ঢাকা ০৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
২০ বছর কোমায় থাকার পর মারা গেলেন সৌদি আরবের ‘স্লিপিং প্রিন্স’ আল ওয়ালিদ শিলং থেকে ‘নব্য গডফাদার’ এসেছে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সালাহউদ্দিনকে ‘নব্য গডফাদার’ বলায় এনসিপি’র মঞ্চ ভাঙচুর, সভা পণ্ড স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দুধ দিয়ে গোসল করলেন স্বামী যাত্রাবাড়ীর আবাসিক হোটেলে শিশু হত্যার রহস্য উদঘাটন : ঘাতক গ্রেফতার জামায়াতের অনেক দায় কাধেঁ নিয়েছে বিএনপি – টুকু টেলিগ্রাম অ্যাপে ‘বিনিয়োগের ফাঁদ’ লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া দুই প্রতারক গ্রেপ্তার ফ্যাসিস্টরা জোট হয়ে ক্ষমতা ফিরে পেতে চক্রান্ত করছে: মির্জা ফখরুল রংপুরে গ্যাস স্টেশনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ; নিহত ১, আহত ২৫ এবার লড়াই হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে: জামায়াত আমির

উলিপুরে মানুষের সাথে বেজির বন্ধুত্ব

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৬:০০:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৮৭ Time View

সভ্যতার অগ্রগতিতে যখন বন্য প্রাণীদের অস্তিত্ব সংকট চলছে, তখন বেজির সঙ্গে মানুষের বন্ধুত্ব সত্যিই বিস্ময়কর ঘটনা। দেখে সিনেমার চিত্রনাট্য মনে হলেও বাস্তবে সত্যি। কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌরসভার রাজারাম ক্ষেত্রী গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে দুলাল মিয়া জঙ্গল থেকে একটি বেজির বাচ্চা ধরে নিয়ে আসে বাড়িতে।

এরপর তার বাবা শুকুর আলী বেজির বাচ্চাটিকে খাঁচায় রেখে খাওয়ান। আদর করে নাম রেখেছেন রুপালী। শুকুর আলী উলিপুর-রাজারহাট সড়কের নারিকেল বাড়ি সন্যাসী তলায় চা-বিস্কুট দোকান করেন। দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই তিনি খাঁচায় করে বেজিটিকে দোকানে নিয়ে এসে ছেড়ে দেন।

এরপর রুপালী নামে ডাক দিলে দৌড়ে চলে আসে। দুধ, কলা, সমুচা, চিপস, বিস্কুটসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবার খেয়ে আবার দোকান এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় ঘুরে বেড়ান।

খিদে পেলে দোকানে এসে পিছনে পিছনে ঘুরেন এবং বিভিন্ন জায়গায় লাফালাফি শুরু করে দেয়। সন্ধ্যা হলে খাঁচায় তুলে বাড়িতে নিয়ে যান। কিছুদিন পর খাঁচা ব্যবহার না করে বেজিটিকে শুকুর আলী বাড়ি থেকে হেঁটে দোকানে নিয়ে আসে এবং দোকান থেকে হেঁটে বাড়িতে নিয়ে যান। এখন বেজিটি বাড়িতে যাওয়া আসার ভয়ে থাকে কুকুরের আক্রমন। দিন যতই যাচ্ছে বেজি আর শুকুর আলীর বন্ধুত্ব ততই বাড়ছে। শুকুর আলী স্যাম্পু দিয়ে সপ্তাহে একদিন বেজিটিকে গোসল করে দেন। ঘটনাটি লোকমুখে জানাজানি হলে বিভিন্ন এলাকার মানুষজন বেজি আর মানুষের বন্ধুত্ব দেখার জন্য দোকানে আসেন। এরমধ্যে কেউ কেউ বিস্কুট, কলা, সমুচাসহ বিভিন্ন খাবার খেতে দেন। বেজিটি এ পর্যন্ত কাউকে কামড়, হাঁচড়সহ কোন ক্ষতিও করেনি।

প্রতিবেশী সবুজ মিয়া জানান, শুকুর আলী পশু পাখি প্রেমী। শুধু বেজি নয়। এর আগে তিনি জঙ্গলের ইঁদুরকে পোষ মানিয়েছিলেন। এখনো মুক্ত আকাশে ঘুরে বেড়ানো পাখিকে হাতে করে খাবার খাওয়ান। তার এগুলো দেখে আমরা আশ্চর্য।

