ঢাকা ০৫:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০২৪, ৪ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
লন্ডনে ‘কবোষ্ণ অভিবাদন’ অনুষ্ঠান

কবি শামীম আজাদ ও কথা সাহিত্যিক সালেহা চৌধুরী বিশ্ব বাঙালির গৌরব

জমির উদ্দিন সুমন, লন্ডন থেকে
  • Update Time : ০৩:১০:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ জুন ২০২৪
  • / ২০ Time View

কবি শামীম আজাদ ও কথাসাহিত্যিক সালেহা চৌধুরী শুধু বিলাতের বাঙালি কমিউনিটির গৌরব নয়, বাংলাদেশসহ বিশ্ব বাঙালির গৌরব। বাংলা একাডেমী পুরস্কার প্রাপ্ত কবি শামীম আজাদ ও কথাসাহিত্যিক সালেহা চৌধুরীকে বিলাতের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে দেয়া ‘কবোষ্ণ অভিবাদন’ অনুষ্ঠানে সুধীজন এমন মন্তব্য করেন।

শনিবার (০১ জুন) বিকালে পূর্ব লন্ডনের এন্টারপ্রাইজ একাডেমীর হলরুমে প্রদত্ত অভিবাদন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন বিলাতের ৩৩টি সংগঠনের কবি সাহিত্যিক, সংস্কৃতিকমীর্, কমিউনিটি নেতৃবৃন্দসহ পেশাজীবী সুধীজন।

কবি মিল্টন রহমানের সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন টিভি উপস্থাপক সেলিনা শেলী। প্রথমে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে কবিদ্বয়কে কাচা ফুলের মালা পরিয়ে বরণ ও রঙিন উত্তরীয় পরিয়ে দেন সাংবাদিক নিলুফা ইয়াসমীন হাসান, কবি মিল্টন রহমান, সাংস্কৃতিক কমীর্ স্মৃতি আজাদ, শামীম আরা হেনা,  সঙ্গীত শিল্পী গৌরী চৌধুরী, রূপী আমিন ও কবি ইকবাল হোসেন বুলবুল। সাম্মলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতি পরিষদের পক্ষে ময়নূর রহমান বাবুল, ফারুক আহমদ, একে এম আবদুল্লাহ ও মোশাইদ খান পৃথকভাবে সংগঠনের নামাঙ্কিত উত্তরীয় প্রদান করেন। ফুলের তোড়া দিয়ে আরো অভিনন্দিত করেন কবি হিলাল সাইফ।

অনুষ্ঠানের সূচনাপর্বে কবি শামীম আজাদের জীবন বৃত্তান্ত পড়ে শোনান কবি ফারাহ নাজ এবং কবি সালেহা চৌধুরীর জীবনী পাঠ করেন আবৃত্তিকার নজরুল ইসলাম অকিব। এছাড়া সালেহা চৌধুরীর দুটি কবিতাও আবৃত্তি করেন তিনি।

আবৃত্তিপর্বে কবি শামীম আজাদের বিলাতের পোষাকশ্রমিক শহীদ আলতাব আলীকে নিয়ে ইংরেজী ভাষায় লেখা বিখ্যাত ‘আলতাব আলী’ কবিতা ও বাংলা ভাষায় লেখা একটি কবিতা আবৃত্তি করেন আবৃত্তিশিল্পী মুনিরা পারভীন। সালেহা চৌধুরীর কবিতা আবৃত্তি করেন আবৃত্তিশিল্পী শহীদুল ইসলাম সাগর।

মূখ্য আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন ড. জাকি রেজওয়ানা চৌধুরী ও কবি হামিদ মোহাম্মদ। জাকি রেজওয়ানা তার বক্তব্যে বলেন, কবিতা ও সাহিত্যচর্চার বাইরে কবি শামীম আজাদ একজন মানবিক মানুষ। সবার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। বিলাতে অনেক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের জন্মদাতা ও পৃষ্টপোষক তিনি। হাসিখুশিতে সর্বদা ভরপুর থাকেন, মানুষকে ভালোবাসেন প্রাণ দিয়ে।

