত থাকবে।