ঢাকা ০২:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
সিটি ইউনিভার্সিটি বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ অবিলম্বে বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ না করলে কঠোর কর্মসূচীর হুমকি সাংবাদিকদের রায় ছিঁড়ে ক্ষমতার দাপট দেখানো সেই জেলা জজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে ঢাবিতে ধূমপানে জরিমানা, গাঁজা সেবনে বহিষ্কার বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল আওয়ামীলীগ – মঈন খান সালমান শাহ’র স্ত্রী সামিরার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ঘুমের মধ্যে মাদ্রাসা ছাত্রকে গলা কেটে হত্যা   ১ হাজার টাকা কমেছে স্বর্ণের দাম বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সুন্দরী নারীরা রাস্তায় বের হতে পারবে না: ফয়জুল করিম ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাতভর সংঘর্ষ,আগুন

কুবিতে মঞ্চস্থ হলো ‘মুখ ও মুখোশ’

কুবি প্রতিনিধি
  • Update Time : ১২:১০:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১৮৪ Time View

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) মঞ্চস্থ হলো ‘মুখ ও মুখোশ’ নাটক। সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্ত মঞ্চে রাত সাড়ে আটটায় নাটকটি আরম্ভ হয়।

এতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাহিদা বেগম। এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর হোসাইন রাজীব, সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর মিডিয়া ইন ডেভেলপমেন্টের (সাকমিড) প্রোগ্রাম অফিসার আবু সুফিয়ান।

নাটকটির আয়োজনে ছিল থিয়েটার কুবি এবং একাডেমিক সহযোগিতায় ছিল গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ। নাটকটির অর্থায়নে ছিল নেদারল্যান্ডস অ্যাম্বাসি অব বাংলাদেশ এবং ‘সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর মিডিয়া ইন ডেভেলপমেন্ট (সাকমিড)’।

নাটকটি লিখেছেন থিয়েটার কুবির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমেনা ইকরা, নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন থিয়েটার কুবির সাংগঠনিক সম্পাদক জাওয়াদ-উর রাকিন। নাটকের মূল উপজীব্য বিষয় বস্তু হলো জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার করে সাইবার ক্রাইম এবং সামাজিক অপরাধ থেকে জনগণকে সচেতন করা।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ডেভলপমেন্ট কমিউনিকেশনে মিডিয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা, যার মাধ্যমে অডিয়েন্সকে নানান ধরনের তথ্য দিতে পারে। যেই জায়গা থেকে সেই সাইবার অপরাধগুলো হয়, সেইগুলোকে তারা সুন্দরভাবে এই নাটকের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন। আমাদের অডিয়েন্সরা এগুলোকে এনজয় করেছেন এবং তারা শিক্ষা লাভও করেছেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেটা বর্তমান যুগে এআই টেকনোলজির এডভান্সমেন্টের ফলে প্রচুর ফেইক কনটেন্ট সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘুরে বেড়ায়। দেখা যাচ্ছে মিডিয়া লিটারেসি না থাকায় অনেক শিক্ষিত মানুষও ফেইক কনটেন্টকে ছড়িয়ে দিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নাটকের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে যে কাছের মানুষটাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে, এমনকি ক্লাসরুমের মধ্যেও কোনো অপ্রস্তুত মুহূর্তের ছবি তুলে ছড়িয়ে দিল বা খুবই সহজেই এআই, চ্যাট জিপিটি, জিমনির মাধ্যমে করা হচ্ছে। আমি দেখেছি না বুঝে প্রফেসর লেভেল থেকে বা সরকারি পলিসি মেকিং লেভেল থেকেও ফেইক কনটেন্টকে ছড়িয়ে দিচ্ছে। সেই জায়গা থেকে এই যে নাটকটি করা হয়েছে তা সময় উপযোগী এবং আমাদেরকে সচেতন হতে হবে।’

বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাহিদা বেগম বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর পলিটিক্যালি অনেক সিচুয়েশন চেঞ্জ হয়েছে বা সামাজিক অনেক পরিস্থিতির চেঞ্জ হয়েছে। আমরা কথা বলতে ভয় পাই, আমাদের সার্বিক পরিস্থিতি কিছু কিছু জায়গায় ভীতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। সেই জায়গা থেকে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা কথা বলতে চাইছে, তারা অভিনয়ের মাধ্যমে দেখাতে চাইছে। বর্তমানে সাইবার বুলিংয়ে অনেক বেশি শিকার হই, বিশেষ করে মেয়েরা। আর এখানে যে স্ক্যামের ব্যাপারটা দেখানো হয়েছে তা অনেকে অবগত না। যারা নাটকের পৃষ্ঠপোষকতায় রয়েছেন তারা যদি আরো উদ্যোগী হন, আমাদের ছেলেমেয়েরা আরো ভালো কিছু দেওয়ার চেষ্টা করবে।’

