আশুগঞ্জে ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মী হত্যা: দুইজনের যাবজ্জীবন, তিনজনের ১০ বছর করে জেল

- Update Time : ০৫:৩৪:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুন ২০২৪
- / ২২৮ Time View
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ব্যাংকের শাখায় ডাকাতি করতে গিয়ে নিরাপত্তাকর্মীকে খুনের ঘটনায় দুইজনকে যাবজ্জীবন ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছে আদালত।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা জজ ২য় আদালতের বিচারক আব্দুল হান্নান এই রায় প্রদান করেন। এছাড়াও এই মামলায় তিনজনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডাদেশের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। এই মামলায় সাদ্দাম নামের এক আসামি বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন জেলার আশুগঞ্জের বগীর গ্রামের রসু মিয়া জামাল হোসেন ওরফে মাসুদ (৩০)ও আড়াইসিধা গ্রামের খালেক মিয়ার জামির হোসেন (৩৪)।
১০ বছর করে কারাদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন, আশুগঞ্জের চরচারতলা গ্রামের এলাই মিয়ার ছেলে মো. মোস্তফা (৩৪), নোয়াব মিয়ার ছেলে শাহাদাৎ হোসেন (২৪) ও আবুল কাশেমের ছেলে মাসুদ মিয়া (৪৩)।
মামলার নথি ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল) আশুগঞ্জ শাখার নিরাপত্তাকর্মী রাজেশ বিশ্বাসকে (২৩) খুন করে ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা করেন অভিযুক্ত আসামিরা। ঘটনার পর সাপ্তাহিক সরকারি ছুটি থাকায় তখন ঘটনাটি কেউই জানতে পারেনি। ঘটনা প্রকাশ্যে আসে ২৬ সেপ্টেম্বর। ওই দিন রাত পৌনে ১২টার দিকে বিডিবিএলের ওই শাখা থেকে নিরাপত্তাকর্মী রাজেশের হাত-পা ও মুখ বাঁধা রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। খুন হওয়া রাজেশ সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার চান্দপুর গ্রামের ক্ষীরোদ বিশ্বাসের ছেলে। এর পরদিন ২৭ সেপ্টেম্বর বিডিবিএল আশুগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক মোবাশ্বের হোসেন আশুগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় নিরাপত্তাকর্মী খুন ও ব্যাংকের ভেতরে অনুপ্রবেশ, চুরি ও ভল্ট লুটের চেষ্টার অভিযোগে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।
এ ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্ত আলামতের মাধ্যমে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন উপজেলার বগৈর এলাকার জামাল হোসেন ওরফে মাসুদ, আড়াইসিধা গ্রামের মো. জামিল ও সাদ্দাম হোসেন এবং নরসিংদীর রায়পুরার মাঝেরচর এলাকার বাসিন্দা মাসুম কবির । এর মধ্যে হত্যাকাণ্ডের প্রধান হোতা জামাল ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
পরে এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুর রহমান ৬জনকে অভিযুক্ত করে ২০২১ সালের ২২ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর চার্জ গঠন করেন। অবশেষে দুইজনকে যাবজ্জীবন, তিনজনকে ১০ বছর করে কারাদন্ড ও একজনকে খালাস প্রদান করে রায় প্রদান করে আদালত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের পুলিশ পরিদর্শক কাজি দিদারুল আলম বলেন, এটি একটি আলোচিত মামলা ছিল। কোর্ট পুলিশের চেষ্টায় আদালতে ১৮জন সাক্ষি হাজির হয়ে সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। রায় প্রদানের সময় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত দুই আসামি উপস্থিত ছিলেন। বাকী তিন আসামি পলাতক রয়েছেন।