ঢাকা ০২:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
টোল আদায় বন্ধের আশ্বাস

সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের কর্মবিরতি স্থগিত

মো.মুহিবুর রহমান, সিলেট
  • Update Time : ১১:১৯:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৩ Time View

সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের এম.এ খান সেতুতে টোল আদায় বন্ধের দাবিতে ডাকা পরিবহন মালিক শ্রমিকদের কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়েছে।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে কর্মসূচিটি স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা বাস- মিনিবাস সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জুয়েল মিয়া। কর্মসূচি স্থগিতের সঙ্গে সঙ্গে সুনামগঞ্জ থেকে দূরপাল্লার যানবাহন ছেড়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের লামাকাজী নামকস্থানে এম.এ খান সেতুতে টোল আদায় বন্ধের দাবিতে সুনামগঞ্জে সব যানবাহন বন্ধ রেখে বুধবার সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। এতে অচল হয়ে পড়ে জেলা শহর। ভোগান্তিতে পড়েন গন্তব্যে যাওয়া মানুষ। পরে বিষয়টি নিয়ে সুনামগঞ্জের পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের নিয়ে দুপুর ৩টায়  সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে একটি সভা বসে। সভায় এক মাসের মধ্যে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়া হবে জানালে তারা কর্মসূচি স্থগিত করেন।

জেলা বাস-মিনিবাস সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জুয়েল মিয়া জানান, লামকাজি এম.এ খান সেতুটি আর টেন্ডারের আওতায় নিয়ে আসা হবে না বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন বিভাগীয় কমিশনার। সেই সঙ্গে এক মাসের মধ্যে দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে জানালে আমরা আমাদের কর্মসূচি স্থগিত করি।

গত সোমবার জেলার বাসমালিক ও শ্রমিকেরা সংবাদ সম্মেলনে জানান, এই সেতু থেকে নির্মাণ ব্যয়ের কয়েক গুণ রাজস্ব আদায় হয়ে গেছে। এরপরও টোলমুক্ত হচ্ছে না সেতুটি। মূলত সড়ক বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা ও ইজারাদারদের ব্যবসা চালু রাখার জন্যই সেতুটিতে টোল আদায়ের প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। টোল আদায়ের নামে অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে গত ৫ আগস্টের পর সেতুটির টোল প্লাজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন ছাত্র-জনতা। এরপর গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে সেখানে আবার টোল আদায় শুরু করেছে সড়ক বিভাগ। সুযোগে যানবাহন চালকরা বেশী ভাড়া আদায় করেন।

জেলার পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নে সভাপতি সেজাউল কবির বলেন, ‘আমাদের পরিষ্কার কথা, ওই সেতুর টোল আদায় বন্ধ করতে হবে। না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

সেতুটির টোল আদায়কে ইজারাদার ও সড়ক বিভাগের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবসা হিসেবে উল্লেখ করেছেন সুনামগঞ্জ জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ জুয়েল আহমেদ।

পরিবহন ধর্মঘটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েন অনেক যাত্রী। তাদের একজন বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার রায়পুর গ্রামের আবদুল গণি। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে  সিলেটে যাবেন বলে সকালে বাস টার্মিনালে যান। কিন্তু গিয়ে জানতে পারেন, বাস চলবে না। এখন কীভাবে  সিলেট যাবেন, চিন্তায় পড়েছেন।

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাসননগর এলাকার বাসিন্দা শিক্ষার্থী মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকায় যাব বলে বাসের টিকিট নিয়ে রেখেছিলাম। সকালে কাউন্টারে আসার পর বলা হচ্ছে বাস ছাড়বে না। কখন ছাড়বে, সেটিও কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না।’

উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের লামাকাজি এলাকায় রিয়ার অ্যাডমিরাল এম এ খান সেতুর অবস্থান। ১৯৮৪ সালে ৭ কোটি ৬১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মিত হয়। আর ১৯৯০ সালের ৩ আগস্ট থেকে টোল আদায় শুরু হয়। ৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতু থেকে ৪০ বছর ধরে টোল আদায় করা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

