ঢাকা ০৯:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা সংকটাপন্ন নদীগুলোকে আমাদের বাঁচাতে হবে – পানি সম্পদ উপদেষ্টা ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ইরান,পারমাণবিক কর্মসূচি চলবে: পেজেশকিয়ান শিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে সিলেটে অভিনব প্রতিবাদ মাইলস্টোন শিক্ষার্থীদের উসকানিদাতা রাফি যুবলীগ নেতা ভারতে পালানোর সময় ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি গ্রেফতার সন্ত্রাস দমনে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ-পাকিস্তান এই স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, এটা কোনো কাজের না : হাসনাত আবদুল্লাহ সরকারের দুর্বলতাকে নয় সদিচ্ছাকে বড় করে দেখা উচিতঃ মির্জা ফখরুল ভোটকক্ষ থেকে সরাসরি সম্প্রচার ও গোপনকক্ষের ভেতরে ছবি তোলা যাবে না সিইসি ও কমিশনার নিয়োগের পদ্ধতিতে রাজনৈতিক দলগুলো একমত

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ইরান,পারমাণবিক কর্মসূচি চলবে: পেজেশকিয়ান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : ১২:৪২:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫
  • / ১৫ Time View

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। ছবি: রয়টার্স

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্ভাব্য যে কোনও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত তার দেশ। যুদ্ধবিরতি নিয়ে আশাবাদী নন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

একইসঙ্গে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশে ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে নিশ্চিত করে জানান পেজেশকিয়ান।

বুধবার আল-জাজিরাকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।

গতমাসে ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের ১২ দিনের যুদ্ধের পর থেকে পেজেশকিয়ানের প্রথম দেওয়া সাক্ষাৎকারগুলোর এটি একটি। ওই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রও ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে ইরানের পামাণবিক স্থাপণাগুলোতে হামলা চালিয়েছিল।

পরে যুদ্ধবিরতির মধ্য দিয়ে সংঘাত থামে। এরপর থেকে পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের চলমান পারমাণবিক কর্মসূচির একটি সমাধান খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে আসছে।

বিশেষ করে হামলায় ইরানের পামাণবিক স্থাপনার যে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র যুক্তরাষ্ট্র তুলে ধরেছিল, তার চেয়ে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে বলে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদনের প্রেক্ষাপটে এই চেষ্টা চলছে।

আল-জাজিরাকে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, “ইসরায়েল আবার হামলা করলে আমদের সশস্ত্র বাহিনী সেদেশের আরও গভীরে আঘাত হানতে প্রস্তুত।

“১২ দিনের যুদ্ধের পর যুদ্ধবিরতি হলেও ইরান এর ওপর নির্ভর করে নেই। আমরা এর (যুদ্ধবিরতি) স্থায়িত্ব নিয়ে আশাবাদী নই। সে কারণে, আমরা আবার যে কোনও যুদ্ধ কিংবা পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত রেখেছি।

“ইসরায়েল আমাদের ক্ষতি করেছে, আমরাও তাদের ক্ষতি করেছি। তারা আমাদের ওপর শক্তিশালী আঘাত হেনেছে। আমরাও তাদের ভূখন্ডের গভীরে আঘাত হেনেছি। কিন্তু তারা তাদের ক্ষয়ক্ষতি লুকিয়ে রাখছে।”

পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে পেজেশকিয়ান বলেন, আন্তর্জাতিক বিরোধিতার পরও ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক আইন ও পরিকাঠামোর মধ্যে থেকেই ইরান নিজেদের পারমাণবিক সক্ষমতার উন্নয়ন সাধন করবে।

পেজেশকিয়ান আল জাজিরাকে বলেন, ‘আমরা যে কোনো নতুন ইসরায়েলি সামরিক পদক্ষেপের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং আমাদের সশস্ত্র বাহিনী আবারও ইসরায়েলের গভীরে আঘাত হানতে প্রস্তুত।’

তিনি বলেন, ইরান ১২ দিনের যুদ্ধের অবসান ঘটানো যুদ্ধবিরতির ওপর নির্ভর করছে না। পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আমরা এটি সম্পর্কে খুব একটা আশাবাদী নই।’

