ঢাকা ১১:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
ঢাকায় যুক্ত হচ্ছে ৪০০ ইলেকট্রিক বাস! ছিনতাইকারীর কবল থেকে ইরানী দম্পতিকে উদ্ধার করলো সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা ক্যাম্প থাকলে স্থানীয়দের চাকরি থাকবে এটাই শেষ কথা! বৈছাআ ও বিএনপি নেতাদের সেনাবাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদ, রংপুরে ছুটে এলেন সারজিস দেশের ১৮ কোটি মানুষেরই পরিবেশ সচেতন হওয়া জরুরি – উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান টাকার বিনিময়ে ইরানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করছে ইসরায়েলিরা মেঘনায় ট্রলার ডুবিতে সাব পোস্টমাস্টারসহ ২জনের মৃত্যু, নিখোঁজ-২ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জনগণের সাথে আরও নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে – পানি সম্পদ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে জড়িয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ প্রকাশে নিন্দা ও প্রতিবাদ এনসিপি’র যুক্তরাজ্যে ই-সিগারেট বিক্রি নিষিদ্ধ
চাকরিচ্যুত শিক্ষক-জনতার মানববন্ধনে বক্তারা

অবিলম্বে শিক্ষকদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে

ইকবাল হোসাইন, উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৭:৪১:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
  • / ১০৮ Time View

রোহিঙ্গা শিক্ষকদের বহাল রেখে স্থানীয় শিক্ষকদের চাকরিচ্যুতের প্রতিবাদ কর্মসূচীর দ্ধিতীয় দিন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে আন্দোলনরত শিক্ষকরা। চাকরি ফিরিয়ে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

১ জুন সকাল থেকে উখিয়ার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাতে দাবী-দাওয়া সম্বলিত প্লেকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে একে-একে সমবেত হয় শিক্ষক-জনতা।

তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ পরিচালনাকারী কোনও এনজিও ও আন্তর্জাতিক সংস্থার গাড়ি প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

বিক্ষোভকারী শিক্ষকরা জানান, ব্র্যাক, কোডেক, ফ্রেন্ডশিপ, মুক্তি, কোস্ট ফাউন্ডেশন ও জেসিএফসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থা রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য পরিচালিত স্কুলগুলোতে স্থানীয় ও রোহিঙ্গা উভয় সম্প্রদায়ের শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছিল। তবে হঠাৎ করে ‘অর্থ সংকটের’ কারণ দেখিয়ে শুধু স্থানীয় ১২৫০ জন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়, যেখানে রোহিঙ্গা শিক্ষকরা বহাল থাকেন।

অভিযোগ রয়েছে, আরও প্রায় ৩ হাজার শিক্ষককে ছাঁটাইয়ের প্রস্তুতি চলছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষক মোহাম্মদ শামীম হোসেন ও সানিয়া আফরিন বলেন, রোহিঙ্গা শিক্ষকরা যদি কাজ করতে পারে, তাহলে আমরা কেন পারব না? অথচ শুধু আমাদেরই চাকরিচ্যুত করা হলো। এ বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নেব না।’

উখিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সরওয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, তহবিল সংকট থাকলে স্থানীয়দের বাদ দিয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম চালানো যৌক্তিক নয়। বরং শিক্ষা প্রকল্পই বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

এদিকে কক্সবাজার জেলা বিএনপি’র সভাপতি, সবেক হুইপ ও সাংসদ আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমানের সাথে একান্ত রুদ্ধদার বৈঠকে বসেন। যত দ্রুত সৃষ্ট সমস্যার সমাধানে ফলপ্রসু আলোচনা করেন। তবে কি সিদ্ধান্ত হয়েছে,এ সংবাদ লেখাকালিন জানা যায় নি।

এ বিষয়ে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ইউনিসেফের অর্থায়নে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এনজিও ক্যাম্পে শিক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে শিক্ষা প্রকল্পটি বন্ধ করার প্রক্রিয়া চলছে। এ বিষয়টি ইউসেফ চিঠি যোগে সরকারকে অবহিত করেছেন। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকল্প চালানোর অর্থ তাদের রয়েছে বলে চিঠিতে বলা হয়েছিল। এর অংশ হিসেবে কিছু সংখ্যক শিক্ষক চাকরিচ্যূত করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে যারা আন্দোলন করছে তারা ইতিমধ্যে তার সঙ্গে দেখা করেছেন। তাদেরকে বিষয়টি বিস্তারিত জানানোও হয়েছে।

জানতে চাইলে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, অর্থ সংকটের কারণে শিক্ষা প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে উর্ধ্বতন বরাবর অবহিত করা হচ্ছে বলে জানান।

