ঢাকা ০১:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৯৩ রানেই শেষ বাংলাদেশ

তামিম খান
  • Update Time : ০৮:২৯:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ১৩৩ Time View

পাকিস্তানি পেসারদের তোপের মুখে প্রথম পাওয়ার প্লেতেই টপ অর্ডারের ৪ ব্যাটারকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর সাকিব আল হাসান-মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় টাইগাররা। কিন্তু এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার ছাড়া আরও কেউই সুবিধা করতে পারেননি। ফলে দুইশর আগেই অলআউট বাংলাদেশ।

আজ (বুধবার) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৩৮ ওভার ৪ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। যেখানে সর্বোচ্চ ৬৪ রান এসেছে মুশফিক ব্যাট থেকে। তাছাড়া হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন সাকিবও।

ইনিংসের প্রথম বলেই শাহিন আফ্রিদির দুর্দান্ত এক ইনসুইংয়ে পরাস্ত হন নাঈম শেখ। পরের পাঁচটা বলও স্বস্তিতে খেলতে পারেননি এই ব্যাটার। তাতে ওভার শেষে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচেন নাঈম। কিন্তু আরেক ওপেনার মিরাজ এক বলের বেশি টিকতে পারেননি। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলটি গুড লেন্থে করেছিলেন নাসিম শাহ। সেখানে লেগের দিকে ঘুরানোর চেষ্টা করেন মিরাজ। কিন্তু বল চলে যায় সোজা মিড অনে দাঁড়িয়ে থাকা ফিল্ডারের হাতে। তাতে রানের খাতা খোলার আগেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

উইকেটে এসেই দারুণ এক বাউন্ডারিতে শুরু করেছিলেন লিটন দাস। পরের ওভারে নাসিমকে আরও দুই বাউন্ডারি হাঁকান। কিন্তু এমন শুরু পেয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। পঞ্চম ওভারের পঞ্চম বলে আফ্রিদির ব্যাকঅব লেন্থ থেকে লাফিয়ে উঠা বলে ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৩ বলে ১৬ রান।

গোল্ডেন ডাক খেয়ে মিরাজ ফেরার পরও অন্য প্রান্তে অবিচল ছিলেন নাঈম শেখ। শুরুতে একটু শেইকি মনে হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসছিলেন। খেলেছেন দারুণ কিছু শটও। কিন্তু আরও একবার ভালো শুরু পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারলেন না। হাঁটলেন মিরাজ-লিটনের পথেই। অষ্টম ওভারের তৃতীয় বলটি খাটো লেন্থে করেছিলেন রউফ, সেখানে পুল করতে গিয়ে বল সোজা ওপরে উঠে যায়, বোলার দৌড়ে এসে নিজেই তালুবন্দি করেন। সাজঘরে ফেরার আগে ২৫ বলে ২০ রান এসেছে এই ওপেনারের ব্যাট থেকে।

এশিয়া কাপের আগেও ফর্মের তুঙ্গে ছিলেন তৌহিদ হৃদয়। কিন্তু চলমান এই আসরে যেন নিজের ছায়া হয়ে আছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচে সুবিধা করতে পারেননি। এবার সুপার ফোরে এসেও ব্যর্থ তিনি। ৪৫ রানে তিন উইকেট হারিয়ে দল যখন ধুঁকছে তখন উইকেটে আসেন হৃদয়। এমন সময় তার কাছে প্রত্যাশিত ছিল লম্বা ইনিংস। তবে ২ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। রউফের বলে বোল্ড হয়ে উল্টো দলকে আরও বিপদে ফেলেছেন। তাতে দলীয় অর্ধশতকের আগেই টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।

টপ অর্ডার ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে দলের হাল ধরেছেন সাকিব-মুশফিক। এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মিলে পঞ্চম উইকেটে একশ রানের জুটি গড়েছেন। তাতে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফেরে টাইগার শিবিরে। তবে ২০তম ওভারে ফিরতে পারতেন সাকিব। পঞ্চম বলে নাসিমকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। কিন্তু সেটা রাখতে পারেননি নাসিম। ফলে ব্যক্তিগত ৩২ রানে জীবন পেয়েছেন সাকিব।

