ঢাকা ১২:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫, ১৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে বাধা দিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো: উপদেষ্টা আসিফ

নওরোজ ডেস্ক
  • Update Time : ১০:২২:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৮৭ Time View

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে যখন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কথা বলি, তখন রাজনৈতিক দলগুলো তাদের বক্তৃতায় সেটি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত ‘নবীন চোখে গণ-অভ্যুত্থান ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় আসিফ মাহমুদ এ কথা বলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এ সভার আয়োজন করে।

আসিফ মাহমুদ বলেন, আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করছি। আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সফল হতে পারিনি। এমন একটা সময়ে আমরা দায়িত্ব পেয়েছি যখন বাংলাদেশ একটা ধ্বংসযজ্ঞের মতো পরিস্থিতিতে ছিল। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে আমরা অনেকগুলো উদ্যোগ নিয়েছি এবং নিচ্ছি। আন্দোলনে শতাধিক শিক্ষার্থীর চোখের মধ্যে ছররা গুলি ঢুকেছি। এর মধ্যে প্রায় পঞ্চাশজনের চোখের ভেতর থেকে সফলভাবে স্প্রিন্টার বের করা হয়েছে। ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা করা হয়নি। তখন সরকারী অনেক মেডিকেল কলেজে বলেও দেওয়া হতো যাতে তাদের চিকিৎসা না দেওয়া হয়। অনেকেই তখন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। সেখানে অনেকে জমি বিক্রি করেও চিকিৎসা খরচ চালিয়েছে।

আলোচনা সভায় সোশ্যাল অ্যাকটিভিস্ট সাইয়েদ আবদুল্লাহ বলেন, এই গণ–অভ্যুত্থানের পরে অনেক সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। কিন্তু একটা জিনিস স্পষ্ট, প্রত্যেকেই এখন নিজেদের নাগরিক ভাবে। সংবিধান সংস্কার কমিটিতে আমি একটা কথা বলেছি, বাংলাদেশের অফিশিয়াল নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ থাকতে পারে না। কারণ, যে মুহূর্তে এই শব্দের ভেতরে প্রজা থাকবে, তখনই আমাদের মনের ভেতরে একটা ভয় কাজ করে, কেউ না কেউ বোধ হয় রাজা আছে। নতুন বাংলাদেশ আমি কোনো রাজা দেখতে চাই না, আমি দেখতে চাই এই দেশের মালিক এই দেশের জনগণ।

আইনজীবী মানজুর আল মতিন বলেন, আমরা এমন একটা ব্যবস্থা চাই, যেখানে জবাবদিহি থাকবে। রাষ্ট্র যারা চালাবেন তারা আমাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য থাকবেন। আমরা এমন একটা ব্যবস্থা চাই, যেখানে আমরা বিচার পাবো। আমাদের ধর্ম আলাদা হতে পারে, জাতিগত পরিচয় আলাদা হতে পারে, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা হতে পারে; কিন্তু এই মৌলিক প্রশ্নগুলোতে আমরা সবাই এক।

সভায় আরও বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, অধ্যাপক মোহাম্মদ জামালউদ্দিন, অধ্যাপক মো. লুৎফুল এলাহী, অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য ফয়সাল মাহমুদ প্রমুখ। আলোচনা শেষে বিপ্লবী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় গান পরিবেশনা করেন র‍্যাপার হান্নান।

নওরোজ/এসএইচ

Please Share This Post in Your Social Media

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে বাধা দিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো: উপদেষ্টা আসিফ

নওরোজ ডেস্ক
Update Time : ১০:২২:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে যখন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কথা বলি, তখন রাজনৈতিক দলগুলো তাদের বক্তৃতায় সেটি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত ‘নবীন চোখে গণ-অভ্যুত্থান ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় আসিফ মাহমুদ এ কথা বলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এ সভার আয়োজন করে।

আসিফ মাহমুদ বলেন, আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করছি। আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সফল হতে পারিনি। এমন একটা সময়ে আমরা দায়িত্ব পেয়েছি যখন বাংলাদেশ একটা ধ্বংসযজ্ঞের মতো পরিস্থিতিতে ছিল। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে আমরা অনেকগুলো উদ্যোগ নিয়েছি এবং নিচ্ছি। আন্দোলনে শতাধিক শিক্ষার্থীর চোখের মধ্যে ছররা গুলি ঢুকেছি। এর মধ্যে প্রায় পঞ্চাশজনের চোখের ভেতর থেকে সফলভাবে স্প্রিন্টার বের করা হয়েছে। ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা করা হয়নি। তখন সরকারী অনেক মেডিকেল কলেজে বলেও দেওয়া হতো যাতে তাদের চিকিৎসা না দেওয়া হয়। অনেকেই তখন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। সেখানে অনেকে জমি বিক্রি করেও চিকিৎসা খরচ চালিয়েছে।

আলোচনা সভায় সোশ্যাল অ্যাকটিভিস্ট সাইয়েদ আবদুল্লাহ বলেন, এই গণ–অভ্যুত্থানের পরে অনেক সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। কিন্তু একটা জিনিস স্পষ্ট, প্রত্যেকেই এখন নিজেদের নাগরিক ভাবে। সংবিধান সংস্কার কমিটিতে আমি একটা কথা বলেছি, বাংলাদেশের অফিশিয়াল নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ থাকতে পারে না। কারণ, যে মুহূর্তে এই শব্দের ভেতরে প্রজা থাকবে, তখনই আমাদের মনের ভেতরে একটা ভয় কাজ করে, কেউ না কেউ বোধ হয় রাজা আছে। নতুন বাংলাদেশ আমি কোনো রাজা দেখতে চাই না, আমি দেখতে চাই এই দেশের মালিক এই দেশের জনগণ।

আইনজীবী মানজুর আল মতিন বলেন, আমরা এমন একটা ব্যবস্থা চাই, যেখানে জবাবদিহি থাকবে। রাষ্ট্র যারা চালাবেন তারা আমাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য থাকবেন। আমরা এমন একটা ব্যবস্থা চাই, যেখানে আমরা বিচার পাবো। আমাদের ধর্ম আলাদা হতে পারে, জাতিগত পরিচয় আলাদা হতে পারে, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা হতে পারে; কিন্তু এই মৌলিক প্রশ্নগুলোতে আমরা সবাই এক।

সভায় আরও বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, অধ্যাপক মোহাম্মদ জামালউদ্দিন, অধ্যাপক মো. লুৎফুল এলাহী, অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য ফয়সাল মাহমুদ প্রমুখ। আলোচনা শেষে বিপ্লবী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় গান পরিবেশনা করেন র‍্যাপার হান্নান।

নওরোজ/এসএইচ