টোল আদায় বন্ধের আশ্বাস

সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের কর্মবিরতি স্থগিত

মো.মুহিবুর রহমান, সিলেট
Update Time : ১১:১৯:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪

সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের এম.এ খান সেতুতে টোল আদায় বন্ধের দাবিতে ডাকা পরিবহন মালিক শ্রমিকদের কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়েছে।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে কর্মসূচিটি স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা বাস- মিনিবাস সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জুয়েল মিয়া। কর্মসূচি স্থগিতের সঙ্গে সঙ্গে সুনামগঞ্জ থেকে দূরপাল্লার যানবাহন ছেড়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের লামাকাজী নামকস্থানে এম.এ খান সেতুতে টোল আদায় বন্ধের দাবিতে সুনামগঞ্জে সব যানবাহন বন্ধ রেখে বুধবার সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। এতে অচল হয়ে পড়ে জেলা শহর। ভোগান্তিতে পড়েন গন্তব্যে যাওয়া মানুষ। পরে বিষয়টি নিয়ে সুনামগঞ্জের পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের নিয়ে দুপুর ৩টায়  সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে একটি সভা বসে। সভায় এক মাসের মধ্যে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়া হবে জানালে তারা কর্মসূচি স্থগিত করেন।

জেলা বাস-মিনিবাস সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জুয়েল মিয়া জানান, লামকাজি এম.এ খান সেতুটি আর টেন্ডারের আওতায় নিয়ে আসা হবে না বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন বিভাগীয় কমিশনার। সেই সঙ্গে এক মাসের মধ্যে দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে জানালে আমরা আমাদের কর্মসূচি স্থগিত করি।

গত সোমবার জেলার বাসমালিক ও শ্রমিকেরা সংবাদ সম্মেলনে জানান, এই সেতু থেকে নির্মাণ ব্যয়ের কয়েক গুণ রাজস্ব আদায় হয়ে গেছে। এরপরও টোলমুক্ত হচ্ছে না সেতুটি। মূলত সড়ক বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা ও ইজারাদারদের ব্যবসা চালু রাখার জন্যই সেতুটিতে টোল আদায়ের প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। টোল আদায়ের নামে অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে গত ৫ আগস্টের পর সেতুটির টোল প্লাজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন ছাত্র-জনতা। এরপর গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে সেখানে আবার টোল আদায় শুরু করেছে সড়ক বিভাগ। সুযোগে যানবাহন চালকরা বেশী ভাড়া আদায় করেন।

জেলার পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নে সভাপতি সেজাউল কবির বলেন, ‘আমাদের পরিষ্কার কথা, ওই সেতুর টোল আদায় বন্ধ করতে হবে। না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

সেতুটির টোল আদায়কে ইজারাদার ও সড়ক বিভাগের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবসা হিসেবে উল্লেখ করেছেন সুনামগঞ্জ জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ জুয়েল আহমেদ।

পরিবহন ধর্মঘটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েন অনেক যাত্রী। তাদের একজন বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার রায়পুর গ্রামের আবদুল গণি। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে  সিলেটে যাবেন বলে সকালে বাস টার্মিনালে যান। কিন্তু গিয়ে জানতে পারেন, বাস চলবে না। এখন কীভাবে  সিলেট যাবেন, চিন্তায় পড়েছেন।

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাসননগর এলাকার বাসিন্দা শিক্ষার্থী মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকায় যাব বলে বাসের টিকিট নিয়ে রেখেছিলাম। সকালে কাউন্টারে আসার পর বলা হচ্ছে বাস ছাড়বে না। কখন ছাড়বে, সেটিও কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না।’

উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের লামাকাজি এলাকায় রিয়ার অ্যাডমিরাল এম এ খান সেতুর অবস্থান। ১৯৮৪ সালে ৭ কোটি ৬১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মিত হয়। আর ১৯৯০ সালের ৩ আগস্ট থেকে টোল আদায় শুরু হয়। ৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতু থেকে ৪০ বছর ধরে টোল আদায় করা হচ্ছে।