ঢাকা ০২:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
স্ত্রী ও দুই সন্তানকে গলা কেটে হত্যা

‘আপন ভাই ক্যামনে আমার সংসার তছনছ কইরা দিলো!’

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
  • Update Time : ১১:৩৬:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
  • / ৫৩ Time View

ছবিঃ সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় নির্মমভাবে খুন হয়েছেন এক মা ও তার দুই শিশু সন্তান। সোমবার সকালে ভালুকা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের টিঅ্যান্ডটি রোড এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে মা ও দুই সন্তানের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতরা হলেন— মা ময়না আক্তার (২৫), মেয়ে রাইসা (৭) ও ছেলে নিরব (২)।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। তবে নিহতের স্বামী রফিকুল ইসলাম এ হত্যাকাণ্ডের জন্য তার আপন ছোট ভাই নজরুল ইসলামকে দায়ী করেছেন। ঘটনার পর থেকে নজরুল পলাতক রয়েছেন।

ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ূন কবির জানান, সকালে তিনজনের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।

তিনি আরও জানান, নিহতের ভাই বাদী হয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তা‌রের চেষ্টা চলছে।

জানা যায়, সকাল ৯টার দিকে কর্মস্থল থেকে রফিকুল ইসলাম বাসায় গিয়ে দেখেন দরজায় তালা ঝুলানো। এ সময় ডাকাডাকি করা হলেও ঘরের ভেতর থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। পরে তালা ভেঙে ভেতরে গিয়ে দেখেন তার স্ত্রী ও দুই সন্তানের গলাকাটা মরদেহ খাটের উপর পড়ে আছে। খবর পেয়ে ভালুকা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

রফিকুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ঘটনার আগের রাত ৭টা ৪০ মিনিটে নাইট শিফটের ডিউটিতে যাই। বের হওয়ার সময় বউকে বলে যাই বাচ্চাগুলোকে ঘুম পাড়ানোর জন্য। বাচ্চাগুলো ঘুমায় না। বের হওয়ার সময় আমার পিছুপিছু চলে আসে। পরে বাচ্চাদের ঘরে দিয়ে আমি ডিউটিতে চলে আসি। হঠাৎ তাদের কথা মনে হলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফোন দেই বাসায়। তখন ফোন বন্ধ পাই বাচ্চার মায়ের। পরে ছোট ভাইয়ের নাম্বারে কল দিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করি সে কোথায় আছে। সে জানায় বাসাতেই আছে। পরের তার মোবাইল দিয়ে বাচ্চার মায়ের সঙ্গে কথা বলি। বাচ্চার মাকে জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, মোবাইল বন্ধ না, ভিডিও দেখছিল। এরপর তাদের ঘুমিয়ে পড়ার কথা বলে ফোন রেখে দেই।

রফিকুল জানান, পরদিন সকালে ডিউটি শেষ করে ৮টার দিকে অফিস থেকে বের হন। এরপর সেলুনে গিয়ে চুল কাটান। বাসায় এসে দেখেন, বাইরে থেকে তালা দেয়া। অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পর কোনো সাড়া না পেয়ে বাড়িওয়ালা ও প্রতিবেশীর সহায়তায় তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। ঘরে ঢুকেই স্ত্রীর ও দুই সন্তানের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমার আপন ছোট ভাই নজরুল আগে থেকেই হত্যা মামলার আসামি ছিল। আড়াই মাস আগে অনেক কষ্ট করে টাকা জোগাড় করে তাকে আমি জেল থেকে ছাড়িয়ে আনি। এরপর সে এক মাস ধরে আমাদের বাসায় থাকতো। আমার ভাই ছাড়া তাদের আর কেউ হত্যা করেনি। আমার ছেলেটাকে কীভাবে হত্যা করল—তা ভাষায় বোঝানো যাবে না। আমার মেয়ের গলাটা পুরো কেটে ফেলা হয়েছে। সে ছাড়া এই কাজ কেউ করতে পারবে না। এখন সে পলাতক। সে যদি না মারতো তাহলে পালাবে কেন? আপন ভাই হইয়া সে ক্যামনে আমার সংসার তছনছ কইরা দিলো!

নিহত ময়নার খালাতো বোন সালমা আক্তার বলেন, দুই মাস আগে ময়না ভালুকায় আসে। আমাকে কয়েকবার বলেছিল দেখা করতে, কিছু কথা বলবে। আসি আসি করেও আর যাওয়া হয়নি। সে আমাকে জানিয়েছিল, তার অনেক কথা আছে বলার। আগে যদি আসতাম তাহলে তার কাছ থেকে সবকিছু জানতে পারতাম। তার স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বরাবরই ভালো ছিল। তবে দেবর নজরুল কিছুদিন ধরে বাসায় থাকতো। এখন সে পলাতক। যদি সে দোষী না হতো, তাহলে পালাতো কেন? বাচ্চাগুলো দেখতে কত সুন্দর ছিল। ওদের গলায় কীভাবে দা ধরতে পারল নজরুল? তার কি একবারও হাত কাঁপেনি?”

