ঢাকা ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৬, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমরা যদি মাঠে নামি রাজনৈতিক হিসাব পাল্টে যাবে: মির্জা ফখরুল

রাজনীতি ডেস্ক
  • Update Time : ০৯:২১:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১৫৬ Time View

বিএনপিকে অবজ্ঞা করলে ফল ভালো হবে না বলে মন্তব্য করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিএনপি ভেসে আসা দল নয়। বিএনপিকে খাটো করে দেখবেন না। আমরা যদি মাঠে নামি তাহলে রাজনৈতিক বিষয়গুলো ভিন্নভাবে আসবে।’

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে যশোর টাউন হল ময়দানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু।

মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে বলে মনে করেন উপদেষ্টারা।

কিন্তু তাদের এই ধারনা সঠিক নয়। আমরা অনেক সহ্য করেছি। বিএনপি ভেসে আসা কোনো রাজনৈতিক দল নয়। আমরা এদেশের মানুষের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে দেশে রাজনীতি করি। ফলে আমাদের ফেলনা মনে করলে ভুল করবেন।

তিনি বলেন, ‘অনেক রক্তের বিনিময়ে ফ্যাসিস্টের হাত থেকে স্বাধীন হয়েছি। সুযোগ হয়েছে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরে যাওয়ার। এ সুযোগ কোনো মহলের চক্রান্ত বা ষড়যন্ত্রের কারণে বিনষ্ট হতে দিতে পারি না।’

রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দয়া করে পানি ঘোলা করার চেষ্টা করবেন না। দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাবেন না। আপনাদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের এ প্রক্রিয়া জনগণ মেনে নেবে না।’

উপদেষ্টা পরিষদ পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছে

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‌‘তারা ঐকমত্যের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সাতদিন সময় দিয়েছেন। কিন্তু রাজনৈতিক দল তো হাতের খেলনার মতো নয়। সংস্কার কমিশনের সব সভায় আমরা গিয়েছি। মতামত দিয়েছি। যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে। সেগুলো হয়নি, সেগুলো পরবর্তী পার্লামেন্টে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু তা না করে তারা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছেন। দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’

জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট হবে, এর আগে নয়

বিএনপি মহাসচিব জোর দিয়ে বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট হবে, এর আগে নয়। টালবাহানা না করে দ্রুত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করুন, অন্যথায় সরকার ব্যর্থ হবে।’

ফখরুল আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে কোনো গণভোট করা ঠিক হবে না। যদি তা হয়, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। আমি ড. ইউনূস সরকারকে অবিলম্বে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসার আহ্বান জানাই। গণতন্ত্রকে আর হরণ করবেন না, জনগণের অধিকারকে নষ্ট করবেন না। বিএনপি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিশ্বাসী। যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় এবং কিছু রাজনৈতিক দল অসৎ উদ্দেশ্যে গলযোগ করার চেষ্টা করছে, তাদেরকে জনগণ ক্ষমা করবে না।’

এসময় তিনি প্রয়োজনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট হতে পারে বলে মন্তব্য করেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন অস্থিতিশীল করার চেষ্টার পরিণাম ভালো হবে না। একটি দল দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে ঘোলা করার চেষ্টা করছে। আজকের শোকাহত পরিবেশে আপনাদের বলতে চাই, এ সরকার যদি ব্যর্থ হয় তার পরিণাম ভয়াবহ হবে। তবে যদি নির্বাচন নিয়ে কোনো টালবাহানা করেন, তবে তার পরিণাম হবে ভয়াবহ। বিএনপি জানে কিভাবে নির্বাচন আদায় করতে হয়।’

ফখরুল আরও বলেন, ‘ড. ইউনূসের সরকার একটি ঐকমত্য কমিশনার মাধ্যমে জুলাই সনদে স্বাক্ষর সম্পন্ন করেছে। কিন্তু সেই স্বাক্ষরের পর উপদেষ্টা পরিষদ একটি ব্রিফিংয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে একমত পোষণের জন্য আলটিমেটাম দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে বলে মনে করেন উপদেষ্টারা, কিন্তু তা সঠিক নয়। আমরা অনেক সহ্য করেছি। বিএনপি ভেসে আসা কোনো রাজনৈতিক দল নয়। আমরা মানুষের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে রাজনীতি করি। রাজনৈতিক দলগুলোকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার পরিণাম ভালো হবে না।’

প্রয়াত তরিকুল ইসলামকে স্মরণ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ফ্যাসিস্টের বিয়োগাত্মক বিদায় তিনি দেখে যেতে পারলেন না। তার বিদায়ে জাতি একজন দেশপ্রেমিক নেতাকে হারিয়েছে। তিনি একটি ইনস্টিটিউট ছিলেন। ছাত্র জীবন থেকে তিনি সংগ্রাম করেছেন, জেল খেটেছেন, নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। কিন্তু জনগণকে ছেড়ে যাননি। তার মতো নেতার এখন খুব প্রয়োজন। তরিকুল ইসলামের মতো নেতা বারবার জন্মায় না। তাই তার জীবনী লেখা দরকার। যা থেকে পরবর্তী প্রজন্ম শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে।’

