ঢাকা ১০:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইবি শিক্ষকের চাকরিচ্যুতির দাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৬:৫৫:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৬৯ Time View

ছাত্রী হেনস্তাসহ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ঘটনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামকে এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটিসহ ইনক্রিমেন্ট বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

তবে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখান করে ওই সহকারী অধ্যাপককে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করার দাবিতে উপাচার্যের বাসভন ঘেরাও করেছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। এরপর উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। এরপর পরবর্তী সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার শর্তে বেলা সাড়ে ৩ টায় আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থী। এর আগে, বেলা সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। পরে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্য বাসভবনে গিয়ে অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা।

হাফিজুল ইসলাম

মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘তদন্ত না ভন্ডামি, ভন্ডামি ভন্ডামি’, ‘প্রশাসন সিদ্ধান্ত, মানি না মানবো না’, ‘প্রহসনের বিচার মানিনা মানবোনা’, ‘প্রশাসনে প্রহসন, মানি না মানবো না’, ‘বিচার না পুরষ্কার, পুরষ্কার পুরষ্কার’, ‘একশন একশন, ডাইরেক্ট একশন’, ‘হাফিজের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন’ ও ‘হাফিজ হটাও, ক্যাম্পাস বাচাও’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী দ্বীপ সাহা বলেন, ‘হাফিজের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ আছে শিক্ষার্থীদের। কিন্তু প্রশাসন বিচারের নামে একটা প্রহসন করছে। তাকে মাত্র এক বছরের ছুটিতে পাঠিয়েছে। এটা মনে হয় যেন তাকে প্রশাসন পুরস্কৃত করেছে। আমরা এ বিচার প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা হাফিজকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার চাই। আমরা লম্পটমুক্ত ক্যাম্পাস চাই। আমরা তার স্থায়ী বহিষ্কারের অবস্থান কর্মসূচি করছি। প্রশাসন সুনির্দিষ্টভাবে আমাদের কথা দিবে তারপরে আমরা এখান থেকে উঠবো। তার বিরুদ্ধে ২৭ টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এরপরেও তার বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা প্রশাসনের প্রতি আস্থা রেখেছি। কিন্তু প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কিছুই করেনি। হাফিজ যদি এক বছর পরে আবারও ফিরে আসে তাহলে সে শিক্ষার্থীদের জীবন শেষ করে ফেলবে। আমরা এই হুমকির মধ্যে থাকতে চাই না। আমরা তার স্থায়ী বহিষ্কার চাই। তিনি বিভাগকে একটি টর্চারসেল বানিয়ে ফেলছিলো।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল সৃষ্টি করা, শিক্ষার্থীদের ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে মারার হুমকি, ব্যক্তিগত রুমে নিয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ এনে আন্দোলন করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পায়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে ওই শিক্ষকের ইনক্রিমেন্ট বাতিলসহ এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটির সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

Please Share This Post in Your Social Media

ইবি শিক্ষকের চাকরিচ্যুতির দাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
Update Time : ০৬:৫৫:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

ছাত্রী হেনস্তাসহ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ঘটনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামকে এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটিসহ ইনক্রিমেন্ট বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

তবে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখান করে ওই সহকারী অধ্যাপককে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করার দাবিতে উপাচার্যের বাসভন ঘেরাও করেছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। এরপর উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। এরপর পরবর্তী সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার শর্তে বেলা সাড়ে ৩ টায় আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থী। এর আগে, বেলা সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। পরে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্য বাসভবনে গিয়ে অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা।

হাফিজুল ইসলাম

মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘তদন্ত না ভন্ডামি, ভন্ডামি ভন্ডামি’, ‘প্রশাসন সিদ্ধান্ত, মানি না মানবো না’, ‘প্রহসনের বিচার মানিনা মানবোনা’, ‘প্রশাসনে প্রহসন, মানি না মানবো না’, ‘বিচার না পুরষ্কার, পুরষ্কার পুরষ্কার’, ‘একশন একশন, ডাইরেক্ট একশন’, ‘হাফিজের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন’ ও ‘হাফিজ হটাও, ক্যাম্পাস বাচাও’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী দ্বীপ সাহা বলেন, ‘হাফিজের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ আছে শিক্ষার্থীদের। কিন্তু প্রশাসন বিচারের নামে একটা প্রহসন করছে। তাকে মাত্র এক বছরের ছুটিতে পাঠিয়েছে। এটা মনে হয় যেন তাকে প্রশাসন পুরস্কৃত করেছে। আমরা এ বিচার প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা হাফিজকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার চাই। আমরা লম্পটমুক্ত ক্যাম্পাস চাই। আমরা তার স্থায়ী বহিষ্কারের অবস্থান কর্মসূচি করছি। প্রশাসন সুনির্দিষ্টভাবে আমাদের কথা দিবে তারপরে আমরা এখান থেকে উঠবো। তার বিরুদ্ধে ২৭ টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এরপরেও তার বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা প্রশাসনের প্রতি আস্থা রেখেছি। কিন্তু প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কিছুই করেনি। হাফিজ যদি এক বছর পরে আবারও ফিরে আসে তাহলে সে শিক্ষার্থীদের জীবন শেষ করে ফেলবে। আমরা এই হুমকির মধ্যে থাকতে চাই না। আমরা তার স্থায়ী বহিষ্কার চাই। তিনি বিভাগকে একটি টর্চারসেল বানিয়ে ফেলছিলো।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল সৃষ্টি করা, শিক্ষার্থীদের ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে মারার হুমকি, ব্যক্তিগত রুমে নিয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ এনে আন্দোলন করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পায়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে ওই শিক্ষকের ইনক্রিমেন্ট বাতিলসহ এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটির সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।