ঢাকা ০১:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ৩০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
সূচনা মেমোরিয়াল ট্রাস্টের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু রংপুরে অসুস্থ বাবাকে হাসপাতালে রেখে ঢাকায় এসে হলেন ২৬ খণ্ড ড্রামে পাওয়া ২৬ টুকরো লাশটি রংপুরের আশরাফুলের, বন্ধুর সঙ্গে গিয়েছিলেন ঢাকায় আর্জেন্টিনা ও আয়ারল্যান্ডে দূতাবাস খুলছে বাংলাদেশ বাসায় ঢুকে বিচারকের ছেলেকে ছুরিকাঘাতে হত্যা দেশে গণতন্ত্র ফেরাতে নির্বাচনই একমাত্র বিকল্প : মির্জা ফখরুল প্রধান উপদেষ্টা জুলাই সনদ লঙ্ঘন করেছেন : সালাহউদ্দিন স্ত্রীসহ সাংবাদিক সুভাষ সিংহ রায়ের ‎ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ ‘লোকের দুটি বউ থাকতে পারে, আমার বান্ধবী থাকতে পারে না!’ ৩০১ রানের লিড নিয়ে ইনিংস ঘোষণা, রেকর্ডে ভাসছে বাংলাদেশ

এ বছরই বাংলাদেশে আসতে পারে স্টারলিংক ইন্টারনেট

প্রযুক্তি ডেস্ক
  • Update Time : ১২:২১:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৭৯৬ Time View

ভুটানে চালু হয়েছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা। স্পেসএক্স প্রধান সম্প্রতি এক্স প্ল্যাটফর্মে (পূর্বে টুইটার) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। স্টারলিংক জানিয়েছে, তারা স্থল, আকাশ ও সমুদ্রে আরও বিস্তৃত পরিসরে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি ইলন মাস্ক এক্সের এক পোস্টে জানান, স্টারলিংক এখন ভুটানেও পাওয়া যাচ্ছে।

একই দিন আপডেট করা হয়েছে স্টারলিংকের সেবা প্রাপ্যতার মানচিত্রও। তারা জানিয়েছে, এখন থেকে ভুটানের ব্যবহারকারীরা এই সেবা পাবেন। ভুটানের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, মঙ্গোলিয়া ও ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে এই সেবা চালু রয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, ভারতে স্টারলিংকের কার্যক্রম শুরু করতে এখনো নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন প্রয়োজন। আর মিয়ানমারে কবে নাগাদ এটি চালু হতে পারে, তা অনিশ্চিত। তবে বাংলাদেশে এ বছরই স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ভুটানে কী সুবিধা দিচ্ছে স্টারলিংক?
স্পেসএক্সের স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা মূলত ভূপৃষ্ঠে থাকা বিশেষ টার্মিনালের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের সংযোগ দেয়। তবে এটি মোবাইল ফোনে সরাসরি ব্যবহার করা যাবে না। যদিও নির্দিষ্ট কিছু দেশে আইফোন ব্যবহারকারীরা স্যাটেলাইট-নির্ভর সংযোগ পাচ্ছেন।

নিউজ১৮’র খবর অনুসারে, ভুটানে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবার মূল্য পরিকল্পনাগুলো ঘোষণা হয়েছে। দেশটির তথ্য বিভাগ জানিয়েছে, ‘রেসিডেনশিয়াল লাইট’ প্ল্যানের জন্য প্রতি মাসে তিন হাজার গুলট্রাম (প্রায় ৪০০০ টাকা) খরচ হবে, যা ২৩ এমবিপিএস থেকে ১০০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট দেবে।

অন্যদিকে, ‘স্ট্যান্ডার্ড রেসিডেনশিয়াল’ প্ল্যানের জন্য মাসিক ৪ হাজার ২০০ গুলট্রাম (প্রায় ৫৫০০ টাকা) খরচ হবে, যা ২৫ এমবিপিএস থেকে ১১০ এমবিপিএস পর্যন্ত গতির ইন্টারনেট সরবরাহ করবে এবং এতে ‘আনশিরিটেড ডেটা’ ব্যবহারের সুবিধা থাকবে।

বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষা
বাংলাদেশে স্টারলিংকের প্রবেশ দেশের ডিজিটাল ল্যান্ডস্কেপে বিপ্লব আনতে পারে, বিশেষ করে প্রত্যন্ত এবং সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলগুলোতে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) স্যাটেলাইট সেবা নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি নির্দেশিকা তৈরি করছে, যা স্টারলিংকের প্রবেশপথ আরও প্রশস্ত করবে।

স্টারলিংক গত তিন বছর ধরে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে আসছে। ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল)-এর মাধ্যমে প্রযুক্তিগত পরীক্ষা পরিচালনার অনুমোদন পায়।

২০২৪ সালের অক্টোবরে বিটিআরসি জানিয়েছে, তারা লাইসেন্সিং নির্দেশিকা নিয়ে কাজ করছে। গত বছর গঠিত একটি কমিটি স্থানীয় নিরাপত্তা এবং নজরদারি আইন মেনে চলা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিচ্ছে।

তবে বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে স্টারলিংক। এর মূল কারণ চড়া দাম। এর সেবা ব্যবহার করতে প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যারের দাম ৫৯৯ মার্কিন ডলার (প্রায় ৭২ হাজার ৫৮৮ টাকা)। এছাড়া মাসিক ফি থাকবে প্রায় ১২০ ডলার (প্রায় ১৪ হাজার ৫৪২ টাকা)।

বিপরীতে, স্থানীয় ব্রডব্যান্ড সেবাদাতারা প্রতি মাসে ৫০০ টাকায় ৫ এমবিপিএস গতিতে এবং মোবাইল ইন্টারনেট প্যাকেজগুলো ৪০০-৫০০ টাকায় ৩০ জিবি ডেটা সরবরাহ করে থাকে।