মরহুম তরিকুল ইসলামকে নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজীবন সংগ্রামী কিংবদন্তিতুল্য নেতা মরহুম তরিকুল ইসলাম সারাজীবন মা, মাটি ও মানুষের জন্য রাজনীতি করেছেন। তিনি যশোরের উন্নয়নে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। কোনো অন্যায় বা অনিয়মের সঙ্গে আপোষ করেননি। শত অত্যাচার সহ্য করেও আদর্শের প্রতি ছিলেন অবিচল। তিনি ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের পতনের জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছেন। কিন্তু আজ সেই স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে তিনি আমাদের মাঝে নেই। আজকের বাংলাদেশে তার খুব বেশি প্রয়োজন ছিল। তিনি সারাজীবন আপনাদের জন্য, যশোর এবং দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের উন্নয়নে কাজ করেছেন।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘তরিকুল ইসলাম একজন ক্ষণজন্মা নেতা ছিলেন। তার মতো ব্যক্তিরা দেশে বারবার জন্মায় না। যুগে যুগে ক্ষণে ক্ষণে তরিকুল ইসলামের মতো নেতার জন্ম হয়। আজকের স্মরণসভা থেকে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।’

স্মরণসভায় প্রয়াত তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম, ছেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত উপস্থিত ছিলেন।

স্মরণসভায় তিনি যশোরের ৫টি সংসদীয় আসনের বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন এবং তাদের পক্ষে ভোট চান।

অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, সাবেক দফতর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব, ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবিরা সুলতানা মুন্নী, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আবুল হোসেন আজাদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, যশোর বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইসহক, যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিজানুর রহমান খান, নগর সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ, থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন, ইমাম পরিষদের সহসভাপতি মাওলানা আব্দুল মান্নান, তানিয়া রহমান সুমি, আবুল হাসান জহির, আসাদুজ্জামান মিন্টু, দীপঙ্কর দাস রতন, জেলা যুবদলের আহবায়ক এম তমাল আহমেদ প্রমুখ। স্মরণসভায় দোয়া পরিচালনা করেন মুফতি মাওলানা আমানুল্লাহ্ কাসেমী।

Please Share This Post in Your Social Media

আমরা যদি মাঠে নামি রাজনৈতিক হিসাব পাল্টে যাবে: মির্জা ফখরুল

রাজনীতি ডেস্ক
Update Time : ০৯:২১:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫

বিএনপিকে অবজ্ঞা করলে ফল ভালো হবে না বলে মন্তব্য করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিএনপি ভেসে আসা দল নয়। বিএনপিকে খাটো করে দেখবেন না। আমরা যদি মাঠে নামি তাহলে রাজনৈতিক বিষয়গুলো ভিন্নভাবে আসবে।’

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে যশোর টাউন হল ময়দানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু।

মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে বলে মনে করেন উপদেষ্টারা।

কিন্তু তাদের এই ধারনা সঠিক নয়। আমরা অনেক সহ্য করেছি। বিএনপি ভেসে আসা কোনো রাজনৈতিক দল নয়। আমরা এদেশের মানুষের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে দেশে রাজনীতি করি। ফলে আমাদের ফেলনা মনে করলে ভুল করবেন।

তিনি বলেন, ‘অনেক রক্তের বিনিময়ে ফ্যাসিস্টের হাত থেকে স্বাধীন হয়েছি। সুযোগ হয়েছে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরে যাওয়ার। এ সুযোগ কোনো মহলের চক্রান্ত বা ষড়যন্ত্রের কারণে বিনষ্ট হতে দিতে পারি না।’

রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দয়া করে পানি ঘোলা করার চেষ্টা করবেন না। দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাবেন না। আপনাদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের এ প্রক্রিয়া জনগণ মেনে নেবে না।’

উপদেষ্টা পরিষদ পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছে

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‌‘তারা ঐকমত্যের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সাতদিন সময় দিয়েছেন। কিন্তু রাজনৈতিক দল তো হাতের খেলনার মতো নয়। সংস্কার কমিশনের সব সভায় আমরা গিয়েছি। মতামত দিয়েছি। যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে। সেগুলো হয়নি, সেগুলো পরবর্তী পার্লামেন্টে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু তা না করে তারা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছেন। দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’

জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট হবে, এর আগে নয়

বিএনপি মহাসচিব জোর দিয়ে বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট হবে, এর আগে নয়। টালবাহানা না করে দ্রুত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করুন, অন্যথায় সরকার ব্যর্থ হবে।’

