ঢাকা ০৬:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কিশোরগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতিসহ নানা অভিযোগ

লাতিফুল আজম, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৮:১২:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪
  • / ২২ Time View

শিক্ষার জন্য এসো সেবার জন্য যাও। শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৮ সালে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত হয় ছিট রাজিব আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়। প্রায় এক একর জমির মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত।

সেই সময় জমি দান করেন তৎকালীন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নমির উদ্দিন ও শিক্ষানূরাগী নুরল ইসলাম। ১৯৯৯ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন জামিয়ার রহমান। যোগদানের পর থেকে নিজের খেয়াল-খুশি মত বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করেন তিনি । শুধু তাই না অনিয়ম দূর্নীতিসহ নানা অভিযোগ ও গুঞ্জন উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

নিয়োগ বানিজ্য, এমপিও ভুক্ত করার জন্য অর্থ আদায়, এসএসসি শিক্ষার্থীদের রেজিষ্ট্রেশন ও ভর্তির সময় অতিরিক্ত ফি আদায়, পারফাম্যান্স বেডজ গ্রান্টস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউট স্কিম এর জন্য বিতরণকৃত অর্থ আত্নসাৎ ও নিয়োগ দিয়ে নিজ নামে জমি রেজিষ্ট্রারিসহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৫ সালে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পদে নিয়োগ পান ওই এলাকার সাইফুল ইসলাম। ২০১৭ সালে এমপিও ভুক্ত হন তিনি। কিন্তু নিয়োগের জন্য তাঁর কাছ থেকে ১৮ শতক জমি নিজের নামে করে নেন প্রধান শিক্ষক জামিয়ার রহমান। শুধু জমি নিয়েই থামেন নি তিনি, এমপিও ভুক্ত করার জন্য নিয়েছে মোটা অংকের টাকা।

২০২৩ সালে পারফাম্যান্স বেডজ গ্রান্টস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউট স্কিম এর জন্য বরাদ্দ ৫ লক্ষ টাকা নাম মাত্র খরচ করে সমস্ত টাকা আত্নসাৎ করেন প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়ের বইপত্র, লাইব্রেরী, শিক্ষা উপকরণ এবং গবেষনাগার সরঞ্জাম বাবদ ১ লক্ষ ৫০ হাজার, সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের সহায়তা বাবদ ৭৫ হাজার, অবকাঠামো, বিশুদ্ধ পানি, শৌচাগার ও কমনরুম উন্নয়ন বাবদ ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা, প্রতিবন্ধি/বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের ফ্যাসিলিটি উন্নয়ন বাবদ ৫০ হাজার টাকা ও শিক্ষকদের জন্য প্রণোদনা বাবদ ১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। শুধুমাত্র শিক্ষকদের জন্য প্রণোদনা বাবদ ১ লক্ষ টাকা বিতরণ করে অবশিষ্ট সমস্ত টাকা নাম মাত্র কাজ করে নিজের পকেটে ভরেন প্রধান শিক্ষক।

সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি ২০১৫ সালে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ পেলেও এমপিও ভুক্তি করার জন্য আমাকে দুই বছর ঘুরিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। নিয়োগের সময় প্রধান শিক্ষক আমার কাছ থেকে যে জমিটি নিজের নামে লিখে নিয়েছে আমি সেই জমিটি প্রতিষ্ঠানের নামে দেয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

অভিযোগ স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক জামিয়ার রহমান বলেন, আমি প্রতিষ্ঠানের কাছে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পাবো। তাই সাইফুল ইসলামকে নিয়োগ দিয়ে ১৮ শতক জমি আমি আমার নিজ নামে দলিল করি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমী হক বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

কিশোরগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতিসহ নানা অভিযোগ

লাতিফুল আজম, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি
Update Time : ০৮:১২:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪

শিক্ষার জন্য এসো সেবার জন্য যাও। শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৮ সালে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত হয় ছিট রাজিব আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়। প্রায় এক একর জমির মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত।

সেই সময় জমি দান করেন তৎকালীন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নমির উদ্দিন ও শিক্ষানূরাগী নুরল ইসলাম। ১৯৯৯ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন জামিয়ার রহমান। যোগদানের পর থেকে নিজের খেয়াল-খুশি মত বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করেন তিনি । শুধু তাই না অনিয়ম দূর্নীতিসহ নানা অভিযোগ ও গুঞ্জন উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

নিয়োগ বানিজ্য, এমপিও ভুক্ত করার জন্য অর্থ আদায়, এসএসসি শিক্ষার্থীদের রেজিষ্ট্রেশন ও ভর্তির সময় অতিরিক্ত ফি আদায়, পারফাম্যান্স বেডজ গ্রান্টস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউট স্কিম এর জন্য বিতরণকৃত অর্থ আত্নসাৎ ও নিয়োগ দিয়ে নিজ নামে জমি রেজিষ্ট্রারিসহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৫ সালে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পদে নিয়োগ পান ওই এলাকার সাইফুল ইসলাম। ২০১৭ সালে এমপিও ভুক্ত হন তিনি। কিন্তু নিয়োগের জন্য তাঁর কাছ থেকে ১৮ শতক জমি নিজের নামে করে নেন প্রধান শিক্ষক জামিয়ার রহমান। শুধু জমি নিয়েই থামেন নি তিনি, এমপিও ভুক্ত করার জন্য নিয়েছে মোটা অংকের টাকা।

২০২৩ সালে পারফাম্যান্স বেডজ গ্রান্টস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউট স্কিম এর জন্য বরাদ্দ ৫ লক্ষ টাকা নাম মাত্র খরচ করে সমস্ত টাকা আত্নসাৎ করেন প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়ের বইপত্র, লাইব্রেরী, শিক্ষা উপকরণ এবং গবেষনাগার সরঞ্জাম বাবদ ১ লক্ষ ৫০ হাজার, সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের সহায়তা বাবদ ৭৫ হাজার, অবকাঠামো, বিশুদ্ধ পানি, শৌচাগার ও কমনরুম উন্নয়ন বাবদ ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা, প্রতিবন্ধি/বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের ফ্যাসিলিটি উন্নয়ন বাবদ ৫০ হাজার টাকা ও শিক্ষকদের জন্য প্রণোদনা বাবদ ১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। শুধুমাত্র শিক্ষকদের জন্য প্রণোদনা বাবদ ১ লক্ষ টাকা বিতরণ করে অবশিষ্ট সমস্ত টাকা নাম মাত্র কাজ করে নিজের পকেটে ভরেন প্রধান শিক্ষক।

সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি ২০১৫ সালে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ পেলেও এমপিও ভুক্তি করার জন্য আমাকে দুই বছর ঘুরিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। নিয়োগের সময় প্রধান শিক্ষক আমার কাছ থেকে যে জমিটি নিজের নামে লিখে নিয়েছে আমি সেই জমিটি প্রতিষ্ঠানের নামে দেয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

অভিযোগ স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক জামিয়ার রহমান বলেন, আমি প্রতিষ্ঠানের কাছে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পাবো। তাই সাইফুল ইসলামকে নিয়োগ দিয়ে ১৮ শতক জমি আমি আমার নিজ নামে দলিল করি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমী হক বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।