ঢাকা ১১:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তিনি কিভাবে একাই ৬টি দায়িত্বে!

হাইটেক পার্কের এমডি আমিনুল ইসলাম কি শফিক উদ্দিন ভূঁইয়ার হাতের পুতুল

বিশেষ সংবাদদাতা
  • Update Time : ০৬:২০:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৮৫ Time View

বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই এ কে এম আমিরুল ইসলাম আইসিটি খাতে লুটপাটে সজিব ওয়াজেদ জয় ও পলক সিন্ডিকেটের অন্যতম সহযোগী বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের গবেষণা কর্মকর্তা শফিক উদ্দিন ভূইয়াকে একের পর এক দায়িত্ব দিয়ে আসছেন। এর রহস্য কোথায় জনমনে এমন প্রশ্ন উচ্চারিত হচ্ছে।

তিনি শফিক উদ্দিন ভূইয়াকে দিয়ে হাইটেক পার্কে তার সিন্ডিকেট বাহিনী গড়ে তুলছে বলে অভিযোগ উঠেছে, অথচ এ শফিক উদ্দিন ভূইয়া বিগত আওয়ামিলীগ সরকারের আমলে এতটাই ক্ষমতাধর ছিলেন যে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পড়াশুনাও করে শুধুমাত্র ছাত্রলীগ কর্মী পরিচয় দিয়ে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে জুনায়েদ আহম্মেদ পলকের মাধ্যমে হাইটেক পার্কের গবেষণা কর্মকর্তার মতো অতি গুরুত্বপূর্ন নবম গ্রেডের সরকারি চাকুরি ভাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। হাইটেক পার্ক-এর বর্তমান এমডি এ কে আমিরুল ইসলাম দায়িত্ব নেওয়ার পর হতেই শফিক রাতারাতি দল পরিবর্তন করে পুতুল এমডিকে অনিয়মের মাধ্যমে হাইটেক পার্ক এর গুরুত্বপূর্ণ আরো ৫টি পদ ভাগিয়ে নিয়েছে। এ বিষয়ে হাইটেক পার্ক এবং আইসিটি বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে চরম আসোন্তষ বিরাজ করছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ছাত্রলীগ কর্মী হাইটেক পার্কের গবেষনা কর্মকর্তা শফিক উদ্দিন ভূইয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী কৃষিবিদ মশিউর রহমান হুমায়নকে তার চাচাতো ভাই পরিচয় দিতো। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমানকে তার বাল্যকালের বন্ধু এবং এক সাথে ছাত্রলীগ করতো বলে পরিচয় দিয়েছেন যখন যেখানে যেমন। সাবেক জন প্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের শ্যালক পরিচয় দিতো এবং কিশোরগঞ্জের সাবেক এমপি ডাঃ লিপিকে তার রাজনৈতিক বড়বোন বলে হাইটেক পার্ক এবং আইসিটি বিভাগের কর্মকর্তাদের নিকট ক্ষমতা জাহির করতো এবং শফিকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব প্রচারণা চালাতো। দূর্নীতির বড় পুত্র এহেনো কাজ নেই যা তিনি করেননি।

৫ আগস্ট ২০২৪ এ স্বৈরাচার হাসিনা সরকার পরিবর্তনের পরে বর্তমান এমডিকে এম আমিরুল ইসলাম যোগদানের পরে স্বৈরাচারের দোসর ছাত্রলীগ কর্মী শফিক উদ্দিন ভূইয়া-এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির একাধিক সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকার স্বত্তেও এমডি হয়ে যেন শফিকের হাতের পুতুল। এমডি আলোচিত শফিকের দূর্নীতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন না করে তাকে একের পর এক অবৈধ অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করছে। এহেনো অভিযোগ বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেছেন না স্বয়ং এমডি।

