ঢাকা ০৬:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ

এখনো পেহেলগামেই আছে চার সন্ত্রাসী!

আন্তর্জাতিক
  • Update Time : ১০:৫৭:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
  • / ১৫ Time View

ভারত শাসিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরান উপত্যকায় গত ২২ এপ্রিলের ভয়াবহ ও নৃশংস সন্ত্রাসী হামলায় সরাসরি অংশ নেয়া চার পলাতক সন্ত্রাসী সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান ও তল্লাশি এড়াতে সম্ভবত একই এলাকায় লুকিয়ে আছে বলে ধারণা করছে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) গোয়েন্দারা। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করেছে।

পেহেলগামের ওই সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটকের নির্মম মৃত্যু হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনআইএ সূত্র এনডিটিভিকে জানিয়েছে, সন্ত্রাসীরা স্বাবলম্বী হতে পারে। অর্থাৎ, তাদের কাছে পর্যাপ্ত রসদ রয়েছে। এ কারণে তারা দীর্ঘ সময় জঙ্গলে লুকিয়ে থেকে তল্লাশি অভিযানকে এড়িয়ে চলতে পারছে।

ভারতীয় তদন্দ দলের ধারণা, সন্ত্রাসীদের কাছে থাকা রসদগুলো পাকিস্তানের সরবরাহ করা। এই রসদের কারণে বাইরের জগতের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের কোন ধরনের যোগাযোগ করার প্রয়োজন হচ্ছে না।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামাকাণ্ডে ৪০ জন সেনা নিহত হবার পর, সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থা এনআইএ আরেকটি ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দেখা গেছে যে সন্ত্রাসীরা কমপক্ষে ৪৮ ঘন্টা আগে পেহেলগামের মনোরম তৃণভূমি ও পর্যটন কেন্দ্র বৈসারন উপত্যকায় হাজির হয়। সন্ত্রাসীদের প্রতি সহানুভূতিশীলদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দারা আরও চারটি স্থান অনুসন্ধান করেছেন। এর মধ্যে আরু ও বেতাব উপত্যকা রয়েছে।

এনআইএ তদন্তে দেখতে পেয়েছে, বৈসারন উপত্যকায় অপেক্ষাকৃত কম নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকায় সন্ত্রাসীরা হামলার জন্য স্থানটি শেষ মুহূর্তে বেছে নেয়। ভারতের বিরোধীদল শুরু থেকেই অভিযোহ করে আসছে যে, বৈসরানের সেনা সদস্যদের উপস্থিতি না থাকার কারণে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটেছে।

সূত্র জানায়, সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলোতে সিমকার্ডের প্রয়োজন ছিল না এবং স্বল্প-পাল্লার এনক্রিপ্টেড ট্রান্সমিশনে সক্ষম ছিলো। যার কারণে, বন্দুকধারীদের আটকানো যায়নি। সন্ত্রাসীরা তিনটি স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করেছিলো বলে জানতে পেরেছে ভারতীয় গোয়েন্দারা।

তাদের দাবি, নিজেদের অবস্থান লুকিয়ে রাখার পাশাপাশি ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের চোখে ধুলা দিয়ে স্থানীয় সময় দুপুর সোয়া একটায় হামলার আগ পর্যন্ত সন্ত্রাসীরা স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করে গেছে। বৈসরান উপত্যকার চারপাশ ঘিরে থাকায় জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে ছিলো সন্ত্রাসীরা।

পর্যটকদের ওপর হামলা শুরুর ঠিক আগে জঙ্গল থেকে তিন সন্ত্রাসী বেরিয়ে এসে পর্যটকদের উপর গুলি চালাতে শুরু করে। বেশিরভাগ হত্যাকাণ্ডে চালিয়েছে খুব কাছ থেকে। গুলি করার আগে পর্যটকদের নাম জানতে চেয়েছে বন্দুকধারীরা। আর চতুর্থ সন্ত্রাসী ব্যাকআপ হিসাবে জঙ্গলের ভেতরেই লুকিয়ে ছিলো।

সূত্র জানিয়েছে, হামলার সময় আশেপাশে আরও কিছু সন্ত্রাসী লুকিয়ে থাকতে পারে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ত্রাসীরা কয়েকজন পুরুষের কাছে তাদের ধর্ম পরিচয় জানতে চেয়ে কোরআনের আয়ত আয়াত পড়তে বলেছিলো। যারা ব্যর্থ হয়েছিল তাদের খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছিল।

হামলার পর বেশ কিছু ভিডিও অনলাইনে প্রকাশিত হয়। যেখানে দেখা গেছে যে নারীরা তাদের স্বামী এবং সঙ্গীর রক্তে মুখ ঢাকা, সাহায্যের জন্য আর্জি জানাচ্ছেন। এক সন্ত্রাসী একজন নারী পর্যটককে উপহাস করে বলছিলো, যাও (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র) মোদীকে বলো। এর কিছু আগে নারী সন্ত্রাসীর গুলিতে প্রাণ দেন।

Please Share This Post in Your Social Media

এখনো পেহেলগামেই আছে চার সন্ত্রাসী!