ফখরুল আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে কোনো গণভোট করা ঠিক হবে না। যদি তা হয়, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। আমি ড. ইউনূস সরকারকে অবিলম্বে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসার আহ্বান জানাই। গণতন্ত্রকে আর হরণ করবেন না, জনগণের অধিকারকে নষ্ট করবেন না। বিএনপি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিশ্বাসী। যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় এবং কিছু রাজনৈতিক দল অসৎ উদ্দেশ্যে গলযোগ করার চেষ্টা করছে, তাদেরকে জনগণ ক্ষমা করবে না।’

এসময় তিনি প্রয়োজনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট হতে পারে বলে মন্তব্য করেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন অস্থিতিশীল করার চেষ্টার পরিণাম ভালো হবে না। একটি দল দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে ঘোলা করার চেষ্টা করছে। আজকের শোকাহত পরিবেশে আপনাদের বলতে চাই, এ সরকার যদি ব্যর্থ হয় তার পরিণাম ভয়াবহ হবে। তবে যদি নির্বাচন নিয়ে কোনো টালবাহানা করেন, তবে তার পরিণাম হবে ভয়াবহ। বিএনপি জানে কিভাবে নির্বাচন আদায় করতে হয়।’

ফখরুল আরও বলেন, ‘ড. ইউনূসের সরকার একটি ঐকমত্য কমিশনার মাধ্যমে জুলাই সনদে স্বাক্ষর সম্পন্ন করেছে। কিন্তু সেই স্বাক্ষরের পর উপদেষ্টা পরিষদ একটি ব্রিফিংয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে একমত পোষণের জন্য আলটিমেটাম দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে বলে মনে করেন উপদেষ্টারা, কিন্তু তা সঠিক নয়। আমরা অনেক সহ্য করেছি। বিএনপি ভেসে আসা কোনো রাজনৈতিক দল নয়। আমরা মানুষের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে রাজনীতি করি। রাজনৈতিক দলগুলোকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার পরিণাম ভালো হবে না।’

প্রয়াত তরিকুল ইসলামকে স্মরণ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ফ্যাসিস্টের বিয়োগাত্মক বিদায় তিনি দেখে যেতে পারলেন না। তার বিদায়ে জাতি একজন দেশপ্রেমিক নেতাকে হারিয়েছে। তিনি একটি ইনস্টিটিউট ছিলেন। ছাত্র জীবন থেকে তিনি সংগ্রাম করেছেন, জেল খেটেছেন, নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। কিন্তু জনগণকে ছেড়ে যাননি। তার মতো নেতার এখন খুব প্রয়োজন। তরিকুল ইসলামের মতো নেতা বারবার জন্মায় না। তাই তার জীবনী লেখা দরকার। যা থেকে পরবর্তী প্রজন্ম শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে।’

মরহুম তরিকুল ইসলামকে নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজীবন সংগ্রামী কিংবদন্তিতুল্য নেতা মরহুম তরিকুল ইসলাম সারাজীবন মা, মাটি ও মানুষের জন্য রাজনীতি করেছেন। তিনি যশোরের উন্নয়নে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। কোনো অন্যায় বা অনিয়মের সঙ্গে আপোষ করেননি। শত অত্যাচার সহ্য করেও আদর্শের প্রতি ছিলেন অবিচল। তিনি ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের পতনের জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছেন। কিন্তু আজ সেই স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে তিনি আমাদের মাঝে নেই। আজকের বাংলাদেশে তার খুব বেশি প্রয়োজন ছিল। তিনি সারাজীবন আপনাদের জন্য, যশোর এবং দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের উন্নয়নে কাজ করেছেন।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘তরিকুল ইসলাম একজন ক্ষণজন্মা নেতা ছিলেন। তার মতো ব্যক্তিরা দেশে বারবার জন্মায় না। যুগে যুগে ক্ষণে ক্ষণে তরিকুল ইসলামের মতো নেতার জন্ম হয়। আজকের স্মরণসভা থেকে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।’

স্মরণসভায় প্রয়াত তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম, ছেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত উপস্থিত ছিলেন।

স্মরণসভায় তিনি যশোরের ৫টি সংসদীয় আসনের বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন এবং তাদের পক্ষে ভোট চান।

অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, সাবেক দফতর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব, ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবিরা সুলতানা মুন্নী, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আবুল হোসেন আজাদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, যশোর বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইসহক, যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিজানুর রহমান খান, নগর সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ, থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন, ইমাম পরিষদের সহসভাপতি মাওলানা আব্দুল মান্নান, তানিয়া রহমান সুমি, আবুল হাসান জহির, আসাদুজ্জামান মিন্টু, দীপঙ্কর দাস রতন, জেলা যুবদলের আহবায়ক এম তমাল আহমেদ প্রমুখ। স্মরণসভায় দোয়া পরিচালনা করেন মুফতি মাওলানা আমানুল্লাহ্ কাসেমী।