ঢাকা ০১:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আকাশমনি ও ইউক্যালিপটাস গাছের চারা ধ্বংস নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আয়োজনে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ১-১১’র প্রেক্ষাপট তৈরি করে আ.লীগ কর্তৃত্বশীল শাসকরূপে চিহ্নিত হয় : মাওলানা আবদুল হালিম মাদক বিষাক্ত সাপের মতো ব্যক্তি ও সমাজকে নিঃশেষ করে দেয় জুলাই আন্দোলনের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ শুরু হয়েছিল রংপুর থেকেই: নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যূত্থানে শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহ্ফিল অনুষ্ঠিত স্বৈরাচার পতনে ক্রীড়ানকের ভুমিকা পালন করে আবু সাঈদের মৃত্যু পূর্বাচলে ঘোড়ার মাংসসহ আটক ১ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন বাজেটে বরাদ্দ বেড়েছে গবেষণা খাতে
ডেঙ্গুর প্রকোপ

‘সুদে টাকা নিয়ে ভাইয়ের চিকিৎসা চালাচ্ছি’

স্টাফ রিপোর্টার
  • Update Time : ০৯:০৯:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ২১৫ Time View

রাজধানীর মহাখালীর ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আল আমিন। তিনি সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক।

গাবতলীতে একটি বাসায় স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন। পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি তিনি। তবে গত এক সপ্তাহ জ্বরে ভুগে কোনো কাজ করতে পারেননি।

উলটো হাসপাতালে ঘোরাঘুরি করে খরচ হয়েছে অনেক টাকা। এ অবস্থায় সুদে টাকা ধার নিয়ে আল আমিনের চিকিৎসা চালাচ্ছেন তার ভাই-বোনেরা।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালে গেলে দেখা যায়, আইসিইউর সামনে পাটি পেতে বসে আছেন আল আমিনের স্ত্রী, ভাই ও বোনরা।

তাদের মাথায় রাজ্যের দুশ্চিন্তা। কান্না করছেন স্ত্রী। এমন অবস্থায় কথা হয় আল আমিনের বোন রাবেয়ার সঙ্গে।

তিনি জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি বরিশালের ভোলাতে। আর আল আমিন গাবতলী থাকেন। তাদের পাঁচ ভাই চার বোন।

ভাইদের মধ্যে দুজন অটো চালান, আর বাকি দুজন পোশাক কারখানায় কাজ করেন।

বোনদের মধ্যে একজন পোশাক কারখানায় কাজ করেন। বাকিরা গৃহিণী।

আমিনের বোন রাবেয়া বলেন, আমরা সবাই কষ্ট করে সংসার চালাই। এর মাঝে ভাইয়ের পেছনে প্রায় লাখ টাকার বেশি খরচ হয়ে গেছে।

আল আমিনের এত টাকা নেই। পরিবারের সবাই ধার করে তার চিকিৎসা চালাচ্ছি।

তিনি বলেন, গত সপ্তাহে জ্বর আসার পর ফার্মেসি থেকে ওষুধ এনে খেয়েছিলেন আল আমিন। কিন্তু জ্বর ভালো হয়নি।

এরপর গাবতলীতে একটা ক্লিনিকে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

তবে অবস্থা খারাপ হতে থাকে। এরপর তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানে যাওয়ার পর পেট ফুলে গেছে, পাতলা পায়খানা হচ্ছে, আর দুর্বল হয়ে গেছে। প্রচুর বমি করছিল।

বমির সঙ্গে রক্ত যাচ্ছিলো। সেখান থেকে বলা হয় আইসিইউ লাগবে। সোহরাওয়ার্দীতে বেড খালি না থাকায় ডিএনসিসি হাসপাতালে নিয়ে আসি।

এখানে আনার পর প্লাটিলেট দেওয়া হয়। এখন ভাই আইসিইউতে ভর্তি। জানি না কি হয়।

আক্ষেপ করে রাবেয়া বলেন, আমার ভাই দিনে এনে দিনে খায়। সিএনজি চালায়। ছেলেকে মাদরাসায় পড়াচ্ছে। যেভাবে খরচ বাড়ছে সংসার চালাতেই অবস্থা খারাপ।