জীবন পেয়ে ৫৩ বলে তুলে নেন ব্যক্তিগত হাফ সেঞ্চুরি। কিন্তু এরপর আর বেশি দূর এগোতে পারলেন না। ৩০তম ওভারের প্রথম বলে ফাহিম আশরাফকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমানার কাছে ফখর জামানের হাতে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট থেকে এসেছে ৫৭ বলে ৫৩ রান।

সাকিবের পর হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন মুশফিকও। ৩০তম ওভারের তৃতীয় বলটি লেগ স্টাম্পের ওপর করেছিলেন ফাহিম। সেটি ফাইন লেগের দিকে ঘুরিয়ে ২ রান নিয়ে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন মুশফিক। এই মাইলফলক ছুঁতে ৭১ বল খেলেছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার।

ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন দিয়ে সাত নম্বরে পাঠানো হয়েছিল শামীম হোসেনকে। সেটার প্রমাণও দিলেন উইকেটে এসেই। ৩৪তম ওভারে আফ্রিদিকে ছক্কা হাঁকিয়ে ভালোই শুরু করেছিলেন। কিন্তু পরের ওভারেই রীতিমতো নিজেকে বিসর্জন দিলেন এই ব্যাটার। ইফতিখারকে টেনে লেগ সাইডে মারতে গিয়ে টপ এজড হয়ে ধরা পড়েন। তাতে ২৩ বলে ১৬ রানে থামেন তিনি।

পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে সাকিব যখন সাজঘরে ফেরেন তখন বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৪৭ রান। সেখান থেকে আর ৪৩ রান যোগ করতেই পরের ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৩৮তম ওভারে রউফের টানা দুই বলে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক ও তাসকিন আহমেদ।

শেষ ৩ রান তুলতেই লেজের সারির ৪ ব্যাটারকে হারায় বাংলাদেশ। তাতে ১৮৯ রানে ৬ উইকেট থেকে ১৯৩ রান তুলতেই অলআউট হয় বাংলাদেশ। পাকিস্তানের হয়ে ১৯ রানে ৪ উইকেট শিকার করে দিনের সেরা বোলার রউফ। তাছাড়া আফ্রিদির ঝুলিতে গেছে ৩ উইকেট।

Please Share This Post in Your Social Media

১৯৩ রানেই শেষ বাংলাদেশ

তামিম খান
Update Time : ০৮:২৯:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

পাকিস্তানি পেসারদের তোপের মুখে প্রথম পাওয়ার প্লেতেই টপ অর্ডারের ৪ ব্যাটারকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর সাকিব আল হাসান-মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় টাইগাররা। কিন্তু এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার ছাড়া আরও কেউই সুবিধা করতে পারেননি। ফলে দুইশর আগেই অলআউট বাংলাদেশ।

আজ (বুধবার) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৩৮ ওভার ৪ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। যেখানে সর্বোচ্চ ৬৪ রান এসেছে মুশফিক ব্যাট থেকে। তাছাড়া হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন সাকিবও।

ইনিংসের প্রথম বলেই শাহিন আফ্রিদির দুর্দান্ত এক ইনসুইংয়ে পরাস্ত হন নাঈম শেখ। পরের পাঁচটা বলও স্বস্তিতে খেলতে পারেননি এই ব্যাটার। তাতে ওভার শেষে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচেন নাঈম। কিন্তু আরেক ওপেনার মিরাজ এক বলের বেশি টিকতে পারেননি। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলটি গুড লেন্থে করেছিলেন নাসিম শাহ। সেখানে লেগের দিকে ঘুরানোর চেষ্টা করেন মিরাজ। কিন্তু বল চলে যায় সোজা মিড অনে দাঁড়িয়ে থাকা ফিল্ডারের হাতে। তাতে রানের খাতা খোলার আগেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

উইকেটে এসেই দারুণ এক বাউন্ডারিতে শুরু করেছিলেন লিটন দাস। পরের ওভারে নাসিমকে আরও দুই বাউন্ডারি হাঁকান। কিন্তু এমন শুরু পেয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। পঞ্চম ওভারের পঞ্চম বলে আফ্রিদির ব্যাকঅব লেন্থ থেকে লাফিয়ে উঠা বলে ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৩ বলে ১৬ রান।

