আলোচনায় সিদ্ধান্তহীনতা, আবারও রেললাইন অবরোধ বাকৃবি শিক্ষার্থীদের

- Update Time : ০৯:৩০:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
- / ২৯ Time View
কৃষিবিদদের পেশাগত অধিকার রক্ষা ও বৈষম্য নিরসনের দাবিতে রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৩ মে) সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড় সংলগ্ন রেললাইন অবরোধ করে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে ট্রেন চলাচল সাময়িক বাধাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে রাত নয়টায় রেললাইন অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারীরা জানান, এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টায় কৃষিবিদদের ৬ দফা দাবিতে কৃষি সচিবের সঙ্গে আলোচনায় বসেন ‘কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে দেশের বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ জন প্রতিনিধি। আলোচনায় কৃষিবিদদের পেশাগত বৈষম্য দূরীকরণ এবং কৃষিখাতে ডিপ্লোমাধারী সিন্ডিকেটের প্রভাব রোধসহ ৬ দফা দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়।
আলোচনা চলাকালীন কৃষি সচিব কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের প্রথম ও চতুর্থ দাবি নিয়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কথা বলতে থাকেন। দাবি নিয়ে পরিষ্কার সিদ্ধান্ত না দিয়ে তিনি আন্দোলনকারীদের ধোঁয়াশার মধ্যে রেখেছেন।
এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে প্রতিবাদ মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তন, ছাত্রীহল সংলগ্ন সড়ক, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার হয়ে আবার প্রশাসন ভবনের সামনে ফিরে আসে। এরপর তারা আব্দুল জব্বার মোড় সংলগ্ন রেললাইন অবরোধ করে অবস্থান নেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, ‘কৃষি সচিবের সঙ্গে আলোচনার পরে দাবি নিয়ে সিদ্ধান্তের বিষয়ে যে গড়িমসি চলছে সেটির অগ্রগতি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে। যৌক্তিক এবং ন্যায্য দাবি কেন মেনে নেওয়া হচ্ছে না এটাই আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না।’
আন্দোলনকারী কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী ফাহাদ হাসান বলেন, ‘কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের প্রথম ও চতুর্থ নম্বর দাবিকে ঘিরে কৃষি সচিব আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কথা জানিয়েছেন। বাকি ৪টি দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করলেও প্রথম ও চতুর্থ দাবি মানতে তিনি রাজি হননি। এর প্রতিবাদস্বরূপ আমরা রেললাইন অবরোধ করেছি। আমরা জানিয়ে দিচ্ছি, এই আন্দোলন থামবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথেই থাকব।’
প্রসঙ্গত, কৃষিবিদদের অধিকার রক্ষায় ৬ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবিগুলো হলো- কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই), বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এবং অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানে ১০ম গ্রেড (উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা/ উপসহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা/ সমমান) কৃষিবিদদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে; ডিএই ও অন্যান্য কৃষি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে ৯ম গ্রেডসহ অন্যান্য গ্রেডে নিয়মিত পদোন্নতি ও পদবৃদ্ধির করতে হবে; নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া ব্যতীত ৯ম গ্রেডে (বিএডিসির কোটা বাতিল) পদোন্নতির কোনো সুযোগ রাখা যাবে না এবং ১০ম গ্রেডের পদসমূহ গেজেটের আওতার বাইরে স্বতন্ত্র পদসোপান কাঠামোয় রাখতে হবে; কৃষি বিষয়ক ডিপ্লোমাধারীদের জন্য কোনো নতুন বিশেষায়িত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা যাবে না; কৃষি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের ব্যতীত অন্য কেউ নামের আগে ‘কৃষিবিদ’ উপাধি ব্যবহার করতে পারবে না এবং এ বিষয়ে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে; কৃষি বিষয়ক ডিপ্লোমা বা কারিগরি শিক্ষাকে কৃষি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান (ডিএই)–এর অধীনেই রাখতে হবে।