হামিদ মোহাম্মদ দুই গুণী কবি ও সাহিত্যিকের সৃজনশীল কর্মের নানা প্রশংসা করে বলেন, বাংলা একাডেমী পুরস্কার পাওয়ার পরে যেন আমরা বিলাতবাসী তাদের চিনলাম। সালেহা চৌধুরীর ১২টি অনুবাদগ্রন্থ রয়েছে। তিনি অনুবাদ সাহিত্যে এ পুরস্কার পেয়েছেন। আমি তার অনুবাদ পড়েছি। ঝরঝরে গদ্য। শামীম আজাদ কবিতায় সামগ্রিক অবদানের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন। হামিদ মোহাম্মদ বলেন, শামীম আজাদের কবিতা কিংবা গদ্য বলেন ‘রসের ভাণ্ডার’। এতো রস করে রসসাহিত্য লেখক আমরা একজনকে চিনি, তিনি সৈয়দ মুজতবা আলী। আরেকজন হলেন কবি শামীম আজাদ। এছাড়া তার লেখার ভাষা, নিমার্ণশেলী ও দার্শনিকতা উত্তরাধুনিক। বর্তমান সময়কে ধারণ করা।

অভিবাদন অনুষ্ঠনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক রাজনীতিক সুলতান মাহমুদ শরীফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা লেখক ও রাজনীতিক দেওয়ান গৌস সুলতান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফয়জুর রহমান খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান ও সাংবাদিক জাকির হোসেন।  এছাড়া সংবর্ধিত কবিদ্বয়ের সৃজনশীলতা নিয়ে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. সেলিম জাহান। কবিদ্বয়কে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আরো বক্তব্য রাখেন লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ জুবায়ের।

সবশেষে দুই কবি নিজ নিজ চিন্তা চেতনতা সঞ্জাত হুদয়গ্রাহী বক্তব্য রাখেন। এবং এ বিরল আয়োজনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও কর্মকতার্দের অশেষ ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, কবি শামীম আজাদ ও কবি সালেহা চৌধুরী সম্প্রতি ২০২৩ সালের বাংলা একাডেমী পুরস্কারে ভুষিত হয়েছেন। গত একুশে বইমেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেলার উদ্বোধনীর মূল অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কারের প্রদত্ত সম্মানির অর্থ ও ক্রেস্ট তাদের হাতে তুলে দেন। পুরস্কার পাওয়ার পর এই প্রথম তাদের নিয়ে বিলাতে এমন সম্মানসূচক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো।

Please Share This Post in Your Social Media

লন্ডনে ‘কবোষ্ণ অভিবাদন’ অনুষ্ঠান

কবি শামীম আজাদ ও কথা সাহিত্যিক সালেহা চৌধুরী বিশ্ব বাঙালির গৌরব

Update Time : ০৩:১০:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ জুন ২০২৪

কবি শামীম আজাদ ও কথাসাহিত্যিক সালেহা চৌধুরী শুধু বিলাতের বাঙালি কমিউনিটির গৌরব নয়, বাংলাদেশসহ বিশ্ব বাঙালির গৌরব। বাংলা একাডেমী পুরস্কার প্রাপ্ত কবি শামীম আজাদ ও কথাসাহিত্যিক সালেহা চৌধুরীকে বিলাতের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে দেয়া ‘কবোষ্ণ অভিবাদন’ অনুষ্ঠানে সুধীজন এমন মন্তব্য করেন।

শনিবার (০১ জুন) বিকালে পূর্ব লন্ডনের এন্টারপ্রাইজ একাডেমীর হলরুমে প্রদত্ত অভিবাদন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন বিলাতের ৩৩টি সংগঠনের কবি সাহিত্যিক, সংস্কৃতিকমীর্, কমিউনিটি নেতৃবৃন্দসহ পেশাজীবী সুধীজন।

কবি মিল্টন রহমানের সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন টিভি উপস্থাপক সেলিনা শেলী। প্রথমে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে কবিদ্বয়কে কাচা ফুলের মালা পরিয়ে বরণ ও রঙিন উত্তরীয় পরিয়ে দেন সাংবাদিক নিলুফা ইয়াসমীন হাসান, কবি মিল্টন রহমান, সাংস্কৃতিক কমীর্ স্মৃতি আজাদ, শামীম আরা হেনা,  সঙ্গীত শিল্পী গৌরী চৌধুরী, রূপী আমিন ও কবি ইকবাল হোসেন বুলবুল। সাম্মলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতি পরিষদের পক্ষে ময়নূর রহমান বাবুল, ফারুক আহমদ, একে এম আবদুল্লাহ ও মোশাইদ খান পৃথকভাবে সংগঠনের নামাঙ্কিত উত্তরীয় প্রদান করেন। ফুলের তোড়া দিয়ে আরো অভিনন্দিত করেন কবি হিলাল সাইফ।

