ঢাকা ১১:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি, চরে পানিবন্দি হাজারো মানুষ ও গৃহপালিত পশু

আব্দুস সবুর
  • Update Time : ১২:৩৪:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫
  • / ১৭৬ Time View

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।এতে প্রতিদিন নতুন নতুন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে এবং ইতোমধ্যে চরাঞ্চলের চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। বন্ধ হয়ে গেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান,তলিয়ে গেছে ফসলি জমি ও গ্রামীণ যোগাযোগের রাস্তা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী,বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ভাগজোত পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৪.৭২ সেন্টিমিটার,যা বিপদসীমা (১৫.৭০ সেন্টিমিটার) থেকে ৯৮ সেন্টিমিটার নিচে।হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১২.৯০ সেন্টিমিটার,বিপদসীমা (১৩.৮০ সেন্টিমিটার) থেকে ৯৮ সেন্টিমিটার নিচে।

তবে প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার পানি বাড়তে থাকায় আগামী দু-এক দিনের মধ্যে বিপদসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা ও পানি উন্নয়ন বোর্ড।

ভারী বৃষ্টিপাত ও ফারাক্কার প্রতিকূল প্রভাবে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে গত ১০ দিন ধরে পদ্মার পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।এরই মধ্যে চরাঞ্চলের অন্তত ৫ শতাধিক হেক্টর জমির মরিচ,সবজি,কলা,ভুট্টা,ধান ও পাটের ক্ষেত তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।

চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান জানান, রাস্তায় পানি ঢুকে ইউনিয়নটি মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।প্রতিদিন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে এবং পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বাড়িঘরেও পানি ঢুকে পড়বে।

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল জানান,নদীর ওপারে বসবাসরত অন্তত ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছেন।ঘরে এখনও পানি না উঠলেও আবাদি ফসল বিশেষ করে মরিচ,সবজি, পাট ও ধান ডুবে গেছে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুশতাক আহম্মেদ জানান, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ১৩টি বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে বিদ্যালয়গুলো খোলা থাকবে,যাতে বন্যাকবলিত মানুষ আশ্রয় নিতে পারেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন,বন্যার পানিতে চরাঞ্চলের ব্যাপক ফসল নষ্ট হয়েছে এবং নিচু এলাকার কিছু বাড়িতে পানি ঢুকেছে।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল হাই সিদ্দিকী জানান, পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চারটি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রশাসন সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া, শুকনো খাবার বিতরণসহ সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি, চরে পানিবন্দি হাজারো মানুষ ও গৃহপালিত পশু

আব্দুস সবুর
Update Time : ১২:৩৪:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।এতে প্রতিদিন নতুন নতুন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে এবং ইতোমধ্যে চরাঞ্চলের চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। বন্ধ হয়ে গেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান,তলিয়ে গেছে ফসলি জমি ও গ্রামীণ যোগাযোগের রাস্তা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী,বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ভাগজোত পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৪.৭২ সেন্টিমিটার,যা বিপদসীমা (১৫.৭০ সেন্টিমিটার) থেকে ৯৮ সেন্টিমিটার নিচে।হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১২.৯০ সেন্টিমিটার,বিপদসীমা (১৩.৮০ সেন্টিমিটার) থেকে ৯৮ সেন্টিমিটার নিচে।

তবে প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার পানি বাড়তে থাকায় আগামী দু-এক দিনের মধ্যে বিপদসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা ও পানি উন্নয়ন বোর্ড।

ভারী বৃষ্টিপাত ও ফারাক্কার প্রতিকূল প্রভাবে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে গত ১০ দিন ধরে পদ্মার পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।এরই মধ্যে চরাঞ্চলের অন্তত ৫ শতাধিক হেক্টর জমির মরিচ,সবজি,কলা,ভুট্টা,ধান ও পাটের ক্ষেত তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।

চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান জানান, রাস্তায় পানি ঢুকে ইউনিয়নটি মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।প্রতিদিন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে এবং পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বাড়িঘরেও পানি ঢুকে পড়বে।

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল জানান,নদীর ওপারে বসবাসরত অন্তত ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছেন।ঘরে এখনও পানি না উঠলেও আবাদি ফসল বিশেষ করে মরিচ,সবজি, পাট ও ধান ডুবে গেছে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুশতাক আহম্মেদ জানান, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ১৩টি বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে বিদ্যালয়গুলো খোলা থাকবে,যাতে বন্যাকবলিত মানুষ আশ্রয় নিতে পারেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন,বন্যার পানিতে চরাঞ্চলের ব্যাপক ফসল নষ্ট হয়েছে এবং নিচু এলাকার কিছু বাড়িতে পানি ঢুকেছে।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল হাই সিদ্দিকী জানান, পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চারটি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রশাসন সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া, শুকনো খাবার বিতরণসহ সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।