গোল্ডেন ডাক খেয়ে মিরাজ ফেরার পরও অন্য প্রান্তে অবিচল ছিলেন নাঈম শেখ। শুরুতে একটু শেইকি মনে হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসছিলেন। খেলেছেন দারুণ কিছু শটও। কিন্তু আরও একবার ভালো শুরু পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারলেন না। হাঁটলেন মিরাজ-লিটনের পথেই। অষ্টম ওভারের তৃতীয় বলটি খাটো লেন্থে করেছিলেন রউফ, সেখানে পুল করতে গিয়ে বল সোজা ওপরে উঠে যায়, বোলার দৌড়ে এসে নিজেই তালুবন্দি করেন। সাজঘরে ফেরার আগে ২৫ বলে ২০ রান এসেছে এই ওপেনারের ব্যাট থেকে।

এশিয়া কাপের আগেও ফর্মের তুঙ্গে ছিলেন তৌহিদ হৃদয়। কিন্তু চলমান এই আসরে যেন নিজের ছায়া হয়ে আছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচে সুবিধা করতে পারেননি। এবার সুপার ফোরে এসেও ব্যর্থ তিনি। ৪৫ রানে তিন উইকেট হারিয়ে দল যখন ধুঁকছে তখন উইকেটে আসেন হৃদয়। এমন সময় তার কাছে প্রত্যাশিত ছিল লম্বা ইনিংস। তবে ২ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। রউফের বলে বোল্ড হয়ে উল্টো দলকে আরও বিপদে ফেলেছেন। তাতে দলীয় অর্ধশতকের আগেই টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।

টপ অর্ডার ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে দলের হাল ধরেছেন সাকিব-মুশফিক। এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মিলে পঞ্চম উইকেটে একশ রানের জুটি গড়েছেন। তাতে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফেরে টাইগার শিবিরে। তবে ২০তম ওভারে ফিরতে পারতেন সাকিব। পঞ্চম বলে নাসিমকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। কিন্তু সেটা রাখতে পারেননি নাসিম। ফলে ব্যক্তিগত ৩২ রানে জীবন পেয়েছেন সাকিব।

জীবন পেয়ে ৫৩ বলে তুলে নেন ব্যক্তিগত হাফ সেঞ্চুরি। কিন্তু এরপর আর বেশি দূর এগোতে পারলেন না। ৩০তম ওভারের প্রথম বলে ফাহিম আশরাফকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমানার কাছে ফখর জামানের হাতে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট থেকে এসেছে ৫৭ বলে ৫৩ রান।

সাকিবের পর হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন মুশফিকও। ৩০তম ওভারের তৃতীয় বলটি লেগ স্টাম্পের ওপর করেছিলেন ফাহিম। সেটি ফাইন লেগের দিকে ঘুরিয়ে ২ রান নিয়ে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন মুশফিক। এই মাইলফলক ছুঁতে ৭১ বল খেলেছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার।

ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন দিয়ে সাত নম্বরে পাঠানো হয়েছিল শামীম হোসেনকে। সেটার প্রমাণও দিলেন উইকেটে এসেই। ৩৪তম ওভারে আফ্রিদিকে ছক্কা হাঁকিয়ে ভালোই শুরু করেছিলেন। কিন্তু পরের ওভারেই রীতিমতো নিজেকে বিসর্জন দিলেন এই ব্যাটার। ইফতিখারকে টেনে লেগ সাইডে মারতে গিয়ে টপ এজড হয়ে ধরা পড়েন। তাতে ২৩ বলে ১৬ রানে থামেন তিনি।

পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে সাকিব যখন সাজঘরে ফেরেন তখন বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৪৭ রান। সেখান থেকে আর ৪৩ রান যোগ করতেই পরের ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৩৮তম ওভারে রউফের টানা দুই বলে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক ও তাসকিন আহমেদ।

শেষ ৩ রান তুলতেই লেজের সারির ৪ ব্যাটারকে হারায় বাংলাদেশ। তাতে ১৮৯ রানে ৬ উইকেট থেকে ১৯৩ রান তুলতেই অলআউট হয় বাংলাদেশ। পাকিস্তানের হয়ে ১৯ রানে ৪ উইকেট শিকার করে দিনের সেরা বোলার রউফ। তাছাড়া আফ্রিদির ঝুলিতে গেছে ৩ উইকেট।