আসনের হিসাব করে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না এনসিপি: নাহিদ ইসলাম
- Update Time : ০৫:০৫:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ১৮ Time View
নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে প্রার্থী ঘোষণা শুরু করলেও ভোটে জেতাই নির্বাচনের মূল লক্ষ্য নয় বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
নাহিদ ইসলাম বলেছেন, নির্বাচনে আসন জেতাই যদি তাঁদের লক্ষ্য হতো, তাহলে তাঁরা কোনো না কোনো জোটে ভিড়তেন। বুধবার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে দলে অস্থায়ী কার্যালয়ে নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। এর ঠিক আগেই ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে প্রথম ধাপে ১২৫ আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে এনসিপি।
অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণেরা এনসিপি গঠন করে শাপলা কলি প্রতীকে সেই নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছে। নাহিদ ইসলাম প্রার্থী হতে যাচ্ছেন ঢাকা–১১ আসনে।
নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে এখনো পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন জায়গায় দেখছি যে আমাদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে এবং নির্বাচনী বিধিবিধান লঙ্ঘন করেই নির্বাচনী প্রচারণার কাজ পোস্টারিং বা টাকা খরচের যে বিষয়গুলো, এগুলো কিন্তু আসতেছে। আমরা নির্বাচন কমিশনে বলে আসছি যে প্রার্থীদের যেই খরচের হিসাব, সেটা যাতে যথাযথভাবে নির্বাচন কমিশন যাচাই–বাছাই করে আদায় করে নেয়। আমরা দেখছি বিভিন্ন জায়গায় অস্ত্রের মহড়া হচ্ছে। বিএনপি–জামায়াত উভয় দল থেকে আমরা এই ধরনের সংস্কৃতি দেখছি।’
বিভিন্ন দলের মনোনয়নপ্রক্রিয়ার সমালোচনা করে নাহিদ বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় মাফিয়াদের নমিনেশন দেওয়া হয়েছে। ঋণখেলাপিকে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে কি না, এর ওপর নির্ভর করবে কমিশন কতটা সুষ্ঠু প্রক্রিয়ায় কাজ করছে।’
বিপরীতে নিজেদের প্রার্থী তালিকা নিয়ে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম যে আমাদের এই যে মনোনয়ন তালিকাটা হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক…সেখানে নারী-পুরুষ, সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সবকিছুর সমন্বয় আমরা করব।’
এনসিপি আজ ১২৫ আসনে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। মনোনীত কারও বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে প্রার্থিতা বাতিল হবে বলে জানান নাহিদ।
আগামী নির্বাচনের তাৎপর্য তুলে ধরে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এবারের নির্বাচনটা গণভোট, এটা যাতে আমরা কেউ ভুলে না যাই। বলা হচ্ছে, প্রার্থী দেখে ভোট দেবেন, নাকি মার্কা দেখে ভোট দেবেন। কিন্তু ভোটটা যে গণভোট, ভোটের অন্যতম প্রধান প্রশ্ন হচ্ছে হ্যাঁ অথবা না, এই কথাটাই বলার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতেছি। আপনারা অনেকে জিজ্ঞেস করেন যে আমরা কয়টা সিট পাব বা আমরা কয়টা সিট প্রত্যাশা করি। আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতেছি না, এটা খুবই পরিষ্কার। সিট কয়টা পাব কি পাব না, সেটা বিবেচনায় রেখেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতেছি না। সিট নিশ্চিত করতে হলে আমরা কোনো না কোনো জোটের সঙ্গে চলে যাইতাম।’
রাজনৈতিক দল হিসেবে এনসিপি গঠনের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে অভ্যুত্থানের এই ছাত্রনেতা বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি, যদি গণঅভ্যুত্থানের পরে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী, সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী, তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী রাজনীতি পুনর্গঠিত করত, নিজেদের দলের ভেতরে সংস্কার আনত, নিজেদের নীতি–আদর্শকে আরও ঠিক করত, তাহলে এনসিপির জন্মের প্রয়োজন ছিল না। এনসিপি সাত মাস অপেক্ষা করেছে, যাতে বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলো একটা সমঝোতায় এসে আমাদের তরুণ প্রজন্মের গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করে। যেহেতু তারা সেটা করে নাই। যেহেতু তারা নিজেদের দলাদলি–অন্তর্দ্বন্দ্বে ব্যস্ত ছিল, নিজেদের দলীয় এজেন্ডাকে প্রধান করে তুলেছে, তার ফলেই কিন্তু এনসিপির জন্ম হয়েছে।’
অন্য দলগুলোর সমালোচনা করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি যে সংস্কার ছিল গণ–অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান এজেন্ডা। দ্বিতীয় এজেন্ডা ছিল বিচার। এই যে সামনে একটা গণভোট হবে এবং গণভোটে যে সংস্কারপ্রক্রিয়া বাস্তবায়ন হবে, এই আলাপটাই কোনো রাজনৈতিক দল করছে না। সবাই তার নিজের দলের যার যার যে এজেন্ডা, সেই এজেন্ডাকে নিয়ে ক্যাম্পেইন করতেছে বা সেটাকে তুলে ধরতেছে।’
















































































































































