জানা যায়, শফিক উদ্দিন ভূইয়া এমডির মাধ্যমে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে অনিয়মের মাধ্যমে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের বাস্তবায়নধীন জেলা পর্যায়ে আইটি/হাইটেক পার্ক স্থাপন (১২ টি জেলায়) (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের সহকারী প্রকল্প পরিচালক (নবম গ্রেড), ব্যবস্থাপনা পরিচালকের একান্ত সচিব (চতুর্থ গ্রেড), শেখ হাসিনা ইন্ডাস্ট্রিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি” এর মৌলিক অবকাঠামো উন্নয়ন (শিফট) প্রকল্পের উপ- প্রকল্প পরিচালক (চতুর্থ গ্রেড) পদ না থাকার পরেও ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার এর উপ-পরিচালক (ষষ্ঠ গ্রেড) এবং শফিকের কারিগরি দক্ষতা না থাকার পরেও টেকনিক্যাল শাখার উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা) (ষষ্ঠ গ্রেডে) দায়িত্ব সহ একসাথে ৬টি দায়িত্ব পালন করে আসছেন এবং একই সাথে সকল শাখা হতে অতিরিক্ত দায়িত্ব ভাতা নিয়ে আসছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা এ সকল অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়ে বলতে গেলে নিরব।

শফিক উদ্দিন ভূইয়া জেলা পর্যায়ে আইটি হাইটেক পার্ক স্থাপন প্রকল্প থেকে অনিয়মের মাধ্যমে ২০১৬-১০১৭ অর্থ বছরে ২৫৪৮০/- টাকা মূল ব্যাসিক বেতন হিসেবে অবৈধভাবে ৩,০৫,৭৬০/-টাকা এবং ২০১৭ -১০১৮ অর্থ বছরে ৩,৮৫,৫৮০/-টাকা সহ মোট প্রায় ৭ লক্ষ টাকা অবৈধভাবে উত্তোলন করেন যার অডিট আপত্তি হলেও তিনি এ পর্যন্ত উল্লেখিত টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেননি।

এ বিষয়টি প্রকল্প পরিচালক এ.কে.এ.এম ফজলুল হক নিশ্চিত করেছেন। উন্নয়ন প্রকল্পের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করলে সাধারণ সরকারী কর্মচারীগণ তাদের মূল বেতনের সর্বোচ্চ ১০%দায়িত্ব ভাতা নেয়ার বিধান রয়েছে, এক্ষেত্রে শফিক উদ্দিন ভূইয়া আইনের কোন তোয়াক্কা না করে সরকারের ৭ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে। শফিক উদ্দিন- এর এহেন দূর্নীতি অনিয়ম সেচ্ছাচারিতার উদাহরণ ভুরি ভুরি।

এছড়া শফিক উদ্দিন ১২টি আইটি প্রকল্পের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও নির্মান কাজের টেন্ডার এর মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিদেশ থেকে ডিউটি ফ্রী ইকুইপমেন্ট আমদানির ক্ষেত্রে ওয়ান স্টপ সার্ভিস শাখা থেকে এনইসি নেওয়ার বাধ্যকতা থাকায় স্যামসাং সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হতে কয়েক ধাপে ২.৫ কোটি টাকা উৎকোচ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

বিগত ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দপ্তরে আপ্যায়ন ব্যয় বাবদ ৩৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সবচেয়ে আলোচিত দূর্নীতিবাজ সাবেক এমডি বিকর্ণ কুমার ঘোষ এর দূর্নীতির অন্যাতম সহোযোগি এই সফিক উদ্দিন ভূইয়া। হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের জমি ও প্রেস বরাদ্দ দিয়েও তিনি কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

