হাতি পালনে স্থগিতাদেশ দিলেন হাইকোর্ট

- Update Time : ০৫:৫৬:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / ১৩৫ Time View
হাতি পালনে ব্যক্তি পর্যায়ে নতুন লাইসেন্স দেওয়া ও বিদ্যমান আইনে লাইসেন্স নবায়ন কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
সার্কাসে, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে ও চাঁদা তোলার মতো কাজে হাতিকে ব্যবহার এবং এসব কাজের জন্য নির্যাতনের মাধ্যমে হাতিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কারণ তুলে ধরে রিটটি করা হয়।
রোববার আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সাকিব মাহবুব। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হাতি পালনে লাইসেন্স প্রদান ও বিদ্যমান লাইসেন্স নবায়ন বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে অভিনেত্রী জয়া আহসান ও পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন হাইকোর্টে একটি রিট করেন। রবিবার এ রিটের প্রথম শুনানি ছিল।
সংগঠনটির সূত্রে জানা যায়, অমানুষিক নির্যাতনের মাধ্যমে হাতির প্রশিক্ষণ বন্ধ করা, বিনোদনের কাজে ব্যবহার না করা, চাঁদাবাজি বন্ধ করাসহ নানা দাবিতে বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে আসছেন তারা। দুইবার বন ভবন ঘেরাও করেছেন প্রাণী অধিকার কর্মীরা।
হাইকোর্টের রায়কে ঐতিহাসিক বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো হাতির নিরাপত্তা নিয়ে হাইকোর্টের রায় নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে মহাবিপন্ন এশিয়ান হাতি রয়েছে প্রায় ২০০টি। এর মধ্যে আবার অর্ধেকই বন্দি জীবনযাপন করছে।
বিসিসি বলছে, গত বছর রাস্তায় চাঁদা তোলার সময় মাঝ বয়সি এক হাতির মৃত্যু এবং এর আগে ২০১৯ সালে চাঁদা তোলার কাজে ব্যবহৃত দুটি হাতির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এ বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন সংশ্লিষ্ট সংগঠন ও অভিনেত্রী জয়া আহসান।
এ ব্যাপারে আইনজীবী সাকিব মাহবুব বলেন, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) লাল তালিকাভুক্ত প্রাণী হিসেবে এশিয়ান হাতি বর্তমানে মহাবিপন্ন। এটা সত্ত্বেও বন বিভাগ ব্যক্তি মালিকানায় হাতি পালনের জন্য লাইসেন্স দিয়ে থাকে। সার্কাস ও চাঁদাবাজিতে বাধ্য করতে বাচ্চা হাতিকে নির্মম অত্যাচারের মধ্য দিয়ে প্রশিক্ষিত করা হয়।
তিনি বলেন, হাতির মাহুত চাঁদাবাজির সময় একটি ধাতব হুক হাতে নিয়ে বসে থাকে, যা দিয়ে সে হাতির শরীরের বিভিন্ন দুর্বল স্থানে আঘাত করে চাঁদাবাজিসহ মানুষের ওপর চড়াও হতে বাধ্য করে। এসব কার্যক্রম ২০১২ সালের বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১৯ সালের প্রাণিকল্যাণ আইন এবং হরিণ ও হাতি লালন-পালন বিধিমালার পরিপন্থি। যে কারণে হাতি পালনে লাইসেন্স দেওয়া বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়েছে।
সার্কাস, ভ্রমণ, শোভাবর্ধন, বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক কাজে হাতি ব্যবহারের জন্য ব্যক্তিপর্যায়ে হাতি পালনে লাইসেন্স প্রদান ও বিদ্যমান লাইসেন্স নবায়ন কার্যক্রমে স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়