আমরা আবার যাব, হাজারটা জাহাজ যাবে গাজায়: শহিদুল আলম

- Update Time : ০৭:২৯:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
- / ১৮৬ Time View
ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে বন্দী অবস্থা থেকে দেশে ফিরে আসার পর আবারও গাজার দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে সেখানে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম। শনিবার ভোরে ইসরায়েলের আটক দশা থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফেরেন শহিদুল আলম। নিজের অভিজ্ঞতা জানাতে বিকেলে রাজধানীর দৃক পাঠ ভবনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তিনি।
ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মমতার বর্ণনা সেখানে তিনি যখন দিচ্ছিলেন তখন এক সাংবাদিক তাঁর পরবর্তী পরিকল্পনা জানতে চান। জবাবে শহিদুল আলম বলেন, ‘অসাধারণ কিছু ব্যক্তি একসঙ্গে হওয়ার কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা এখন আন্তর্জাতিকভাবে একটা নেটওয়ার্ক দাঁড় করাব। যেহেতু গ্লোবাল লিডাররা করবে না, আমরা অ্যাকটিভিস্টরা কীভাবে করতে পারি সেই লড়াইয়ের প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি।… একটা ব্লুপ্রিন্ট আমরা করে রেখেছি এবং আমরা ফেরার আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আবার আমরা যাব এবং হাজারটা জাহাজ যাবে।’
বন্দী থাকার সময়কার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেছেন, তাঁদের ওপর মানসিক অত্যাচার বেশি করা হয়েছে। জেলের ভেতরে আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা হয়েছে। এমনকি হামাসের সমর্থক দাবি করে তাঁদের একজন সহযাত্রীকে গুলি করে মারারও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আটক করে জাহাজ থেকে নামানোর পর তাঁদের ওপর অনেক ধরনের নির্যাতন করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে মানসিক নির্যাতন বেশি করা হয়েছে। তিনি বলেন, তাঁদের হাত পেছনে নিয়ে বেঁধে যেখানে হাঁটুমুড়ে বসানো হয়েছিল, সেখানে ইসরায়েলি বাহিনী আগে থেকে মূত্রত্যাগ করেছিল। এরপর তাঁর বাংলাদেশি পাসপোর্ট ইসরায়েলি বাহিনী ফেলে দেয়। তিনি যতবার সেটি তুলেছেন ততবার তাঁর ওপর চড়াও হয়েছে। সেসময় নিজেদের মধ্যে কথা বলায় অন্য দুজন সহযাত্রীকে মেশিনগানের ব্যারেল দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শহিদুল আলম জানান, মরুভূমির মধ্যে ইসরায়েলের সবচেয়ে গোপনীয় কারাগারে তাঁদের রাখা হয়। সেখানে অন্য জাহাজ থেকে আটক হওয়া আরেকজন সহযাত্রী তাঁকে জানান, ইসরায়েলি বাহিনী ওই ব্যক্তিকে আটক করার পর বলেছিল ‘তুমি হামাসের এজেন্ট, ভেতরে নিয়ে তোমাকে গুলি করা হবে।’ তিনি বলেন, কারাগারে তাঁরা অনশন করেছিলেন। কোনো খাবার খাননি। তবে শারীরিক দুর্বলতার কারণে কয়েকজন খাবার খেয়েছেন। আড়াই দিনে তাঁদের মাত্র এক প্লেট খাবার দেওয়া হয়। তাঁদের যেখানে শুতে দেওয়া হয়েছিল, তা ছিল লোহার, শৌচাগারগুলোর অবস্থাও ছিল শোচনীয়। তিনি আরও বলেন, গভীর রাতে হঠাৎ করে ইসরায়েলি বাহিনী মেশিনগান নিয়ে সেলের মধ্যে ঢুকে যেত। তারা জোরে আওয়াজ করত, চিৎকার করে দাঁড়ানো বা অন্য আদেশ দিত এবং আতঙ্ক তৈরি করার চেষ্টা করত।