সন্দেহজনক লেনদেন : সাবেক ওসি আবদুল্লাহর জামিন স্থগিত

- Update Time : ১১:৪১:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ জুন ২০২৩
- / ১৬০ Time View
২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার বেশি সন্দেহজনক লেনদেন এবং ১৮ কোটি ১৬ হাজার ৫৬৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পিরোজপুর মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসি সৈয়দ আব্দুল্লাহকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (২৬ জুন) আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি মো.আবু জাফর সিদ্দিকীর আদালত এ আদেশ দেন। দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ২০ জুন বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন দেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তিনি জানান, ২০ জুন তাকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট । সেটি স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে দুদক। শুনানি শেষে আজ চেম্বার আদালত ৮ সপ্তাহের জন্য হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন।
ফেনী পুলিশ সুপার কার্যালয়ের অপরাধ শাখার পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত এই পুলিশ পরিদর্শকের বিরুদ্ধে প্রায় ১৮ কোটি ১৬ হাজার ৫৬৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয় মামলা করে। দুদকের সহকারী পরিচালক মো. মোস্তাফিজ বাদী হয়ে ১৫ জুন বৃহস্পতিবার করা মামলায় ওই পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী ও শাশুড়িকেও আসামি করা হয়।
দুদকের করা মামলায় বলা হয়, পুলিশ পরিদর্শক সৈয়দ আব্দুল্লাহর স্ত্রী ফারহানা আক্তারের নামে বিভিন্ন ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে ২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার বেশি সন্দেহজনক লেনদেন পাওয়া গেছে। এই পুলিশ কর্মকর্তা, তার স্ত্রী ও শাশুড়ির নামে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ পাওয়া গেছে ১৮ কোটি ১৬ হাজার ৫৬৩ টাকার।
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আব্দুল্লাহর স্ত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লেনদেন হয়েছে সাড়ে ২৬ কোটি টাকা। মাদক-চোরাচালান কারবারিদের সঙ্গে সখ্য, মিথ্যা মামলা দেয়ার মতো ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন আব্দুল্লাহ। দুদকের অনুসন্ধানে এমন তথ্য পাওয়া যায়।
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার বাসিন্দা সৈয়দ আব্দুল্লাহ বর্তমানে ফেনীর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের ক্রাইম শাখায় পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত।
সৈয়দ আব্দুল্লাহ ১৯৯১ সালে উপ-পরিদর্শক পদে পুলিশে যোগদান করেন। তিনি ২০০৭ সালে পরিদর্শক পদে পদোন্নতি পান। এই পদে থেকে তিনি সিআইডি সদর দপ্তর, নরসিংদী, ডিএমপি, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, ঢাকা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, যশোর ও বরিশাল হাইওয়ে জেলায় কর্মরত থেকেছেন।
সৈয়দ আব্দুল্লাহ ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ থেকে ২০২০ সালের ২৪ মার্চ পর্যন্ত পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানায় ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০২০ সালের একটি অভিযোগ অনুসন্ধানের পর সৈয়দ আব্দুল্লাহ, তার স্ত্রী ফারহানা আক্তার, শাশুড়ি কারিমা খাতুনের বিরুদ্ধে দুদক আইন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মামলা করে। এছাড়া মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনেও মামলার সুপারিশ করেছে দুদক।
মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, আব্দুল্লাহর স্ত্রী ফারহানা আক্তারের নামে বিভিন্ন ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে ২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার বেশি সন্দেহজনক লেনদেন পাওয়া গেছে। স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ পাওয়া গেছে ১৮ কোটি ১৬ হাজার ৫৬৩ টাকার।
সৈয়দ আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে ২০২২ সালে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অনুসন্ধানে আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া যায়। তার ও স্বজনের নামে ১৮ কোটি ১৬ হাজার ৫৬৩ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত চলতি বছরের ২৮ মে সৈয়দ আব্দুল্লাহর ১৮ কোটি ১৬ হাজার ৫৬৩ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ক্রোক করে ফ্রিজ করার নির্দেশ দেন।
পুলিশ কর্মকর্তা সৈয়দ আবদুল্লাহ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। তার বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া তালুকপাড়া গ্রামে। মামলার অপর দু’আসামি হলেন সৈয়দ আবদুল্লাহর স্ত্রী ফারহানা আক্তার এবং শাশুড়ি কারিমা খাতুন।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়