এ বিষয়ে শুকুর আলী সাথে কথা হলে তিনি জানান, মানুষ হয়ে মানুষের কথা শোনে না, মানে না। অথচ বনের পশু কথা শোনে, মানে। আমি মানুষকে দেখানোর জন্য বেজিটিকে ছোট থেকে পুষতেছি। নাম রেখেছি রুপালী। এখন আমার সাথে হেঁটে বাড়ি থেকে দোকান যাওয়া আসা করে। যখনই নাম ধরে ডাকি যেখানেই থাক আমার কাছে চলে আসে। বর্তমানে আমি বেজিটিকে সন্তানের মতো লালন পালন করতেছি।

Please Share This Post in Your Social Media

উলিপুরে মানুষের সাথে বেজির বন্ধুত্ব

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
Update Time : ০৬:০০:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

সভ্যতার অগ্রগতিতে যখন বন্য প্রাণীদের অস্তিত্ব সংকট চলছে, তখন বেজির সঙ্গে মানুষের বন্ধুত্ব সত্যিই বিস্ময়কর ঘটনা। দেখে সিনেমার চিত্রনাট্য মনে হলেও বাস্তবে সত্যি। কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌরসভার রাজারাম ক্ষেত্রী গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে দুলাল মিয়া জঙ্গল থেকে একটি বেজির বাচ্চা ধরে নিয়ে আসে বাড়িতে।

এরপর তার বাবা শুকুর আলী বেজির বাচ্চাটিকে খাঁচায় রেখে খাওয়ান। আদর করে নাম রেখেছেন রুপালী। শুকুর আলী উলিপুর-রাজারহাট সড়কের নারিকেল বাড়ি সন্যাসী তলায় চা-বিস্কুট দোকান করেন। দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই তিনি খাঁচায় করে বেজিটিকে দোকানে নিয়ে এসে ছেড়ে দেন।

এরপর রুপালী নামে ডাক দিলে দৌড়ে চলে আসে। দুধ, কলা, সমুচা, চিপস, বিস্কুটসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবার খেয়ে আবার দোকান এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় ঘুরে বেড়ান।

খিদে পেলে দোকানে এসে পিছনে পিছনে ঘুরেন এবং বিভিন্ন জায়গায় লাফালাফি শুরু করে দেয়। সন্ধ্যা হলে খাঁচায় তুলে বাড়িতে নিয়ে যান। কিছুদিন পর খাঁচা ব্যবহার না করে বেজিটিকে শুকুর আলী বাড়ি থেকে হেঁটে দোকানে নিয়ে আসে এবং দোকান থেকে হেঁটে বাড়িতে নিয়ে যান। এখন বেজিটি বাড়িতে যাওয়া আসার ভয়ে থাকে কুকুরের আক্রমন। দিন যতই যাচ্ছে বেজি আর শুকুর আলীর বন্ধুত্ব ততই বাড়ছে। শুকুর আলী স্যাম্পু দিয়ে সপ্তাহে একদিন বেজিটিকে গোসল করে দেন। ঘটনাটি লোকমুখে জানাজানি হলে বিভিন্ন এলাকার মানুষজন বেজি আর মানুষের বন্ধুত্ব দেখার জন্য দোকানে আসেন। এরমধ্যে কেউ কেউ বিস্কুট, কলা, সমুচাসহ বিভিন্ন খাবার খেতে দেন। বেজিটি এ পর্যন্ত কাউকে কামড়, হাঁচড়সহ কোন ক্ষতিও করেনি।

প্রতিবেশী সবুজ মিয়া জানান, শুকুর আলী পশু পাখি প্রেমী। শুধু বেজি নয়। এর আগে তিনি জঙ্গলের ইঁদুরকে পোষ মানিয়েছিলেন। এখনো মুক্ত আকাশে ঘুরে বেড়ানো পাখিকে হাতে করে খাবার খাওয়ান। তার এগুলো দেখে আমরা আশ্চর্য।

এ বিষয়ে শুকুর আলী সাথে কথা হলে তিনি জানান, মানুষ হয়ে মানুষের কথা শোনে না, মানে না। অথচ বনের পশু কথা শোনে, মানে। আমি মানুষকে দেখানোর জন্য বেজিটিকে ছোট থেকে পুষতেছি। নাম রেখেছি রুপালী। এখন আমার সাথে হেঁটে বাড়ি থেকে দোকান যাওয়া আসা করে। যখনই নাম ধরে ডাকি যেখানেই থাক আমার কাছে চলে আসে। বর্তমানে আমি বেজিটিকে সন্তানের মতো লালন পালন করতেছি।