স্টারলিংকের চড়া দাম বাংলাদেশের বাজারে দীর্ঘমেয়াদি কার্যকারিতা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে। যদিও এর স্যাটেলাইট সেবা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে প্রতিষ্ঠানটির সাফল্য উচ্চমূল্যের বাধা অতিক্রম করা এবং প্রতিষ্ঠিত স্থানীয় সরবরাহকারীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার ওপর নির্ভর করবে।

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশে স্টারলিংক চালুর বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সাথে মাস্কের বৈঠক

Please Share This Post in Your Social Media

এ বছরই বাংলাদেশে আসতে পারে স্টারলিংক ইন্টারনেট

প্রযুক্তি ডেস্ক
Update Time : ১২:২১:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ভুটানে চালু হয়েছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা। স্পেসএক্স প্রধান সম্প্রতি এক্স প্ল্যাটফর্মে (পূর্বে টুইটার) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। স্টারলিংক জানিয়েছে, তারা স্থল, আকাশ ও সমুদ্রে আরও বিস্তৃত পরিসরে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি ইলন মাস্ক এক্সের এক পোস্টে জানান, স্টারলিংক এখন ভুটানেও পাওয়া যাচ্ছে।

একই দিন আপডেট করা হয়েছে স্টারলিংকের সেবা প্রাপ্যতার মানচিত্রও। তারা জানিয়েছে, এখন থেকে ভুটানের ব্যবহারকারীরা এই সেবা পাবেন। ভুটানের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, মঙ্গোলিয়া ও ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে এই সেবা চালু রয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, ভারতে স্টারলিংকের কার্যক্রম শুরু করতে এখনো নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন প্রয়োজন। আর মিয়ানমারে কবে নাগাদ এটি চালু হতে পারে, তা অনিশ্চিত। তবে বাংলাদেশে এ বছরই স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ভুটানে কী সুবিধা দিচ্ছে স্টারলিংক?
স্পেসএক্সের স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা মূলত ভূপৃষ্ঠে থাকা বিশেষ টার্মিনালের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের সংযোগ দেয়। তবে এটি মোবাইল ফোনে সরাসরি ব্যবহার করা যাবে না। যদিও নির্দিষ্ট কিছু দেশে আইফোন ব্যবহারকারীরা স্যাটেলাইট-নির্ভর সংযোগ পাচ্ছেন।

নিউজ১৮’র খবর অনুসারে, ভুটানে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবার মূল্য পরিকল্পনাগুলো ঘোষণা হয়েছে। দেশটির তথ্য বিভাগ জানিয়েছে, ‘রেসিডেনশিয়াল লাইট’ প্ল্যানের জন্য প্রতি মাসে তিন হাজার গুলট্রাম (প্রায় ৪০০০ টাকা) খরচ হবে, যা ২৩ এমবিপিএস থেকে ১০০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট দেবে।

অন্যদিকে, ‘স্ট্যান্ডার্ড রেসিডেনশিয়াল’ প্ল্যানের জন্য মাসিক ৪ হাজার ২০০ গুলট্রাম (প্রায় ৫৫০০ টাকা) খরচ হবে, যা ২৫ এমবিপিএস থেকে ১১০ এমবিপিএস পর্যন্ত গতির ইন্টারনেট সরবরাহ করবে এবং এতে ‘আনশিরিটেড ডেটা’ ব্যবহারের সুবিধা থাকবে।

বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষা
বাংলাদেশে স্টারলিংকের প্রবেশ দেশের ডিজিটাল ল্যান্ডস্কেপে বিপ্লব আনতে পারে, বিশেষ করে প্রত্যন্ত এবং সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলগুলোতে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) স্যাটেলাইট সেবা নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি নির্দেশিকা তৈরি করছে, যা স্টারলিংকের প্রবেশপথ আরও প্রশস্ত করবে।

স্টারলিংক গত তিন বছর ধরে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে আসছে। ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল)-এর মাধ্যমে প্রযুক্তিগত পরীক্ষা পরিচালনার অনুমোদন পায়।

২০২৪ সালের অক্টোবরে বিটিআরসি জানিয়েছে, তারা লাইসেন্সিং নির্দেশিকা নিয়ে কাজ করছে। গত বছর গঠিত একটি কমিটি স্থানীয় নিরাপত্তা এবং নজরদারি আইন মেনে চলা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিচ্ছে।

তবে বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে স্টারলিংক। এর মূল কারণ চড়া দাম। এর সেবা ব্যবহার করতে প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যারের দাম ৫৯৯ মার্কিন ডলার (প্রায় ৭২ হাজার ৫৮৮ টাকা)। এছাড়া মাসিক ফি থাকবে প্রায় ১২০ ডলার (প্রায় ১৪ হাজার ৫৪২ টাকা)।

বিপরীতে, স্থানীয় ব্রডব্যান্ড সেবাদাতারা প্রতি মাসে ৫০০ টাকায় ৫ এমবিপিএস গতিতে এবং মোবাইল ইন্টারনেট প্যাকেজগুলো ৪০০-৫০০ টাকায় ৩০ জিবি ডেটা সরবরাহ করে থাকে।

স্টারলিংকের চড়া দাম বাংলাদেশের বাজারে দীর্ঘমেয়াদি কার্যকারিতা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে। যদিও এর স্যাটেলাইট সেবা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে প্রতিষ্ঠানটির সাফল্য উচ্চমূল্যের বাধা অতিক্রম করা এবং প্রতিষ্ঠিত স্থানীয় সরবরাহকারীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার ওপর নির্ভর করবে।

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশে স্টারলিংক চালুর বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সাথে মাস্কের বৈঠক