‘এজন্যই আমরা যে কোনো সম্ভাব্য পরিস্থিতি এবং যে কোনো সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার জন্য নিজেদের প্রস্তুত রেখেছি। ইসরায়েল আমাদের ক্ষতি করেছে এবং আমরাও তাদের ক্ষতি করেছি। তারা আমাদের ওপর শক্তিশালী আঘাত করেছে এবং আমরা তাদের গভীরে প্রচণ্ড আঘাত করেছি, কিন্তু তারা তাদের ক্ষতি গোপন করছে।’

ইরানি প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ইসরায়েলের হামলা, যার মাধ্যমে শীর্ষস্থানীয় সামরিক ব্যক্তিত্ব এবং পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যা করা হয়েছিল এবং পারমাণবিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল – ইরানের শ্রেণিবিন্যাসকে ‘নির্মূল’ করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তারা তা করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে।

২৪ জুন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগে ইরানে ৯০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। যার মধ্যে বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক বলে জানা গেছে। ইসরায়েল কমপক্ষে ২৮ জন নিহত হওয়ার তথ্য দিয়েছে।

সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে

পেজেশকিয়ান বলেন, আন্তর্জাতিক বিরোধিতা সত্ত্বেও ইরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, পারমাণবিক সক্ষমতার উন্নয়ন ‘আন্তর্জাতিক আইনের কাঠামোর মধ্যে’ পরিচালিত হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, ‘ট্রাম্প বলেছেন যে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র থাকা উচিত নয়। আমরা এটি মেনে নেই, কারণ আমরা পারমাণবিক অস্ত্র প্রত্যাখ্যান করি। এটি আমাদের রাজনৈতিক, ধর্মীয়, মানবিক এবং কৌশলগত অবস্থান।’

পেজেশকিয়ান আরও বলে, ‘আমরা কূটনীতিতে বিশ্বাস করি, তাই ভবিষ্যতের যে কোনো আলোচনা অবশ্যই যুক্তি অনুসারে হতে হবে এবং আমরা হুমকি ও নির্দেশ মেনে নেব না।’

তিনি বলেন, ট্রাম্পের দাবি – ‘আমাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শেষ হয়ে গেছে’ তা কেবল একটি বিভ্রম। আমাদের পারমাণবিক ক্ষমতা আমাদের বিজ্ঞানীদের মনে, স্থাপনা-অবকাঠামোর মধ্যে নয়।’

পেজেশকিয়ানের মন্তব্য ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির আগের মন্তব্যের প্রতিধ্বনি। যিনি সোমবার সম্প্রচারিত মার্কিন সম্প্রচারক ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তেহরান কখনই তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি ত্যাগ করবে না। তবে পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার ইস্যু আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্য তারা উন্মুক্ত।

ইসরায়েল নেতৃত্বকে ‘উত্খাত’ করতে চেয়েছিল

১৫ জুন তেহরানে সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের এক সভায় পেজেশকিয়ান ইসরায়েলের তাকে হত্যার চেষ্টার বিষয়েও বক্তব্য রাখেন, যেখানে তিনি সামান্য আহত হন বলে জানা গেছে।

হত্যা প্রচেষ্টা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি ইরানের জ্যেষ্ঠ সামরিক ব্যক্তিত্বদের হত্যার পর ইরানের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি কমান্ডারদের একটি পরিকল্পনার অংশ ছিল, ‘দেশকে সম্পূর্ণরূপে উৎখাত করার জন্য বিশৃঙ্খলার মধ্যে ফেলার’ লক্ষ্যে। কিন্তু পরিকল্পনাটি ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার প্রেক্ষাপটে কাতারের আল উদেইদ ঘাঁটিতে তেহরানের হামলা কাতার এবং তার জনগণের ওপর আক্রমণ ছিল না।

তিনি বলেন, আমাদের এবং কাতার রাষ্ট্রের মধ্যে শত্রুতা বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকা উচিত – এমন কোনো চিন্তা বা কল্পনাও নেই।

