উষ্ণায়নের যুগ পেরিয়ে বিশ্ব এখন রয়েছে ফুটন্ত যুগে

- Update Time : ১১:১৫:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ জুলাই ২০২৩
- / ১১৯ Time View
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্ব রেকর্ড উষ্ণতম সময় পার করছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন দিন দিন পৃথিবী আরও উত্তপ্ত হয়ে পড়বে। তারা আশঙ্কা করছেন তীব্র গরমের কারণে অনেক মানুষের মৃত্যু হবে। এবং বিশাল অংশ পুড়ে যাবে। ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অগ্নিউৎপাতের কারণে বিশাল ভূমি পুড়ে গেছে।
সম্প্রতি আলজেরিয়াতে অগ্নিকান্ডে বিশাল বণভূমি পুড়ছে। সেনা সদস্যসহ অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে। গবেষকেরা বলেছেন, গরমে হিমবাহ গলার হার ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ডুবে যেতে পারে অনেক দেশ।
জাতিসংঘ বলছে যে, উষ্ণায়নের যুগ পেরিয়ে বিশ্ব এখন রয়েছে ফুটন্ত যুগে। বিশ্বজুড়ে চলছে প্রচন্ড দাবদাহ। বেশিরভাগ দেশেই তাপমাত্রা রেকর্ড ছুয়েছে। এমন অবস্থায় মানুষ হাঁসফাঁস করছে। মানবদেহ কত ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে? মানুষের শরীর কতটুকু তাপ সইতে পারে তা যাচাইয়ে এক গবেষণায় অংশ নেন বিবিসি রেডিওর উপস্থাপক জেমস গালাঘার। সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেমিয়েন বেইলির নেতৃত্বে এই গবেষণায় অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা তিনি তুলে ধরেছেন বিবিসির এক প্রতিবেদনে।
অধ্যাপক বেইলি তাকে এক পরিবেশগত চেম্বারে নিয়ে যান। এটি সাধারণ কক্ষের আকারে বায়ুরোধী এক বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থা যাতে তাপমাত্রা, আর্দ্রতা ও অক্সিজেনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা একদম ঠিকঠাক মনে হয়। তখনই অধ্যাপক বেইলি ‘শরীরের সবকিছু খুলে ফেলার’ প্রথম নির্দশনা দেন। এতে দেখা হবে জেমসের কতটা ঘাম হয় ও তার ওজনের কেমন পরিবর্তন হয়। ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা বৃদ্ধি সাময়িক বন্ধ রেখে কিছু পরীক্ষা করা হয়। তখন জেমসের উষ্ণতা অনুভব হয়। চেয়ারে বসে থাকায় তা অস্বস্তিকর না হলেও এই তাপমাত্রায় কাজ বা কসরত করতে ইচ্ছে করবে না। জেমসের দেহে তখন কিছু স্পষ্ট পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। তাকে তুলনামূলক লাল দেখাচ্ছিলো। কারণ তার ত্বকের উপরিভাগের রক্তনালী উষ্ণ রক্তের তাপমাত্রা বাতাসে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য উন্মুক্ত হচ্ছিলো। জেমসের ঘাম হচ্ছিলো কিন্তু ঘাম ঝরছিল না। এই ঘাম বাষ্পীভূত হয়ে তাকে আবার শীতল করছিল। এরপর তাপমাত্রা বাড়িয়ে ৪০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস করা হয়।
জেমস বলেন,‘তখন আমার মনে হচ্ছিলো গরম আমাকে পিষে ফেলছে।’ অধ্যাপক বেইলি বলেন, ‘পাঁচ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড শুনতে খুব কম শোনায়। কিন্তু শারিরীকভাবে এটি বেশ চ্যালেঞ্জিং।’
বেইলি বলেন, মানবদেহ ৩৭ ডিগ্রি পর্যন্ত কাজ করতে সক্ষম। ৪০ ডিগ্রিতে আমাদের চৈতন্য লোপ পায় ও জ্ঞান হারানোর আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। উচ্চ কেন্দ্রীয় তাপমাত্রার ফলে দেহের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্থ হয়। যেমন-হৃদ পেশি ও মস্তিষ্ক।
তিনি বলেন, ‘একবার কেন্দ্রীয় তাপমাত্রা ৪১-৪২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে উঠে গেলে আমরা মারাত্মক সমস্যাগুলো দেখতে পাই। তখন কাউকে জরুরি চিকিৎসা না দেয়া হলে হাইপারথার্মিয়াতে তার মৃত্যু হতে পারে।’
ক্রমবর্ধমান এই তাপমাত্রার সাথে মানিয়ে চলতে হলে কিছু সাধারণ পরামর্শ হলো- ছায়ায় থাকা, ঢিলেঢালা পোশাক পরা, অ্যালকোহল পরিহার করা, ঘর ঠাণ্ডা রাখা, দিনের উষ্ণতম সময়ে ব্যায়াম না করা এবং পর্যাপ্ত পানি পান করা।