কিশোরগঞ্জে বেড়েছে ধর্ষণ, থেমে নেই কোচিং বাণিজ্য

- Update Time : ০৮:৩৭:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫
- / ২৮ Time View
সরকারি নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে স্কুল শিক্ষকরা গড়ে তুলেছেন শত শত কোচিং সেন্টার। চলছে দিনে ও রাতে কোচিং সেন্টার। ফলে ধর্ষণসহ নানা অপকর্ম বেড়েই চলছে। শুধু তাই নয় কোচিং সেন্টারের কিছু শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগও উঠছে।
জানা গেছে,গত ১৯ এপ্রিল এক শিক্ষার্থীকে একা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন আজাহারুল ইসলাম ওরফে বাবুল নামে এক শিক্ষক। বিষয়টি জানাজানি হলে সেই শিক্ষক পালিয়ে গেলে ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। গত ০৬ মে মামলার প্রধান আসামী শিক্ষক আজাহারুল ইসলাম ওরফে বাবুলকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব- ১৩ নীলফামারী।
গ্রেফতার কৃত শিক্ষক তিনি সৃষ্টি বৈকালিন কোচিং সেন্টারে নিয়মিত ক্লাস নিতেন।
কোচিং সেন্টারগুলোতে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হচ্ছে সকল বিষয়। কিন্তু ইংরেজি,গণিত ও বিজ্ঞান এসব বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ। তাই ,গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী পড়তে আসছে বেশী। শিক্ষাকে সেবা থেকে ব্যবসায় পরিনত করেছে তারা। এ ব্যাপারে চুপচাপ শিক্ষা অফিস।
উপজেলার আশপাশে হাঁটলে কোচিং সেন্টারের বহু সাইনবোর্ড চোখে পড়ে, সেগুলোতে সরকারি, বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকরা চালান। শিক্ষকরা কোচিং সেন্টার খুলতে পারেন না, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা অনুসারে, কোনো শিক্ষক বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গড়ে ওঠা কোচিং সেন্টারে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত হতে পারেন না। নিজে কোচিং সেন্টারের মালিক হতে পারেন না। শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ে পড়তে উৎসাহিত, উদ্বুদ্ধ বা বাধ্য করতেও পারেন না। তারপরেও চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
তবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদ কোচিং বাণিজ্যরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে। কোচিং বাণিজ্য বন্ধে তদারকি করতে উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি করে আট সদস্যের কমিটি গঠনের কথা নীতিমালায় বলা হয়েছে। বাস্তবে এসব কমিটির কার্যকারিতা দেখা যায় না।
নীতিমালা অনুসারে, এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তাঁর এমপিও স্থগিত, বাতিল, বেতনভাতা স্থগিত, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত, বেতন একধাপ অবনমিতকরণ, সাময়িক বরখাস্ত, চূড়ান্ত বরখাস্ত ইত্যাদি শাস্তি হতে পারে। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওহীন শিক্ষকের ও প্রতিষ্ঠানের বেলাও একই শাস্তির কথা বলা হয়েছে। তবে ১০ বছরেও একজন শিক্ষককেও কোচিং সেন্টার পরিচালনার দায়ে শাস্তির মুখে পড়তে দেখা যায়নি।
কোচিং সেন্টারের ছড়াছড়ি কিশোরগঞ্জে রয়েছে সরকারি, বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকদের অনেক কোচিং সেন্টার।
ভিক্টোরি স্টাডি হোম কোচিং সেন্টার,সৃষ্টি বৈকালীন কোচিং সেন্টার,ফ্রেন্ডস টিউটর হোম কোচিং সেন্টার।
এছাড়াও রয়েছে কিশোরগঞ্জ সরকারি কলেজ মোড় হতে মেডিকেল মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন বাসাবাড়ি হাজারো শিক্ষার্থীর কাছে হয়ে উঠেছে স্কুলের বিকল্প; অনেকের কাছে শ্রেণিকক্ষের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। নামে-বেনামে গড়ে উঠেছে ৩০টি এর অধিক কোচিং সেন্টার।
কিশোরগঞ্জ মডেল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের মতো নামি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরই এসব কোচিং সেন্টারে বেশি আসতে দেখা যায়।
সৃষ্টি বৈকালীন কোচিং সেন্টারের নামের একটি কোচিং সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়,কিশোরগঞ্জ মডেল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শাখার ৭ম থেকে ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পড়তে এসেছে। কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, ক্লাসে সব পড়ানো হয় না, কোচিং করলে সিলেবাস শেষ হয়।
কয়েকজন অভিভাবক জানান, ক্লাসে এখন তেমন কিছুই পড়ানো হয় না, সেজন্য কোচিংয়ে পড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। অন্য শিক্ষকের কাছে পড়ানোর চেয়ে স্কুলের শিক্ষকের কাছে পড়ানোকে তারা ভালো মনে করেন, কারণ তাতে রেজাল্ট ভালো হয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আশরাফুজ্জামান সরকার এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী হক জানান, কোচিং সেন্টার সম্পুর্ণ নিষিদ্ধ তারপরেও কোন সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কোচিং সেন্টার চালু করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়