এখন তো অসুস্থ হয়ে আয়ও নেই। আমরা ভাই-বোনেরা কেউ সুদে, কেউ বন্ধক রেখে টাকা জোগাড় করেছি। বাকিটা আল্লাহ জানে।

ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছে ১৮ ডেঙ্গুরোগী। বেশিরভাগ রোগীর স্বজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন তারা।

এসব জেলার হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসা না থাকায় তারা ঢাকামুখী।

Please Share This Post in Your Social Media

ডেঙ্গুর প্রকোপ

‘সুদে টাকা নিয়ে ভাইয়ের চিকিৎসা চালাচ্ছি’

স্টাফ রিপোর্টার
Update Time : ০৯:০৯:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

রাজধানীর মহাখালীর ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আল আমিন। তিনি সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক।

গাবতলীতে একটি বাসায় স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন। পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি তিনি। তবে গত এক সপ্তাহ জ্বরে ভুগে কোনো কাজ করতে পারেননি।

উলটো হাসপাতালে ঘোরাঘুরি করে খরচ হয়েছে অনেক টাকা। এ অবস্থায় সুদে টাকা ধার নিয়ে আল আমিনের চিকিৎসা চালাচ্ছেন তার ভাই-বোনেরা।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালে গেলে দেখা যায়, আইসিইউর সামনে পাটি পেতে বসে আছেন আল আমিনের স্ত্রী, ভাই ও বোনরা।

তাদের মাথায় রাজ্যের দুশ্চিন্তা। কান্না করছেন স্ত্রী। এমন অবস্থায় কথা হয় আল আমিনের বোন রাবেয়ার সঙ্গে।

তিনি জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি বরিশালের ভোলাতে। আর আল আমিন গাবতলী থাকেন। তাদের পাঁচ ভাই চার বোন।

ভাইদের মধ্যে দুজন অটো চালান, আর বাকি দুজন পোশাক কারখানায় কাজ করেন।

বোনদের মধ্যে একজন পোশাক কারখানায় কাজ করেন। বাকিরা গৃহিণী।

আমিনের বোন রাবেয়া বলেন, আমরা সবাই কষ্ট করে সংসার চালাই। এর মাঝে ভাইয়ের পেছনে প্রায় লাখ টাকার বেশি খরচ হয়ে গেছে।

আল আমিনের এত টাকা নেই। পরিবারের সবাই ধার করে তার চিকিৎসা চালাচ্ছি।

তিনি বলেন, গত সপ্তাহে জ্বর আসার পর ফার্মেসি থেকে ওষুধ এনে খেয়েছিলেন আল আমিন। কিন্তু জ্বর ভালো হয়নি।

এরপর গাবতলীতে একটা ক্লিনিকে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

তবে অবস্থা খারাপ হতে থাকে। এরপর তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানে যাওয়ার পর পেট ফুলে গেছে, পাতলা পায়খানা হচ্ছে, আর দুর্বল হয়ে গেছে। প্রচুর বমি করছিল।

বমির সঙ্গে রক্ত যাচ্ছিলো। সেখান থেকে বলা হয় আইসিইউ লাগবে। সোহরাওয়ার্দীতে বেড খালি না থাকায় ডিএনসিসি হাসপাতালে নিয়ে আসি।

এখানে আনার পর প্লাটিলেট দেওয়া হয়। এখন ভাই আইসিইউতে ভর্তি। জানি না কি হয়।

আক্ষেপ করে রাবেয়া বলেন, আমার ভাই দিনে এনে দিনে খায়। সিএনজি চালায়। ছেলেকে মাদরাসায় পড়াচ্ছে। যেভাবে খরচ বাড়ছে সংসার চালাতেই অবস্থা খারাপ।

এখন তো অসুস্থ হয়ে আয়ও নেই। আমরা ভাই-বোনেরা কেউ সুদে, কেউ বন্ধক রেখে টাকা জোগাড় করেছি। বাকিটা আল্লাহ জানে।

ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছে ১৮ ডেঙ্গুরোগী। বেশিরভাগ রোগীর স্বজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন তারা।

এসব জেলার হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসা না থাকায় তারা ঢাকামুখী।