অভিযোগ প্রমাণিত হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি অধ্যক্ষ মাহবুবার রহমান শাহ’র বিরুদ্ধে

- Update Time : ০৭:২৮:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
- / ২৯০ Time View
সময়মতো অফিস না করা,এনটিআরসির সনদপত্র ছাড়াই এবং মাষ্টার্স এর ভূয়া সনদের মাধ্যমে নিয়োগ , অর্থ আত্নসাৎ, প্রতিষ্ঠাকালীন কলেজের নাম পরিবর্তনসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলেও এখনো কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নে ড: আসাদুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুবার রহমান শাহ এর বিরুদ্ধে।
জানাগেছে, গত ২৭ আগস্ট -২০২৪ ইং তারিখে অধ্যক্ষ মাহবুবার রহমান শাহ এর বিরুদ্ধে এসকল অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন ওই এলাকার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সিহাব মিঞা।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এসকল অভিযোগ কিছু প্রমান পান। এরপর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রতিবেদন জমা দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট।
এদিকে প্রতিবেদনের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওই অধ্যক্ষকে শোকজ করেন। কিন্তু শোকজের জবাব সন্তসজনক না হওয়ায় অধ্যক্ষ মাহবুবার রহমান শাহ এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কলেজের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট কাগজ পাঠান তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী হক।
কিন্তু আজও সেই অধ্যক্ষের কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ নিয়ে এলাকাবাসীদের মধ্যে আলোচনা- সমালোচনার ঝড় ওঠেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানাযায়,২০০০ সালে মাগুড়া ইউনিয়নে মাগুড়া কলেজ নাম দিয়ে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় হইতে বর্তমান পর্যন্ত উপজেলায় সন্তোসজনক ফলাফল অর্জন সহ সুনামের সাথে শিক্ষাদান করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি ১৯ এপ্রিল ২০২০ সালে এমপিও ভূক্ত হয়। প্রতিষ্ঠানটি শুরু থেকেই মাগুড়া কলেজ নামে পরিচিত ছিল কিন্তু ২০২১ সালে কলেজটির নাম পরিবর্তন করে ডঃ আসাদুর রহমান কলেজ নামকরণ করা হয়। পরে ২০০৬ সালে সরকারী বিধি—বিধানকে তোয়াক্কা না করে কোন ধরনের অভিজ্ঞতা ছাড়াই জাল সনদে মাহবুবার রহমান শাহকে প্রতিষ্ঠানে প্রধান ও অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেন । উল্লেখ্য যে, ২০০৫ সালে এনটিআরসি কতৃক নিবন্ধন সনদের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু ২০০৬ সালে এনটিআরসির সনদপত্র ছাড়াই কিভাবে তিনি নিয়োগ পেয়েছেন এবং অন্যান্য প্রভাষক ও কর্মচারীদেরকে কিভাবে নিয়োগ দিয়েছেন এ নিয়ে প্রশ্ন জনসাধারণের মুখে। তার এ কারনে অধ্যক্ষের অদ্যবধি পর্যন্ত এমপিও সীটে নাম অন্তভূক্ত হয়নি।
আরো জানা যায়— অধ্যক্ষ নিয়োগের পর ৬/৭ জন প্রভাষককে মোট অংকের উৎকোচের দাবী করিলে নিয়োগ প্রাপ্ত প্রভাষকগণ তাহাতে অসম্মতি করলে তৎকালীন গর্ভনিং বডি সভাপতি ও অধ্যক্ষের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে সরকারী বিধি বহির্ভূত ভাবে তাদেরকে চাকুরীচ্যুত করেন এবং পরবর্তী সময়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ প্রদান করেন।
অধ্যক্ষ ও সাবেক গর্ভানিং বডির সভাপতি প্রভাবশালী ও ক্ষমতাবান হওয়ায় ২০০৬ সাল থেকে অদ্যবধি সময় পর্যন্ত তিনি মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহনের মাধ্যমে কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ দেন। সরকার কতৃক নির্ধারিত টিউশন ফি, কলেজের অভ্যন্তরীন টিউশন ফি সহ বিভিন্ন খাত হতে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্নসাৎ করে। এ কারনে অত্র এলাকার ছাত্র—জনতার মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগকারী মাহমুদুল হোসেনের সাথে কথা বলে জানা যায়— আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অধ্যক্ষের নানা অনিয়ম—দূর্নীতির বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ করেছি। সেটি তদন্ত করে প্রমান পেয়ে তদন্ত কারীরা তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে প্রতিবেদন প্রেক্ষিতে ইউএনও অধ্যক্ষ মাহবুবার রহমান শাহ এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষ এর নিকট কাগজ পাঠান। কিন্তু আজও তার কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
এবিষয়ে অধ্যক্ষ মাহবুবার রহমান শাহ্ এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন— আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে তদন্ত করে প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে। আবার নতুন করেও তদন্ত হয়েছে। এই বলে ফোন কেটে দেন।
সাবেক গর্ভানিং বডির সভাপতির সাথে যোগাযোগ করতে না পারায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা জানান— আমি নতুন এসেছি এ বিষয়ে জানা নেই। বিষয়টি জেনে তারপর ব্যবস্থা নেয়া হবে।