নেপথ্যে কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবার
কুষ্টিয়ায় অবৈধভাবে বালু তুলছে রাজশাহীর ইজারাদার চক্র

- Update Time : ১০:৩২:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫
- / ৫১ Time View
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পদ্মা নদীর ‘ডেঞ্জার জোন’ এলাকা থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে প্রভাবশালী একটি চক্র।রাজশাহী,পাবনা,নাটোর ও কুষ্টিয়া জেলার প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীদের নেতৃত্বে এই চক্রটি প্রশাসনিক বাধা উপেক্ষা করে বালু উত্তোলন চালিয়ে যাচ্ছে ফিলিপনগর ও মরিচা ইউনিয়নের চৌদ্দহাজার মৌজাতে।
হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বালু উত্তোলন
২০২২ সালে একটি রিট পিটিশনের ভিত্তিতে হাইকোর্ট কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও পাবনা জেলার পদ্মা নদীর অন্তর্ভুক্ত স্থানে ফিলিং ও মোটা বালির ঘাটগুলো থেকে বালু উত্তোলনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।হাইকোর্টের সেই আদেশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, কোনো ধরনের সুস্পষ্ট আইনি অনুমতি ছাড়া এসব এলাকায় বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ।কুষ্টিয়া জেলার,দৌলতপুর উপজেলার ভূমিদস্যু,বালুখেকো,চাঁদাবাজ,সন্ত্রাসী,মাদক ব্যাবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষকতা সহ নানান অপকর্মে জড়িত দৌলতপুর উপজেলার প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের কারনেই নিষেধাজ্ঞা থাকার পরো বালু উত্তোলন হচ্ছে।
প্রশাসনিক অভিযানেও থেমে নেই উত্তোলন
গত ৫-আগস্ট-২০২৪ রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর,বেপরোয়া হয়ে উঠে দৌলতপুর উপজেলার রাজনৈতিক প্রভাবশালী পরিবার ও তাঁদের অনুসারীরা।চলমান করে অবৈধভাবে ফিলিং বালু উত্তোলন,তবে দৌলতপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার বেশ তৎপরতায় অভিযান ও কঠোর নজরদারির কারণে দৌলতপুরের ফিলিপনগর,মরিচা এবং রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে বালু উত্তোলন সাময়িকভাবে বন্ধ হয়েছিল।সম্প্রতি আবারও মরিচা ইউনিয়নের চৌদ্দহাজার মৌজায় প্রায়াত,জমিদার আব্দুল আজিজ মাষ্টারের সহ চরাঞ্চলের জনগনের-মরিচা ইউনিয়নের চৌদ্দহাজার মৌজাতে ড্রেজার,বলগেট ও বালিবাহী নৌকা দিয়ে মোটা বালু উত্তোলন শুরু করেছে রাজশাহীর “মেসার্স সরকার ট্রেডার্স” নামক একটি প্রতিষ্ঠান।
রাজশাহীর ইজারাদার কুষ্টিয়ায় কেন?
তথ্য অনুযায়ী,রাজশাহীর বাঘা উপজেলার সরেরহাট নামক গ্রামের মৃত বাচ্চু সরকারের ছেলে এস.এম.সালাউদ্দীন আহমেদ শামীম সরকারের নেতৃত্বে চলছে এই অবৈধ কার্যক্রম।”মেসার্স সরকার ট্রেডার্স”-এর নামে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার লক্ষীনগর মৌজায় ২৪ একর আয়তনের একটি বৈধ বালুমহাল ইজারা নিলেও,তারা কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী চরাঞ্চলে এসে বালু উত্তোলন করছে,যা সম্পূর্ণ বেআইনি।সরকার ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জানান,এই ইজারাপ্রাপ্ত বালু মহালের সম্পূর্নভাবে নিয়ন্ত্রন ও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজশাহী জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম সরকারকে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ
মরিচা ইউনিয়নের চৌদ্দহাজার মৌজা ও ফিলিপনগরের ভিমিরদিয়াড় এলাকার একাধিক জমি মালিক অভিযোগ করেন, হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তাদের জমির সামনে থেকে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।এতে জমির ক্ষতি ছাড়াও নদীভাঙনের ঝুঁকি বেড়েছে বহুগুণে।তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ
এলাকাবাসী ও জমির মালিকদের জোর দাবি—দ্রুত এই অবৈধ বালু উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।পাশাপাশি হাইকোর্টের আদেশ যথাযথভাবে কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে।
উল্লেখিত বিষয়ে,শামীম সরকারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করাগেলে তিনি ফোনকল রিসিভ করেনি।এদিকে “মেসার্স সরকার ট্রেডার্স” এর স্বত্বাধিকারী
এস,এম,এখলাস আহমেদ এর কাছে উল্লেখিত বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,রাজশাহী জেলা প্রশাসক কর্তৃক আমার প্রাপ্ত বাঘা উপজেলার লক্ষীনগর মৌজাতে ইজারা নিয়েছি,তবে শামীম যদি ইজারাদারপ্রাপ্ত এরিয়ার বাইরে,কুষ্টিয়া জেলার মধ্যে বালু উত্তোলন করে,সেটা অবশ্যই আইন বহির্ভূত,বিষয়টি আমি দেখছি।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়