কুমিল্লায় ঘুমন্ত অবস্থায় নারীকে কুপিয়ে ও খুঁচিয়ে হত্যা

- Update Time : ০৪:৪৪:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
- / ৫৪ Time View
কুমিল্লায় ঘুমন্ত ঝরনা বেগম (৪৮) নামে এক নারীকে মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও খুঁচিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাতে জেলার দেবিদ্বার পৌর এলাকার সাইলচর গ্রামের এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত নারী সাইলচর গ্রামের ইলেক্ট্রিক মিকানিক আব্দুল করিমের স্ত্রী। ঘটনার পর থেকে বড় ছেলে সবুজ নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান- নিহত ঝরনা বেগমের ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে সন্তান রয়েছে। দুই ছেলে শরিফ (৩০) ও আরিফ (২৮) সৌদী প্রবাসী, অপর ছেলে সবুজ (৩২) ট্রাক্টর চালক। ২ মেয়ে নিপা (৩৫) ও লুবনা (২৫)’র বিয়ে হয়ে গেছে। নিহতের দেবর ভাসুরদের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধ আছে। তবে ঝরনা বেগমের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী বড়আলমপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে ইয়াবা কারবারি দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে পরকীয়া ছিল। কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে সাইলচর চা দোকানে ঝরনার সঙ্গে প্রায়ই তাদের আড্ডা হতো। রাত ১১-১২টায় বাড়ি ফিরত।
তারা আরো বলেন, ওই নারী তার স্বামীকে রাতে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ঘরের উত্তর পাশের জানালা দিয়ে পালিয়ে যেতেন। মাঝে মাঝে ২-৩ দিন বেড়ানোর কথা বলে নিরুদ্দেশ থাকতেন। ঘটনাটি ডাকাতি বা চুরির উদ্দেশে হয়নি। তাহলে মৃতার পাশে ২টি মোবাইল, কানের স্বর্ণের দুল এবং গলায় রুপার চেইন থাকত না। মোবাইলগুলোর ফোন নম্বর ট্র্যাক করলে সত্য বেরিয়ে আসতে পারে। পরকীয়া, জমিসংক্রান্ত বিরোধ এবং স্বামী-স্ত্রীর মনোমালিন্যে এ হত্যাকান্ড ঘটতে পারে। হত্যাকান্ডের সময় ঘরের দরজা বন্ধ ছিল।
নিহতের বড় মেয়ে নিপা (৩৫) চিৎকার করে বলেন-আমার আগে থেকেই সন্দেহ ছিল, আমার মাকে মেরে ফেলা হবে। কিন্তু কি কারণে, কারা মারতে পারে এ বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলেননি।
নিহতের স্বামী আব্দুল করিম জানান, তার স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক নানা বিষয়ে দূরত্ব ছিল দীর্ঘদিনের। দুইজন দুই বিছানায় ঘুমাতেন। প্রায়ই তার স্ত্রী তাকে অসুস্থতার কারণে ঘুমের ওষুধ খাওয়াতেন। খেতে না চাইলে জোর করে ঘুমের ওষুধ খাওয়াতেন। গতকাল রাত আনুমানিক ৮টায় তার স্ত্রী তাকে ৮টি ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়েছেন। খাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে উঠে দেখেন, তার স্ত্রী ঘুমন্ত অবস্থায় মরে আছেন। তার মাথা থেঁতলানো এবং রক্তাক্ত।
দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন-এ মুহূর্তে কিছু বলতে পারব না। তবে তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।
দেবিদ্বার-ব্রাহ্মনপাড়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. শাহীন বলেন- হত্যাকান্ডের বিষয়টি নানামুখী, আমরা তদন্ত করছি। তবে তার মাথায় ৩টি ধারালো অস্ত্রের আঘাত আছে। যেগুলো ইলেকক্ট্রিক প্লাস বা স্ক্রুড্রাইভারের আঘাত হতে পারে। বিষয়টি গভীরভাবে তদন্তের বিষয়।