এদিকে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন উখিয়ার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন পেশাজীবি ব্যক্তিবর্গ।উখিয়া শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, রোহিঙ্গাদের আমরা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আশ্রয় দিয়েছি। কথা ছিল তারা তাদের দেশে প্রত্যাবাসন হবে। এখন দেখছি, এনজিও কর্মকর্তারা তাদের ফায়দা হাসিলের জন্য রোহিঙ্গাদের ফিরে যেতে দিচ্ছে না।

Please Share This Post in Your Social Media

চাকরিচ্যুত শিক্ষক-জনতার মানববন্ধনে বক্তারা

অবিলম্বে শিক্ষকদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে

ইকবাল হোসাইন, উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
Update Time : ০৭:৪১:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

রোহিঙ্গা শিক্ষকদের বহাল রেখে স্থানীয় শিক্ষকদের চাকরিচ্যুতের প্রতিবাদ কর্মসূচীর দ্ধিতীয় দিন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে আন্দোলনরত শিক্ষকরা। চাকরি ফিরিয়ে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

১ জুন সকাল থেকে উখিয়ার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাতে দাবী-দাওয়া সম্বলিত প্লেকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে একে-একে সমবেত হয় শিক্ষক-জনতা।

তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ পরিচালনাকারী কোনও এনজিও ও আন্তর্জাতিক সংস্থার গাড়ি প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

বিক্ষোভকারী শিক্ষকরা জানান, ব্র্যাক, কোডেক, ফ্রেন্ডশিপ, মুক্তি, কোস্ট ফাউন্ডেশন ও জেসিএফসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থা রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য পরিচালিত স্কুলগুলোতে স্থানীয় ও রোহিঙ্গা উভয় সম্প্রদায়ের শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছিল। তবে হঠাৎ করে ‘অর্থ সংকটের’ কারণ দেখিয়ে শুধু স্থানীয় ১২৫০ জন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়, যেখানে রোহিঙ্গা শিক্ষকরা বহাল থাকেন।

অভিযোগ রয়েছে, আরও প্রায় ৩ হাজার শিক্ষককে ছাঁটাইয়ের প্রস্তুতি চলছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষক মোহাম্মদ শামীম হোসেন ও সানিয়া আফরিন বলেন, রোহিঙ্গা শিক্ষকরা যদি কাজ করতে পারে, তাহলে আমরা কেন পারব না? অথচ শুধু আমাদেরই চাকরিচ্যুত করা হলো। এ বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নেব না।’

উখিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সরওয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, তহবিল সংকট থাকলে স্থানীয়দের বাদ দিয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম চালানো যৌক্তিক নয়। বরং শিক্ষা প্রকল্পই বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

এদিকে কক্সবাজার জেলা বিএনপি’র সভাপতি, সবেক হুইপ ও সাংসদ আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমানের সাথে একান্ত রুদ্ধদার বৈঠকে বসেন। যত দ্রুত সৃষ্ট সমস্যার সমাধানে ফলপ্রসু আলোচনা করেন। তবে কি সিদ্ধান্ত হয়েছে,এ সংবাদ লেখাকালিন জানা যায় নি।

এ বিষয়ে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ইউনিসেফের অর্থায়নে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এনজিও ক্যাম্পে শিক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে শিক্ষা প্রকল্পটি বন্ধ করার প্রক্রিয়া চলছে। এ বিষয়টি ইউসেফ চিঠি যোগে সরকারকে অবহিত করেছেন। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকল্প চালানোর অর্থ তাদের রয়েছে বলে চিঠিতে বলা হয়েছিল। এর অংশ হিসেবে কিছু সংখ্যক শিক্ষক চাকরিচ্যূত করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে যারা আন্দোলন করছে তারা ইতিমধ্যে তার সঙ্গে দেখা করেছেন। তাদেরকে বিষয়টি বিস্তারিত জানানোও হয়েছে।

জানতে চাইলে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, অর্থ সংকটের কারণে শিক্ষা প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে উর্ধ্বতন বরাবর অবহিত করা হচ্ছে বলে জানান।

এদিকে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন উখিয়ার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন পেশাজীবি ব্যক্তিবর্গ।উখিয়া শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, রোহিঙ্গাদের আমরা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আশ্রয় দিয়েছি। কথা ছিল তারা তাদের দেশে প্রত্যাবাসন হবে। এখন দেখছি, এনজিও কর্মকর্তারা তাদের ফায়দা হাসিলের জন্য রোহিঙ্গাদের ফিরে যেতে দিচ্ছে না।