হামলার দিনও তিনি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিকে ফোন করে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করেছিলেন।

তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে এবং সততার সাথে বলছি, আমরা কাতার রাষ্ট্রের ওপর আক্রমণ করিনি, বরং আমরা আমেরিকার একটি ঘাঁটিতে আক্রমণ করেছি, যারা আমাদের দেশে বোমা হামলা চালিয়েছে। কাতার এবং এর জনগণের প্রতি আমাদের সমস্ত উদ্দেশ্য ভালো এবং ইতিবাচক।’

Please Share This Post in Your Social Media

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ইরান,পারমাণবিক কর্মসূচি চলবে: পেজেশকিয়ান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Update Time : ১২:৪২:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্ভাব্য যে কোনও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত তার দেশ। যুদ্ধবিরতি নিয়ে আশাবাদী নন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

একইসঙ্গে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশে ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে নিশ্চিত করে জানান পেজেশকিয়ান।

বুধবার আল-জাজিরাকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।

গতমাসে ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের ১২ দিনের যুদ্ধের পর থেকে পেজেশকিয়ানের প্রথম দেওয়া সাক্ষাৎকারগুলোর এটি একটি। ওই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রও ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে ইরানের পামাণবিক স্থাপণাগুলোতে হামলা চালিয়েছিল।

পরে যুদ্ধবিরতির মধ্য দিয়ে সংঘাত থামে। এরপর থেকে পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের চলমান পারমাণবিক কর্মসূচির একটি সমাধান খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে আসছে।

বিশেষ করে হামলায় ইরানের পামাণবিক স্থাপনার যে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র যুক্তরাষ্ট্র তুলে ধরেছিল, তার চেয়ে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে বলে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদনের প্রেক্ষাপটে এই চেষ্টা চলছে।

আল-জাজিরাকে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, “ইসরায়েল আবার হামলা করলে আমদের সশস্ত্র বাহিনী সেদেশের আরও গভীরে আঘাত হানতে প্রস্তুত।

“১২ দিনের যুদ্ধের পর যুদ্ধবিরতি হলেও ইরান এর ওপর নির্ভর করে নেই। আমরা এর (যুদ্ধবিরতি) স্থায়িত্ব নিয়ে আশাবাদী নই। সে কারণে, আমরা আবার যে কোনও যুদ্ধ কিংবা পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত রেখেছি।

“ইসরায়েল আমাদের ক্ষতি করেছে, আমরাও তাদের ক্ষতি করেছি। তারা আমাদের ওপর শক্তিশালী আঘাত হেনেছে। আমরাও তাদের ভূখন্ডের গভীরে আঘাত হেনেছি। কিন্তু তারা তাদের ক্ষয়ক্ষতি লুকিয়ে রাখছে।”

পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে পেজেশকিয়ান বলেন, আন্তর্জাতিক বিরোধিতার পরও ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক আইন ও পরিকাঠামোর মধ্যে থেকেই ইরান নিজেদের পারমাণবিক সক্ষমতার উন্নয়ন সাধন করবে।

পেজেশকিয়ান আল জাজিরাকে বলেন, ‘আমরা যে কোনো নতুন ইসরায়েলি সামরিক পদক্ষেপের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং আমাদের সশস্ত্র বাহিনী আবারও ইসরায়েলের গভীরে আঘাত হানতে প্রস্তুত।’

তিনি বলেন, ইরান ১২ দিনের যুদ্ধের অবসান ঘটানো যুদ্ধবিরতির ওপর নির্ভর করছে না। পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আমরা এটি সম্পর্কে খুব একটা আশাবাদী নই।’

‘এজন্যই আমরা যে কোনো সম্ভাব্য পরিস্থিতি এবং যে কোনো সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার জন্য নিজেদের প্রস্তুত রেখেছি। ইসরায়েল আমাদের ক্ষতি করেছে এবং আমরাও তাদের ক্ষতি করেছি। তারা আমাদের ওপর শক্তিশালী আঘাত করেছে এবং আমরা তাদের গভীরে প্রচণ্ড আঘাত করেছি, কিন্তু তারা তাদের ক্ষতি গোপন করছে।’

