অবশেষে পরিস্কার সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কিনব্রিজ
- Update Time : ০৮:০৩:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ৪১৩২ Time View
সিলেটের ঐতিহ্যের প্রতিক কিনব্রিজ। ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় অনেক দিন ধরে এই ব্রিজ দিয়ে যানবাহন পারাপার বন্ধ। চলছে কেবল মোটরসাইকেল। আর এর সুযোগ নিয়েছেন নগরীর ক্ষুদ্র ও ভাসমান ব্যবসায়ীরা। কিনব্রিজ দখল করে তারা চালিয়ে যাচ্ছিলেন বাণিজ্য। তবে এবার তাদের কপাল পুড়েছে। ব্রিজটি থেকে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। সিলেটের নবাগত জেলা প্রশাসকের দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অভিযান চালানো হয় কিনব্রিজের উপর।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজা-ই রাফিসন সরকার ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে অভিযান চলে। এসময় কিনব্রিজের ব্যবসায়ীরা দ্রুত তাদের মালামাল নিয়ে কেটে পড়েন। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাই রাফিন সরকার জানান, হকারদের জন্য লালদিঘীরপাড় হকার্স মার্কেট প্রস্তুত আছে। যা ঘাটতি আছে আমরা তাও ঠিকঠাক করে দিচ্ছি। তাদের সেখানে বসতে হবে।
এদিকে, সিলেট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার মো. পারভেজ জানান, দুপুরের পর জেলা প্রশাসক সারোয়ার আলম কিনব্রিজ পরিদর্শন করেছেন। তিনি হকারদের ব্রিজ বা রাজপথ দখলের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি আরও জানান, লালদিঘীরপাড় হকার্স মার্কেটে যেতে সব হকারকে। সেটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত হতে সপ্তাহখানেক সময় লাগবে। এ সময়টাতে হকাররা ফুটপাতে বসতে পারবেন। রাজপথে নামলেই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীও সিসিক কর্মকর্তাদের নিয়ে কিনব্রিজ পরিদর্শন করেন। কিনব্রিজ সিলেটের ঐতিহ্যের প্রতিক হলেও সম্প্রতি ব্রিজটি রীতিমতো একটা বাজারে পরিণত হয়েছিল। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাছ তরি তরকারি থেকে শুরু করে কাপড় চোপড়, ঘড়ি, টুথপেস্ট, টুথব্রাশ, নিত্য ব্যবহার্য অন্যান্য পণ্য সামগ্রী, পেঁয়াজ মরিচসহ মসলা জাতীয় পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসতেন ছোটো ব্যবসায়ীরা। তাদের উচ্ছেদের ব্যাপারে দীর্ঘদিন থেকে জোর দাবি করছিলেন সচেতন নাগরিকবৃন্দ। তবে তা আর হয়ে উঠছিলনা।
১৯৩৩ সালে নির্মিত হয় ১ হাজার ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের ও ১৮ ফুট প্রস্থের কিনব্রিজ। এটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় ১৯৩৬ সালে। ভারতের আসাম প্রদেশের তৎকালীন গভর্নর মাইকেল কিনের নামেই কিনব্রিজ হিসেবে নামকরণ করা হয়। লোহার দিয়ে লাল ধনুকের মতো বাঁকানো এই সেতুটি পর্যটকদের কাছেও আকর্ষনীয়। এর আগে ২০১৯ সালে ঐতিহ্যের এই সেতুটিকে সংরক্ষণ করতে এই সেতু দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুসারে ওই বছরের ৩১ আগস্ট মধ্য রাতে কিনব্রিজের উভয় প্রবেশপথে লোহার বেষ্টনী লাগিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেতুর সামনে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ লিখা সাইনবোর্ড টানানো হয়। শুধুমাত্র পথচারীরা সেতুটি ব্যবহার করার সুযোগ পান। তবে কিনব্রিজ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার পর সেতুন দক্ষিণ পাড়ের বাসিন্দারা বিক্ষোব্ধ হয়ে ওঠেন। তাদের যাতায়াত সুবিধার জন্য এ সেতু দিয়ে যান চলাচল অব্যাহত রাখার দাবি জানান। কিছুদিন পর কিনব্রিজের উভয় প্রবেশপথে লাগানো লোহার বেষ্টনী ভেঙে রিকশা চলাচল শুরু হয়। এরপর ধীরে ধীরে প্রায় পুরো বেষ্টনীই গায়েব হয়ে যায়।













































































































































































