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রফিকুল ইসলাম নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের কীর্তনখোলা গ্রামের শুলতু মিয়ার ছেলে। তিনি স্ত্রী, দুই সন্তান ও ছোট ভাই নজরুল ইসলামকে নিয়ে ভালুকা শহরের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। তিনি রাসেল স্পিনিং মিলে চাকরি করতেন। রাতে তিনি নাইট শিফটে ডিউটি করার জন্য কারখানায় অবস্থান করেছিলেন।

রফিকুল ও নজরুলের চাচাতো ভাই মজিবুর রহমান বলেন, তাদের মায়ের মৃত্যু হয়েছে ছোটবেলায়। বাবা মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ঘোরাফেরা করেন। দুই ভাই ছোটবেলায় বাড়ি ছেড়ে কর্মজীবনে বাড়ি ছেড়ে চলে আসে। তাদের মানুষ করেছেন এক ফুফু, যিনি ভিক্ষা করতেন। এখন নিহতদের দাফনের জন্য কোনো নিজস্ব জায়গা নেই। যদি মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়, আমরা এলাকাবাসী মিলে কবরের জায়গার ব্যবস্থা করবো।

বাসাটির মালিক হাইয়ুম হাসান জানান, দেড় মাস আগে রফিকুল বাসা ভাড়া নেন। একটি রুমে পরিবার নিয়ে থাকতেন এবং আরেক রুমে ছোট ভাই নজরুল থাকতেন। তাদের মধ্যে মনোমালিন্য কখনও লক্ষ্য করেননি তিনি।

ময়মনসিংহের ভালুকা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনতোষ সাহা বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তের আগে বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না।

ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভাব অনটনের সংসারে রফিকুলের সঙ্গে ভরণ পোষণ ও খাওয়া দাওয়া নিয়ে পারিবারিক সমস্যা চলছিল। দেড় মাস আগে অন্য একটি হত্যা মামলায় ৪০ হাজার টাকা সুদে ঋণ নিয়ে নজরুলকে মুক্ত করেন তার ভাই।

তিনি আরও বলেন, ধারণা করছি নজরুল তার ভাবী ও দুই বাচ্চাকে হত্যা করে সকাল ৬টায় ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। সে যেই গ্যারেজ থেকে অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে চালাতো আজ সকালেও সেখান থেকে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে যায়। সেখানে তার মোবাইল ফোনটিও বিক্রি করার চেষ্টা করে। তাকে গ্রেপ্তা‌র করতে পারলে রহস্যের জট খুলে যাবে।

বিছানায় পড়ে ছিল মা, মেয়ে ও ছেলের গলা কাটা লাশ

Please Share This Post in Your Social Media

স্ত্রী ও দুই সন্তানকে গলা কেটে হত্যা

‘আপন ভাই ক্যামনে আমার সংসার তছনছ কইরা দিলো!’

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
Update Time : ১১:৩৬:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫

ময়মনসিংহের ভালুকায় নির্মমভাবে খুন হয়েছেন এক মা ও তার দুই শিশু সন্তান। সোমবার সকালে ভালুকা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের টিঅ্যান্ডটি রোড এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে মা ও দুই সন্তানের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতরা হলেন— মা ময়না আক্তার (২৫), মেয়ে রাইসা (৭) ও ছেলে নিরব (২)।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। তবে নিহতের স্বামী রফিকুল ইসলাম এ হত্যাকাণ্ডের জন্য তার আপন ছোট ভাই নজরুল ইসলামকে দায়ী করেছেন। ঘটনার পর থেকে নজরুল পলাতক রয়েছেন।

ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ূন কবির জানান, সকালে তিনজনের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।

তিনি আরও জানান, নিহতের ভাই বাদী হয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তা‌রের চেষ্টা চলছে।

জানা যায়, সকাল ৯টার দিকে কর্মস্থল থেকে রফিকুল ইসলাম বাসায় গিয়ে দেখেন দরজায় তালা ঝুলানো। এ সময় ডাকাডাকি করা হলেও ঘরের ভেতর থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। পরে তালা ভেঙে ভেতরে গিয়ে দেখেন তার স্ত্রী ও দুই সন্তানের গলাকাটা মরদেহ খাটের উপর পড়ে আছে। খবর পেয়ে ভালুকা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

রফিকুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ঘটনার আগের রাত ৭টা ৪০ মিনিটে নাইট শিফটের ডিউটিতে যাই। বের হওয়ার সময় বউকে বলে যাই বাচ্চাগুলোকে ঘুম পাড়ানোর জন্য। বাচ্চাগুলো ঘুমায় না। বের হওয়ার সময় আমার পিছুপিছু চলে আসে। পরে বাচ্চাদের ঘরে দিয়ে আমি ডিউটিতে চলে আসি। হঠাৎ তাদের কথা মনে হলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফোন দেই বাসায়। তখন ফোন বন্ধ পাই বাচ্চার মায়ের। পরে ছোট ভাইয়ের নাম্বারে কল দিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করি সে কোথায় আছে। সে জানায় বাসাতেই আছে। পরের তার মোবাইল দিয়ে বাচ্চার মায়ের সঙ্গে কথা বলি। বাচ্চার মাকে জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, মোবাইল বন্ধ না, ভিডিও দেখছিল। এরপর তাদের ঘুমিয়ে পড়ার কথা বলে ফোন রেখে দেই।