শফিক উদ্দিন ভূঁইয়া নিজেকে প্রচন্ড চালাক ও সুচতুর মনে করেন। দেখলে মনে হয় তিনি ভাজা মাছ উলটিয়েও খেতে পারেন না। তিনি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও যেমন ক্ষমতাধর ছিলেন বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ডঃ ইউনুস এর অন্তরর্বর্তীকালীন সরকার এর সময়েও একই রকম ক্ষমতাধর এবং বহাল তবিয়তেই রয়েছেন। তিনি তার অবৈধ টাকা ব্যবহার করে উর্ধতন কর্মকর্তাদের কৌশলে ম্যানেজ করেন। এক শ্রেণির সংবাদপত্রের সাংবাদিকদের তিনি মাসওয়ারা দিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ। যাতে তার বিরুদ্ধে কোনো রিপোর্ট ছাপা না হয়। তিনি নিয়োগ পরিক্ষায় নবম স্থান অধিকার করে ও ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় এবং কিশোরগঞ্জের ছেলে হওয়ায় তৎকালীন সংসদ সদস্য ডাক্তার সৈয়দ লিপির তদবীরে এবং হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের তৎকালীন পরিচালক অর্থ ও প্রশাসন সৈয়দ এমদাদুল হককে ১০ লক্ষ টাকা উৎকোচ প্রদান করে অবৈধভাবে চাকরি বাগিয়ে নেন।

দূর্নীতি অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ থাকার পরেও শফিক উদ্দিন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন না করে তাকে কেনো কোন যোগ্যতাবলে ৬টি পদের অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে তা একমাত্র জানেন বর্তমান এমডি একে এম আমিরুল ইসলাম। তাহলে কি ধরে নেওয়া যাবে আওয়ামী লীগের সুবিধাবাদী বর্ণচোরা কর্মকর্তাদের জন্যই হাইটেক পার্কের এমডি আমিরুল ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয় ও প্রতি মন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের দুর্নীতি সহযোগী ক্ষমতাধর গবেষনা কর্মকর্তা শফিক উদ্দিন ভূঁইয়ার সকল কাজের সাথে কারা কিভাবে জড়িত এ প্রশ্ন এখন ঘুরে ফিরে আসছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল বিষয়টি কি আমলে নিবেন।

Please Share This Post in Your Social Media

তিনি কিভাবে একাই ৬টি দায়িত্বে!

হাইটেক পার্কের এমডি আমিনুল ইসলাম কি শফিক উদ্দিন ভূঁইয়ার হাতের পুতুল

বিশেষ সংবাদদাতা
Update Time : ০৬:২০:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই এ কে এম আমিরুল ইসলাম আইসিটি খাতে লুটপাটে সজিব ওয়াজেদ জয় ও পলক সিন্ডিকেটের অন্যতম সহযোগী বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের গবেষণা কর্মকর্তা শফিক উদ্দিন ভূইয়াকে একের পর এক দায়িত্ব দিয়ে আসছেন। এর রহস্য কোথায় জনমনে এমন প্রশ্ন উচ্চারিত হচ্ছে।

তিনি শফিক উদ্দিন ভূইয়াকে দিয়ে হাইটেক পার্কে তার সিন্ডিকেট বাহিনী গড়ে তুলছে বলে অভিযোগ উঠেছে, অথচ এ শফিক উদ্দিন ভূইয়া বিগত আওয়ামিলীগ সরকারের আমলে এতটাই ক্ষমতাধর ছিলেন যে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পড়াশুনাও করে শুধুমাত্র ছাত্রলীগ কর্মী পরিচয় দিয়ে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে জুনায়েদ আহম্মেদ পলকের মাধ্যমে হাইটেক পার্কের গবেষণা কর্মকর্তার মতো অতি গুরুত্বপূর্ন নবম গ্রেডের সরকারি চাকুরি ভাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। হাইটেক পার্ক-এর বর্তমান এমডি এ কে আমিরুল ইসলাম দায়িত্ব নেওয়ার পর হতেই শফিক রাতারাতি দল পরিবর্তন করে পুতুল এমডিকে অনিয়মের মাধ্যমে হাইটেক পার্ক এর গুরুত্বপূর্ণ আরো ৫টি পদ ভাগিয়ে নিয়েছে। এ বিষয়ে হাইটেক পার্ক এবং আইসিটি বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে চরম আসোন্তষ বিরাজ করছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ছাত্রলীগ কর্মী হাইটেক পার্কের গবেষনা কর্মকর্তা শফিক উদ্দিন ভূইয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী কৃষিবিদ মশিউর রহমান হুমায়নকে তার চাচাতো ভাই পরিচয় দিতো। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমানকে তার বাল্যকালের বন্ধু এবং এক সাথে ছাত্রলীগ করতো বলে পরিচয় দিয়েছেন যখন যেখানে যেমন। সাবেক জন প্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের শ্যালক পরিচয় দিতো এবং কিশোরগঞ্জের সাবেক এমপি ডাঃ লিপিকে তার রাজনৈতিক বড়বোন বলে হাইটেক পার্ক এবং আইসিটি বিভাগের কর্মকর্তাদের নিকট ক্ষমতা জাহির করতো এবং শফিকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব প্রচারণা চালাতো। দূর্নীতির বড় পুত্র এহেনো কাজ নেই যা তিনি করেননি।

৫ আগস্ট ২০২৪ এ স্বৈরাচার হাসিনা সরকার পরিবর্তনের পরে বর্তমান এমডিকে এম আমিরুল ইসলাম যোগদানের পরে স্বৈরাচারের দোসর ছাত্রলীগ কর্মী শফিক উদ্দিন ভূইয়া-এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির একাধিক সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকার স্বত্তেও এমডি হয়ে যেন শফিকের হাতের পুতুল। এমডি আলোচিত শফিকের দূর্নীতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন না করে তাকে একের পর এক অবৈধ অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করছে। এহেনো অভিযোগ বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেছেন না স্বয়ং এমডি।

জানা যায়, শফিক উদ্দিন ভূইয়া এমডির মাধ্যমে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে অনিয়মের মাধ্যমে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের বাস্তবায়নধীন জেলা পর্যায়ে আইটি/হাইটেক পার্ক স্থাপন (১২ টি জেলায়) (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের সহকারী প্রকল্প পরিচালক (নবম গ্রেড), ব্যবস্থাপনা পরিচালকের একান্ত সচিব (চতুর্থ গ্রেড), শেখ হাসিনা ইন্ডাস্ট্রিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি” এর মৌলিক অবকাঠামো উন্নয়ন (শিফট) প্রকল্পের উপ- প্রকল্প পরিচালক (চতুর্থ গ্রেড) পদ না থাকার পরেও ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার এর উপ-পরিচালক (ষষ্ঠ গ্রেড) এবং শফিকের কারিগরি দক্ষতা না থাকার পরেও টেকনিক্যাল শাখার উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা) (ষষ্ঠ গ্রেডে) দায়িত্ব সহ একসাথে ৬টি দায়িত্ব পালন করে আসছেন এবং একই সাথে সকল শাখা হতে অতিরিক্ত দায়িত্ব ভাতা নিয়ে আসছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা এ সকল অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়ে বলতে গেলে নিরব।

শফিক উদ্দিন ভূইয়া জেলা পর্যায়ে আইটি হাইটেক পার্ক স্থাপন প্রকল্প থেকে অনিয়মের মাধ্যমে ২০১৬-১০১৭ অর্থ বছরে ২৫৪৮০/- টাকা মূল ব্যাসিক বেতন হিসেবে অবৈধভাবে ৩,০৫,৭৬০/-টাকা এবং ২০১৭ -১০১৮ অর্থ বছরে ৩,৮৫,৫৮০/-টাকা সহ মোট প্রায় ৭ লক্ষ টাকা অবৈধভাবে উত্তোলন করেন যার অডিট আপত্তি হলেও তিনি এ পর্যন্ত উল্লেখিত টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেননি।

এ বিষয়টি প্রকল্প পরিচালক এ.কে.এ.এম ফজলুল হক নিশ্চিত করেছেন। উন্নয়ন প্রকল্পের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করলে সাধারণ সরকারী কর্মচারীগণ তাদের মূল বেতনের সর্বোচ্চ ১০%দায়িত্ব ভাতা নেয়ার বিধান রয়েছে, এক্ষেত্রে শফিক উদ্দিন ভূইয়া আইনের কোন তোয়াক্কা না করে সরকারের ৭ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে। শফিক উদ্দিন- এর এহেন দূর্নীতি অনিয়ম সেচ্ছাচারিতার উদাহরণ ভুরি ভুরি।

এছড়া শফিক উদ্দিন ১২টি আইটি প্রকল্পের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও নির্মান কাজের টেন্ডার এর মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিদেশ থেকে ডিউটি ফ্রী ইকুইপমেন্ট আমদানির ক্ষেত্রে ওয়ান স্টপ সার্ভিস শাখা থেকে এনইসি নেওয়ার বাধ্যকতা থাকায় স্যামসাং সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হতে কয়েক ধাপে ২.৫ কোটি টাকা উৎকোচ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

বিগত ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দপ্তরে আপ্যায়ন ব্যয় বাবদ ৩৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সবচেয়ে আলোচিত দূর্নীতিবাজ সাবেক এমডি বিকর্ণ কুমার ঘোষ এর দূর্নীতির অন্যাতম সহোযোগি এই সফিক উদ্দিন ভূইয়া। হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের জমি ও প্রেস বরাদ্দ দিয়েও তিনি কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

শফিক উদ্দিন ভূঁইয়া নিজেকে প্রচন্ড চালাক ও সুচতুর মনে করেন। দেখলে মনে হয় তিনি ভাজা মাছ উলটিয়েও খেতে পারেন না। তিনি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও যেমন ক্ষমতাধর ছিলেন বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ডঃ ইউনুস এর অন্তরর্বর্তীকালীন সরকার এর সময়েও একই রকম ক্ষমতাধর এবং বহাল তবিয়তেই রয়েছেন। তিনি তার অবৈধ টাকা ব্যবহার করে উর্ধতন কর্মকর্তাদের কৌশলে ম্যানেজ করেন। এক শ্রেণির সংবাদপত্রের সাংবাদিকদের তিনি মাসওয়ারা দিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ। যাতে তার বিরুদ্ধে কোনো রিপোর্ট ছাপা না হয়। তিনি নিয়োগ পরিক্ষায় নবম স্থান অধিকার করে ও ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় এবং কিশোরগঞ্জের ছেলে হওয়ায় তৎকালীন সংসদ সদস্য ডাক্তার সৈয়দ লিপির তদবীরে এবং হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের তৎকালীন পরিচালক অর্থ ও প্রশাসন সৈয়দ এমদাদুল হককে ১০ লক্ষ টাকা উৎকোচ প্রদান করে অবৈধভাবে চাকরি বাগিয়ে নেন।

দূর্নীতি অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ থাকার পরেও শফিক উদ্দিন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন না করে তাকে কেনো কোন যোগ্যতাবলে ৬টি পদের অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে তা একমাত্র জানেন বর্তমান এমডি একে এম আমিরুল ইসলাম। তাহলে কি ধরে নেওয়া যাবে আওয়ামী লীগের সুবিধাবাদী বর্ণচোরা কর্মকর্তাদের জন্যই হাইটেক পার্কের এমডি আমিরুল ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয় ও প্রতি মন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের দুর্নীতি সহযোগী ক্ষমতাধর গবেষনা কর্মকর্তা শফিক উদ্দিন ভূঁইয়ার সকল কাজের সাথে কারা কিভাবে জড়িত এ প্রশ্ন এখন ঘুরে ফিরে আসছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল বিষয়টি কি আমলে নিবেন।