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন বলেন, ‘আমরা যে নাটকটি দেখলাম তা সাম্প্রতিক সময়ের জীবনের গল্প। এখানে খুব ছোট ছোট বিষয় নাটকে উঠে আসলেও এর গভীরতা অনেক । যারা সাইবার বুলিং, প্রতারণার শিকার হয় তারা জানে জীবনটা কতটা দুর্বিসহ হয়ে ওঠে। আমরা যেহেতু তরুণ-তরুণীদের নিয়ে কাজ করি, তাদের মানসিকভাবে ভেঙে পড়াটা চোখের সামনে দেখলে শিক্ষক হিসেবে আমাদের যেমন ঐ অবস্থাটা থাকেনা, তেমনি সোসাইটির প্রতি আমাদের অন্যরকম অবস্থান তৈরি হয়।’

Please Share This Post in Your Social Media

কুবিতে মঞ্চস্থ হলো ‘মুখ ও মুখোশ’

কুবি প্রতিনিধি
Update Time : ১২:১০:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) মঞ্চস্থ হলো ‘মুখ ও মুখোশ’ নাটক। সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্ত মঞ্চে রাত সাড়ে আটটায় নাটকটি আরম্ভ হয়।

এতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাহিদা বেগম। এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর হোসাইন রাজীব, সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর মিডিয়া ইন ডেভেলপমেন্টের (সাকমিড) প্রোগ্রাম অফিসার আবু সুফিয়ান।

নাটকটির আয়োজনে ছিল থিয়েটার কুবি এবং একাডেমিক সহযোগিতায় ছিল গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ। নাটকটির অর্থায়নে ছিল নেদারল্যান্ডস অ্যাম্বাসি অব বাংলাদেশ এবং ‘সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর মিডিয়া ইন ডেভেলপমেন্ট (সাকমিড)’।

নাটকটি লিখেছেন থিয়েটার কুবির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমেনা ইকরা, নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন থিয়েটার কুবির সাংগঠনিক সম্পাদক জাওয়াদ-উর রাকিন। নাটকের মূল উপজীব্য বিষয় বস্তু হলো জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার করে সাইবার ক্রাইম এবং সামাজিক অপরাধ থেকে জনগণকে সচেতন করা।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ডেভলপমেন্ট কমিউনিকেশনে মিডিয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা, যার মাধ্যমে অডিয়েন্সকে নানান ধরনের তথ্য দিতে পারে। যেই জায়গা থেকে সেই সাইবার অপরাধগুলো হয়, সেইগুলোকে তারা সুন্দরভাবে এই নাটকের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন। আমাদের অডিয়েন্সরা এগুলোকে এনজয় করেছেন এবং তারা শিক্ষা লাভও করেছেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেটা বর্তমান যুগে এআই টেকনোলজির এডভান্সমেন্টের ফলে প্রচুর ফেইক কনটেন্ট সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘুরে বেড়ায়। দেখা যাচ্ছে মিডিয়া লিটারেসি না থাকায় অনেক শিক্ষিত মানুষও ফেইক কনটেন্টকে ছড়িয়ে দিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নাটকের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে যে কাছের মানুষটাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে, এমনকি ক্লাসরুমের মধ্যেও কোনো অপ্রস্তুত মুহূর্তের ছবি তুলে ছড়িয়ে দিল বা খুবই সহজেই এআই, চ্যাট জিপিটি, জিমনির মাধ্যমে করা হচ্ছে। আমি দেখেছি না বুঝে প্রফেসর লেভেল থেকে বা সরকারি পলিসি মেকিং লেভেল থেকেও ফেইক কনটেন্টকে ছড়িয়ে দিচ্ছে। সেই জায়গা থেকে এই যে নাটকটি করা হয়েছে তা সময় উপযোগী এবং আমাদেরকে সচেতন হতে হবে।’

বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাহিদা বেগম বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর পলিটিক্যালি অনেক সিচুয়েশন চেঞ্জ হয়েছে বা সামাজিক অনেক পরিস্থিতির চেঞ্জ হয়েছে। আমরা কথা বলতে ভয় পাই, আমাদের সার্বিক পরিস্থিতি কিছু কিছু জায়গায় ভীতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। সেই জায়গা থেকে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা কথা বলতে চাইছে, তারা অভিনয়ের মাধ্যমে দেখাতে চাইছে। বর্তমানে সাইবার বুলিংয়ে অনেক বেশি শিকার হই, বিশেষ করে মেয়েরা। আর এখানে যে স্ক্যামের ব্যাপারটা দেখানো হয়েছে তা অনেকে অবগত না। যারা নাটকের পৃষ্ঠপোষকতায় রয়েছেন তারা যদি আরো উদ্যোগী হন, আমাদের ছেলেমেয়েরা আরো ভালো কিছু দেওয়ার চেষ্টা করবে।’

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন বলেন, ‘আমরা যে নাটকটি দেখলাম তা সাম্প্রতিক সময়ের জীবনের গল্প। এখানে খুব ছোট ছোট বিষয় নাটকে উঠে আসলেও এর গভীরতা অনেক । যারা সাইবার বুলিং, প্রতারণার শিকার হয় তারা জানে জীবনটা কতটা দুর্বিসহ হয়ে ওঠে। আমরা যেহেতু তরুণ-তরুণীদের নিয়ে কাজ করি, তাদের মানসিকভাবে ভেঙে পড়াটা চোখের সামনে দেখলে শিক্ষক হিসেবে আমাদের যেমন ঐ অবস্থাটা থাকেনা, তেমনি সোসাইটির প্রতি আমাদের অন্যরকম অবস্থান তৈরি হয়।’