ইরানি প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ইসরায়েলের হামলা, যার মাধ্যমে শীর্ষস্থানীয় সামরিক ব্যক্তিত্ব এবং পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যা করা হয়েছিল এবং পারমাণবিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল – ইরানের শ্রেণিবিন্যাসকে ‘নির্মূল’ করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তারা তা করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে।

২৪ জুন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগে ইরানে ৯০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। যার মধ্যে বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক বলে জানা গেছে। ইসরায়েল কমপক্ষে ২৮ জন নিহত হওয়ার তথ্য দিয়েছে।

সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে

পেজেশকিয়ান বলেন, আন্তর্জাতিক বিরোধিতা সত্ত্বেও ইরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, পারমাণবিক সক্ষমতার উন্নয়ন ‘আন্তর্জাতিক আইনের কাঠামোর মধ্যে’ পরিচালিত হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, ‘ট্রাম্প বলেছেন যে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র থাকা উচিত নয়। আমরা এটি মেনে নেই, কারণ আমরা পারমাণবিক অস্ত্র প্রত্যাখ্যান করি। এটি আমাদের রাজনৈতিক, ধর্মীয়, মানবিক এবং কৌশলগত অবস্থান।’

পেজেশকিয়ান আরও বলে, ‘আমরা কূটনীতিতে বিশ্বাস করি, তাই ভবিষ্যতের যে কোনো আলোচনা অবশ্যই যুক্তি অনুসারে হতে হবে এবং আমরা হুমকি ও নির্দেশ মেনে নেব না।’

তিনি বলেন, ট্রাম্পের দাবি – ‘আমাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শেষ হয়ে গেছে’ তা কেবল একটি বিভ্রম। আমাদের পারমাণবিক ক্ষমতা আমাদের বিজ্ঞানীদের মনে, স্থাপনা-অবকাঠামোর মধ্যে নয়।’

পেজেশকিয়ানের মন্তব্য ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির আগের মন্তব্যের প্রতিধ্বনি। যিনি সোমবার সম্প্রচারিত মার্কিন সম্প্রচারক ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তেহরান কখনই তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি ত্যাগ করবে না। তবে পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার ইস্যু আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্য তারা উন্মুক্ত।

ইসরায়েল নেতৃত্বকে ‘উত্খাত’ করতে চেয়েছিল

১৫ জুন তেহরানে সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের এক সভায় পেজেশকিয়ান ইসরায়েলের তাকে হত্যার চেষ্টার বিষয়েও বক্তব্য রাখেন, যেখানে তিনি সামান্য আহত হন বলে জানা গেছে।

হত্যা প্রচেষ্টা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি ইরানের জ্যেষ্ঠ সামরিক ব্যক্তিত্বদের হত্যার পর ইরানের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি কমান্ডারদের একটি পরিকল্পনার অংশ ছিল, ‘দেশকে সম্পূর্ণরূপে উৎখাত করার জন্য বিশৃঙ্খলার মধ্যে ফেলার’ লক্ষ্যে। কিন্তু পরিকল্পনাটি ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার প্রেক্ষাপটে কাতারের আল উদেইদ ঘাঁটিতে তেহরানের হামলা কাতার এবং তার জনগণের ওপর আক্রমণ ছিল না।

তিনি বলেন, আমাদের এবং কাতার রাষ্ট্রের মধ্যে শত্রুতা বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকা উচিত – এমন কোনো চিন্তা বা কল্পনাও নেই।

হামলার দিনও তিনি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিকে ফোন করে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করেছিলেন।

তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে এবং সততার সাথে বলছি, আমরা কাতার রাষ্ট্রের ওপর আক্রমণ করিনি, বরং আমরা আমেরিকার একটি ঘাঁটিতে আক্রমণ করেছি, যারা আমাদের দেশে বোমা হামলা চালিয়েছে। কাতার এবং এর জনগণের প্রতি আমাদের সমস্ত উদ্দেশ্য ভালো এবং ইতিবাচক।’