রফিকুল জানান, পরদিন সকালে ডিউটি শেষ করে ৮টার দিকে অফিস থেকে বের হন। এরপর সেলুনে গিয়ে চুল কাটান। বাসায় এসে দেখেন, বাইরে থেকে তালা দেয়া। অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পর কোনো সাড়া না পেয়ে বাড়িওয়ালা ও প্রতিবেশীর সহায়তায় তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। ঘরে ঢুকেই স্ত্রীর ও দুই সন্তানের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমার আপন ছোট ভাই নজরুল আগে থেকেই হত্যা মামলার আসামি ছিল। আড়াই মাস আগে অনেক কষ্ট করে টাকা জোগাড় করে তাকে আমি জেল থেকে ছাড়িয়ে আনি। এরপর সে এক মাস ধরে আমাদের বাসায় থাকতো। আমার ভাই ছাড়া তাদের আর কেউ হত্যা করেনি। আমার ছেলেটাকে কীভাবে হত্যা করল—তা ভাষায় বোঝানো যাবে না। আমার মেয়ের গলাটা পুরো কেটে ফেলা হয়েছে। সে ছাড়া এই কাজ কেউ করতে পারবে না। এখন সে পলাতক। সে যদি না মারতো তাহলে পালাবে কেন? আপন ভাই হইয়া সে ক্যামনে আমার সংসার তছনছ কইরা দিলো!

নিহত ময়নার খালাতো বোন সালমা আক্তার বলেন, দুই মাস আগে ময়না ভালুকায় আসে। আমাকে কয়েকবার বলেছিল দেখা করতে, কিছু কথা বলবে। আসি আসি করেও আর যাওয়া হয়নি। সে আমাকে জানিয়েছিল, তার অনেক কথা আছে বলার। আগে যদি আসতাম তাহলে তার কাছ থেকে সবকিছু জানতে পারতাম। তার স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বরাবরই ভালো ছিল। তবে দেবর নজরুল কিছুদিন ধরে বাসায় থাকতো। এখন সে পলাতক। যদি সে দোষী না হতো, তাহলে পালাতো কেন? বাচ্চাগুলো দেখতে কত সুন্দর ছিল। ওদের গলায় কীভাবে দা ধরতে পারল নজরুল? তার কি একবারও হাত কাঁপেনি?”

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রফিকুল ইসলাম নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের কীর্তনখোলা গ্রামের শুলতু মিয়ার ছেলে। তিনি স্ত্রী, দুই সন্তান ও ছোট ভাই নজরুল ইসলামকে নিয়ে ভালুকা শহরের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। তিনি রাসেল স্পিনিং মিলে চাকরি করতেন। রাতে তিনি নাইট শিফটে ডিউটি করার জন্য কারখানায় অবস্থান করেছিলেন।

রফিকুল ও নজরুলের চাচাতো ভাই মজিবুর রহমান বলেন, তাদের মায়ের মৃত্যু হয়েছে ছোটবেলায়। বাবা মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ঘোরাফেরা করেন। দুই ভাই ছোটবেলায় বাড়ি ছেড়ে কর্মজীবনে বাড়ি ছেড়ে চলে আসে। তাদের মানুষ করেছেন এক ফুফু, যিনি ভিক্ষা করতেন। এখন নিহতদের দাফনের জন্য কোনো নিজস্ব জায়গা নেই। যদি মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়, আমরা এলাকাবাসী মিলে কবরের জায়গার ব্যবস্থা করবো।

বাসাটির মালিক হাইয়ুম হাসান জানান, দেড় মাস আগে রফিকুল বাসা ভাড়া নেন। একটি রুমে পরিবার নিয়ে থাকতেন এবং আরেক রুমে ছোট ভাই নজরুল থাকতেন। তাদের মধ্যে মনোমালিন্য কখনও লক্ষ্য করেননি তিনি।

ময়মনসিংহের ভালুকা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনতোষ সাহা বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তের আগে বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না।

ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভাব অনটনের সংসারে রফিকুলের সঙ্গে ভরণ পোষণ ও খাওয়া দাওয়া নিয়ে পারিবারিক সমস্যা চলছিল। দেড় মাস আগে অন্য একটি হত্যা মামলায় ৪০ হাজার টাকা সুদে ঋণ নিয়ে নজরুলকে মুক্ত করেন তার ভাই।

তিনি আরও বলেন, ধারণা করছি নজরুল তার ভাবী ও দুই বাচ্চাকে হত্যা করে সকাল ৬টায় ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। সে যেই গ্যারেজ থেকে অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে চালাতো আজ সকালেও সেখান থেকে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে যায়। সেখানে তার মোবাইল ফোনটিও বিক্রি করার চেষ্টা করে। তাকে গ্রেপ্তা‌র করতে পারলে রহস্যের জট খুলে যাবে।

বিছানায় পড়ে ছিল মা, মেয়ে ও ছেলের গলা কাটা লাশ