অনুষ্ঠানের সূচনাপর্বে কবি শামীম আজাদের জীবন বৃত্তান্ত পড়ে শোনান কবি ফারাহ নাজ এবং কবি সালেহা চৌধুরীর জীবনী পাঠ করেন আবৃত্তিকার নজরুল ইসলাম অকিব। এছাড়া সালেহা চৌধুরীর দুটি কবিতাও আবৃত্তি করেন তিনি।

আবৃত্তিপর্বে কবি শামীম আজাদের বিলাতের পোষাকশ্রমিক শহীদ আলতাব আলীকে নিয়ে ইংরেজী ভাষায় লেখা বিখ্যাত ‘আলতাব আলী’ কবিতা ও বাংলা ভাষায় লেখা একটি কবিতা আবৃত্তি করেন আবৃত্তিশিল্পী মুনিরা পারভীন। সালেহা চৌধুরীর কবিতা আবৃত্তি করেন আবৃত্তিশিল্পী শহীদুল ইসলাম সাগর।

মূখ্য আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন ড. জাকি রেজওয়ানা চৌধুরী ও কবি হামিদ মোহাম্মদ। জাকি রেজওয়ানা তার বক্তব্যে বলেন, কবিতা ও সাহিত্যচর্চার বাইরে কবি শামীম আজাদ একজন মানবিক মানুষ। সবার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। বিলাতে অনেক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের জন্মদাতা ও পৃষ্টপোষক তিনি। হাসিখুশিতে সর্বদা ভরপুর থাকেন, মানুষকে ভালোবাসেন প্রাণ দিয়ে।

হামিদ মোহাম্মদ দুই গুণী কবি ও সাহিত্যিকের সৃজনশীল কর্মের নানা প্রশংসা করে বলেন, বাংলা একাডেমী পুরস্কার পাওয়ার পরে যেন আমরা বিলাতবাসী তাদের চিনলাম। সালেহা চৌধুরীর ১২টি অনুবাদগ্রন্থ রয়েছে। তিনি অনুবাদ সাহিত্যে এ পুরস্কার পেয়েছেন। আমি তার অনুবাদ পড়েছি। ঝরঝরে গদ্য। শামীম আজাদ কবিতায় সামগ্রিক অবদানের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন। হামিদ মোহাম্মদ বলেন, শামীম আজাদের কবিতা কিংবা গদ্য বলেন ‘রসের ভাণ্ডার’। এতো রস করে রসসাহিত্য লেখক আমরা একজনকে চিনি, তিনি সৈয়দ মুজতবা আলী। আরেকজন হলেন কবি শামীম আজাদ। এছাড়া তার লেখার ভাষা, নিমার্ণশেলী ও দার্শনিকতা উত্তরাধুনিক। বর্তমান সময়কে ধারণ করা।

অভিবাদন অনুষ্ঠনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক রাজনীতিক সুলতান মাহমুদ শরীফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা লেখক ও রাজনীতিক দেওয়ান গৌস সুলতান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফয়জুর রহমান খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান ও সাংবাদিক জাকির হোসেন।  এছাড়া সংবর্ধিত কবিদ্বয়ের সৃজনশীলতা নিয়ে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. সেলিম জাহান। কবিদ্বয়কে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আরো বক্তব্য রাখেন লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ জুবায়ের।

সবশেষে দুই কবি নিজ নিজ চিন্তা চেতনতা সঞ্জাত হুদয়গ্রাহী বক্তব্য রাখেন। এবং এ বিরল আয়োজনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও কর্মকতার্দের অশেষ ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, কবি শামীম আজাদ ও কবি সালেহা চৌধুরী সম্প্রতি ২০২৩ সালের বাংলা একাডেমী পুরস্কারে ভুষিত হয়েছেন। গত একুশে বইমেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেলার উদ্বোধনীর মূল অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কারের প্রদত্ত সম্মানির অর্থ ও ক্রেস্ট তাদের হাতে তুলে দেন। পুরস্কার পাওয়ার পর এই প্রথম তাদের নিয়ে বিলাতে এমন সম্মানসূচক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো।