ঢাকা ০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্কুলের ছাদে দৃষ্টিনন্দন বাগান

আবু সাঈদ, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৩:৫৫:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৭৯ Time View

স্কুলের ছাদে সারি সারি টব। সেখানে বেড়ে ওঠা গাছের ডালে ঝাঁকে ঝাঁকে নানা প্রজাতির ফুল, ফল আর সবজি ছেয়ে গেছে পুরো ছাদ বাগান। ছাদে উঠতেই মিলবে পুই শাঁক, কলমি শাকসহ নানা জাতের শাক। আর তার পাশেই রয়েছে বাহারী রকমের পাতা বাহারের গাছ। পুরো ছাদটিই একটি দৃষ্টি নন্দন বাগান। বিভিন্ন রকমের ফুল ফুটে বাগানের সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তুলেছে। বাগানের অপরূপ দৃশ্য দেখতে ভিড় করছে উৎসাহী মানুষ। স্কুলের ছাদে যে বাগান করা সম্ভব, সেটি প্রমাণ করেছেন গাজীপুর শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পূর্বখন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বিদ্যালয়টিতে সাড়ে চারশ’ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। বিদ‍্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শিক্ষা দিতে স্কুলের ছাদকে ফেলে না রেখে বাগান হিসেবে ব্যবহার করছেন। এতে যেমন শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছেন, তেমনি শিক্ষকের পরিকল্পনা আজ অনেকের কাছে উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্কুলের ছাদে গেলে বিশ্বাসেই হবে না এটি স্কুলের ছাদ। বর্তমানে গোলাপ, জবা, কৃঞ্চচুড়াসহ নানা প্রজাতির ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে বিদ্যালয়ের ছাদ। তেমনি নানা জাতের আম, মাল্টার ফলে অপরূপ সাজে সেজেছে বিদ্যালয়ের ছাদ বাগান।

শুরুতে অল্প কিছু গাছ থাকলেও আজ পুরো ছাদ ভরে গেছে ফুল-ফল আর সবজিতে। গোলাপ, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা, রজনীগন্ধাসহ নানা প্রজাতি ফুলের পাশাপাশি রয়েছে আম, বেল, আঙুর, মাল্টা, লেবু, কমলা ও জাম্বুরা। ঔষধি গাছের মধ্য রয়েছে ঘৃতকুমারী, তুলসী,পুদিনাপাতা, পাথরকুচি, আকন্দ ও থানকুচি। ছাদের আরেক দিকে রয়েছে লাউ, স্কোয়াস, পেঁপে, বেগুন, মরিচ, ওলকপি, ধনেপাতা, পালংশাক, পুইশাক, কলমী শাক আর টমেটো।

সহকারী শিক্ষক হামিদুল ইসলাম ও আইরিন সুলতানা জানান, মাহবুবুর রহমান সার একজন বৃক্ষপ্রেমী মানুষ। দেশ বিদেশের যে প্রান্ত গিয়েছেন সেখান থেকে এসব ফুল, ফল ও ঔষধি গাছের চারা ও বীজ সংগ্রহ করেছেন। নিজে অবসর সময়ে বাড়িতে সময় না দিয়ে এই ছাদ বাগানটি নিয়ে পড়ে থাকতেন। গাছগুলোকে তিনি সন্তানের মতো ভালোবাসেন। তার এ কাজে আমাদের পরিপূর্ণ সমর্থন রয়েছে। বাগানটি দেখতে এখন বিভিন্ন লোকজন আসে। আমাদের বেশ ভালো লাগে।

প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান জানান, ২০২২ সালের শেষের দিকে কয়েকটি ফুলের চারা লাগাই। সেখানে ফুল আসায় আলাদা শোভা দিচ্ছিলো। তখন বিভিন্ন সময়ে অনেক জায়গা থেকে বিভিন্ন ফুল, ফল ও ঔষধি গাছের চারা সংগ্রহ করে স্কুল ছাদে বাগান করা শুরু করি। শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শিক্ষা দিতে ছাদকে যে ব্যবহার করা যায়- সেই ইচ্ছা থেকে ছাদে ফুল বাগানের পাশাপাশি ফল আর সবজি চাষ করছি। শুধু স্কুল নয়, কারোর বাড়ির ছাদ ফেলে না রেখে সেখানে সবজি চাষ করে উপার্জন করাও সম্ভব।

এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিকদার হারুন অর রশীদ জানান, বিদ্যালয়ের ছাদবাগানটি মনোরম পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। এখানে শিক্ষার্থীরা কৃষি বিষয়ে হাতে কলমে শিখতে পারছে। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ফুলের চারা নিয়ে গিয়ে নিজ বাড়িতে লাগাচ্ছে।

নওরোজ/এসএইচ

Please Share This Post in Your Social Media

স্কুলের ছাদে দৃষ্টিনন্দন বাগান

আবু সাঈদ, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
Update Time : ০৩:৫৫:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪

স্কুলের ছাদে সারি সারি টব। সেখানে বেড়ে ওঠা গাছের ডালে ঝাঁকে ঝাঁকে নানা প্রজাতির ফুল, ফল আর সবজি ছেয়ে গেছে পুরো ছাদ বাগান। ছাদে উঠতেই মিলবে পুই শাঁক, কলমি শাকসহ নানা জাতের শাক। আর তার পাশেই রয়েছে বাহারী রকমের পাতা বাহারের গাছ। পুরো ছাদটিই একটি দৃষ্টি নন্দন বাগান। বিভিন্ন রকমের ফুল ফুটে বাগানের সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তুলেছে। বাগানের অপরূপ দৃশ্য দেখতে ভিড় করছে উৎসাহী মানুষ। স্কুলের ছাদে যে বাগান করা সম্ভব, সেটি প্রমাণ করেছেন গাজীপুর শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পূর্বখন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বিদ্যালয়টিতে সাড়ে চারশ’ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। বিদ‍্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শিক্ষা দিতে স্কুলের ছাদকে ফেলে না রেখে বাগান হিসেবে ব্যবহার করছেন। এতে যেমন শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছেন, তেমনি শিক্ষকের পরিকল্পনা আজ অনেকের কাছে উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্কুলের ছাদে গেলে বিশ্বাসেই হবে না এটি স্কুলের ছাদ। বর্তমানে গোলাপ, জবা, কৃঞ্চচুড়াসহ নানা প্রজাতির ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে বিদ্যালয়ের ছাদ। তেমনি নানা জাতের আম, মাল্টার ফলে অপরূপ সাজে সেজেছে বিদ্যালয়ের ছাদ বাগান।

শুরুতে অল্প কিছু গাছ থাকলেও আজ পুরো ছাদ ভরে গেছে ফুল-ফল আর সবজিতে। গোলাপ, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা, রজনীগন্ধাসহ নানা প্রজাতি ফুলের পাশাপাশি রয়েছে আম, বেল, আঙুর, মাল্টা, লেবু, কমলা ও জাম্বুরা। ঔষধি গাছের মধ্য রয়েছে ঘৃতকুমারী, তুলসী,পুদিনাপাতা, পাথরকুচি, আকন্দ ও থানকুচি। ছাদের আরেক দিকে রয়েছে লাউ, স্কোয়াস, পেঁপে, বেগুন, মরিচ, ওলকপি, ধনেপাতা, পালংশাক, পুইশাক, কলমী শাক আর টমেটো।

সহকারী শিক্ষক হামিদুল ইসলাম ও আইরিন সুলতানা জানান, মাহবুবুর রহমান সার একজন বৃক্ষপ্রেমী মানুষ। দেশ বিদেশের যে প্রান্ত গিয়েছেন সেখান থেকে এসব ফুল, ফল ও ঔষধি গাছের চারা ও বীজ সংগ্রহ করেছেন। নিজে অবসর সময়ে বাড়িতে সময় না দিয়ে এই ছাদ বাগানটি নিয়ে পড়ে থাকতেন। গাছগুলোকে তিনি সন্তানের মতো ভালোবাসেন। তার এ কাজে আমাদের পরিপূর্ণ সমর্থন রয়েছে। বাগানটি দেখতে এখন বিভিন্ন লোকজন আসে। আমাদের বেশ ভালো লাগে।

প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান জানান, ২০২২ সালের শেষের দিকে কয়েকটি ফুলের চারা লাগাই। সেখানে ফুল আসায় আলাদা শোভা দিচ্ছিলো। তখন বিভিন্ন সময়ে অনেক জায়গা থেকে বিভিন্ন ফুল, ফল ও ঔষধি গাছের চারা সংগ্রহ করে স্কুল ছাদে বাগান করা শুরু করি। শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শিক্ষা দিতে ছাদকে যে ব্যবহার করা যায়- সেই ইচ্ছা থেকে ছাদে ফুল বাগানের পাশাপাশি ফল আর সবজি চাষ করছি। শুধু স্কুল নয়, কারোর বাড়ির ছাদ ফেলে না রেখে সেখানে সবজি চাষ করে উপার্জন করাও সম্ভব।

এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিকদার হারুন অর রশীদ জানান, বিদ্যালয়ের ছাদবাগানটি মনোরম পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। এখানে শিক্ষার্থীরা কৃষি বিষয়ে হাতে কলমে শিখতে পারছে। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ফুলের চারা নিয়ে গিয়ে নিজ বাড়িতে লাগাচ্ছে।

নওরোজ/এসএইচ