আন্তর্জাতিক
Update Time : ১০:৫৭:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫

ভারত শাসিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরান উপত্যকায় গত ২২ এপ্রিলের ভয়াবহ ও নৃশংস সন্ত্রাসী হামলায় সরাসরি অংশ নেয়া চার পলাতক সন্ত্রাসী সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান ও তল্লাশি এড়াতে সম্ভবত একই এলাকায় লুকিয়ে আছে বলে ধারণা করছে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) গোয়েন্দারা। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করেছে।

পেহেলগামের ওই সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটকের নির্মম মৃত্যু হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনআইএ সূত্র এনডিটিভিকে জানিয়েছে, সন্ত্রাসীরা স্বাবলম্বী হতে পারে। অর্থাৎ, তাদের কাছে পর্যাপ্ত রসদ রয়েছে। এ কারণে তারা দীর্ঘ সময় জঙ্গলে লুকিয়ে থেকে তল্লাশি অভিযানকে এড়িয়ে চলতে পারছে।

ভারতীয় তদন্দ দলের ধারণা, সন্ত্রাসীদের কাছে থাকা রসদগুলো পাকিস্তানের সরবরাহ করা। এই রসদের কারণে বাইরের জগতের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের কোন ধরনের যোগাযোগ করার প্রয়োজন হচ্ছে না।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামাকাণ্ডে ৪০ জন সেনা নিহত হবার পর, সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থা এনআইএ আরেকটি ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দেখা গেছে যে সন্ত্রাসীরা কমপক্ষে ৪৮ ঘন্টা আগে পেহেলগামের মনোরম তৃণভূমি ও পর্যটন কেন্দ্র বৈসারন উপত্যকায় হাজির হয়। সন্ত্রাসীদের প্রতি সহানুভূতিশীলদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দারা আরও চারটি স্থান অনুসন্ধান করেছেন। এর মধ্যে আরু ও বেতাব উপত্যকা রয়েছে।

এনআইএ তদন্তে দেখতে পেয়েছে, বৈসারন উপত্যকায় অপেক্ষাকৃত কম নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকায় সন্ত্রাসীরা হামলার জন্য স্থানটি শেষ মুহূর্তে বেছে নেয়। ভারতের বিরোধীদল শুরু থেকেই অভিযোহ করে আসছে যে, বৈসরানের সেনা সদস্যদের উপস্থিতি না থাকার কারণে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটেছে।

সূত্র জানায়, সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলোতে সিমকার্ডের প্রয়োজন ছিল না এবং স্বল্প-পাল্লার এনক্রিপ্টেড ট্রান্সমিশনে সক্ষম ছিলো। যার কারণে, বন্দুকধারীদের আটকানো যায়নি। সন্ত্রাসীরা তিনটি স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করেছিলো বলে জানতে পেরেছে ভারতীয় গোয়েন্দারা।

তাদের দাবি, নিজেদের অবস্থান লুকিয়ে রাখার পাশাপাশি ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের চোখে ধুলা দিয়ে স্থানীয় সময় দুপুর সোয়া একটায় হামলার আগ পর্যন্ত সন্ত্রাসীরা স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করে গেছে। বৈসরান উপত্যকার চারপাশ ঘিরে থাকায় জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে ছিলো সন্ত্রাসীরা।

পর্যটকদের ওপর হামলা শুরুর ঠিক আগে জঙ্গল থেকে তিন সন্ত্রাসী বেরিয়ে এসে পর্যটকদের উপর গুলি চালাতে শুরু করে। বেশিরভাগ হত্যাকাণ্ডে চালিয়েছে খুব কাছ থেকে। গুলি করার আগে পর্যটকদের নাম জানতে চেয়েছে বন্দুকধারীরা। আর চতুর্থ সন্ত্রাসী ব্যাকআপ হিসাবে জঙ্গলের ভেতরেই লুকিয়ে ছিলো।

সূত্র জানিয়েছে, হামলার সময় আশেপাশে আরও কিছু সন্ত্রাসী লুকিয়ে থাকতে পারে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ত্রাসীরা কয়েকজন পুরুষের কাছে তাদের ধর্ম পরিচয় জানতে চেয়ে কোরআনের আয়ত আয়াত পড়তে বলেছিলো। যারা ব্যর্থ হয়েছিল তাদের খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছিল।

হামলার পর বেশ কিছু ভিডিও অনলাইনে প্রকাশিত হয়। যেখানে দেখা গেছে যে নারীরা তাদের স্বামী এবং সঙ্গীর রক্তে মুখ ঢাকা, সাহায্যের জন্য আর্জি জানাচ্ছেন। এক সন্ত্রাসী একজন নারী পর্যটককে উপহাস করে বলছিলো, যাও (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র) মোদীকে বলো। এর কিছু আগে নারী সন্ত্রাসীর গুলিতে প্রাণ দেন।