ঢাকা ০৯:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভাগ্নে-ভাগ্নিকে গলা কেটে হত্যার দায়ে মামার মৃত্যুদন্ড থমথমে রংপুর: কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের দখলে রাজপথ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ মুক্ত ঘোষণা সিলেট শাবি’র হলে হলে আন্দোলকারীদের তল্লাশী, অস্ত্র উদ্ধার,ক্যাম্পাস না ছাড়ার ঘোষণা মোটরসাইকেল নিয়ে দ্বন্দ্বে ঘরে ঢুকে যুবককে গুলি করে হত্যা, গ্রেপ্তার ২ কোটাবিরোধী আন্দোলন: নোয়াখালীতে যুবদল-ছাত্রদলের ৫ নেতা গ্রেপ্তার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়তে নারাজ শিক্ষার্থীরা পুলিশের ওপর হামলা ও আগুন লাগার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে – আর‌পিএম‌পি ক‌মিশনার কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাঈদের দাফন সম্পন্ন আমার ভাই মরলো কেন! প্রশাসন জবাব চাই’ শ্লোগানে উত্তাল গাইবান্ধা

সিলেট সিটিতে ৫ থেকে ৫০০ গুণ বেড়েছে হোল্ডিং ট্যাক্স, জনমনে ক্ষোভ বাড়ছেই

মো.মুহিবুর রহমান, সিলেট
  • Update Time : ০৪:২০:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪
  • / ১০১ Time View

সিলেট নগরে এক লাফে হোল্ডিং ট্যাক্স (বার্ষিক গৃহকর) ৫ থেকে ৫০০ গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে সিটি করপোরেশন। এতে নগর জুড়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

নতুন নির্ধারিত হোল্ডিং ট্যাক্সকে অয্যেক্তিক ও অনায্য দাবি করে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন নগরের বাসিন্দারা। এমন দাবিতে প্রতিদিনই নগরে বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচিপালন করছে বিভিন্ন সংগঠন।

জানা যায়, পঞ্চবার্ষিক কর পুনর্মূল্যায়নের পর গত ৩০ এপ্রিল হোল্ডিং ট্যাক্সের নতুন তালিকা প্রকাশ করে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। নতুন তালিকায় হোল্ডিং ট্যাক্স আবাসিক ভবনের প্রতি বর্গফুট ৫ টাকা ও বাণিজ্যিক ভবনের প্রতি বর্গফুটের জন্য ৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগে আবাসিক ভবনের প্রতি বর্গফুট তিন টাকা ও বাণিজ্যিক ভবনের প্রতি বর্গফুটের জন্য পাঁচ টাকা নির্ধারিত ছিল; যদিও মেয়রের কাছে আবেদন করে অনেকে এর চেয়ে কম ট্যাক্স দিতেন।

সিটি করপোরেশনের রাজস্ব শাখা সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ সালে মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধান শেষে হোল্ডিং সংখ্যা পুননির্ধারিত হয়। এতে নগরের পুরোনো ২৭টি ওয়ার্ডে হোল্ডিং নির্ধারিত হয় ৭৫ হাজার ৪৩০টি। এসবের ট্যাক্স আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১১৩ কোটি ২৭ লাখ ৭ হাজার ৪০০ টাকা।নতুন হোল্ডিং ট্যাক্স ধার্যের সময় ধরা হয় ২০২১-২২ সাল। সেই করারোপের তালিকাই ৩০ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়েছে। তবে সিটি করপোরেশনে নতুনভাবে যুক্ত হওয়া ১৫টি ওয়ার্ডের হোল্ডিং ওই তালিকায় আসেনি।

সিসিকের রাজস্ব কর্মকর্তারা জানান, নগরের ভবনগুলোর আয়তন ও ধরন অনুযায়ী নতুনভাবে ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এতে কারও আপত্তি থাকলে তারা ১৪ মে পর্যন্ত আবেদন করে জানাতে পারবেন। আবেদন রিভিউ বোর্ডে শুনানির মাধ্যমে যৌক্তিকভাবে নিষ্পত্তি করা হবে। এরপরও রিভিউ বোর্ডের নিষ্পত্তির ওপর কারও আপত্তি থাকলে বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আপিল করার সুযোগ আছে। তবে সিটি করপোরেশনের এই অ্যাসেসমেন্টকে ত্রুটিপূর্ণ ও অযৌক্তিক বলে দাবি করছেন নগরের বাসিন্দারা।

সিলেট নগরের সুবিদবাজার এলাকায় বাসা রাসেল আহমদের। আগে তাকে বছরে হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে হতো ৮০০ টাকা। তবে পুনর্মূল্যায়নের পর তার হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারিত হয়েছে ১ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। ফলে তার হোল্ডিং ট্যাক্স বেড়েছে দুই শ গুণেরও বেশি।এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাসেল আহমদ বলেন, গত ৮/১০ বছরে আমার বাসার কোনো পরিবর্তন হয়নি। একই রকমই আছে। তবু ট্যাক্স দুই শ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা একেবারেই অযৌক্তিক।হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণে সিটি করপোরেশনের অ্যাসেমেন্টকে ত্রুটিপূর্ণ দাবি করে তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে অ্যাসেসমেন্ট করে ট্যাক্স পুনর্র্নিধারণের কথা বলা হলেও আদতে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে যাননি। অফিসে বসেই ইচ্ছে মাফিক তারা কর নির্ধারণ করে দিয়েছেন।কেবল রাসেল আহমদ নয়, এমন অভিযোগ নগরের প্রায় সব ভবন মালিকদেরই। পুননির্ধারিত হোল্ডিং ট্যাক্স সম্পর্কে অবহিত ও আপত্তিগ্রহণ করতে নগর ভবনের সামনে আলাদা বুথ স্থাপন করেছে সিসিক। প্রায় প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ এই বুথে ভিড় করেছেন। তারা সবাই নতুন নির্ধারিত হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছেন। নগরের ২৬ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল হক হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধির হারে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, নগরের প্রায় পৌনে এক লাখ ভবন মালিকের হোল্ডিং ট্যাক্স ৫ থেকে ৫০০ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এটা নগরবাসীর উপর এক ধরনের জুলুম। একলাফে এতটা কর বাড়তে পারে না। এই অনায্য কর বাতিলের দাবি জানান তিনি।হোল্ডিং ট্যাক্সের এই নতুন হার বাতিলের দাবিতে ৩০ এপ্রিলের পর থেকে প্রতিদিনই নগরে বিক্ষোভ প্রতিবাদ করছে বিভিন্ন সংগঠন।

সিটি মেয়রের কাছে স্মারকলিপি দিয়েও এই দাবি জানানো হচ্ছে। সিলেট চেম্বার, মেট্রোপলিটন চেম্বার, সিলেট রিয়েল এস্টেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে পৃথক বিবৃতি দিয়েও হোল্ডিং বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত করে নতুন করে অ্যাসেসমেন্টের দাবি জানানো হয়েছে।

এদিকে নগর কর্তৃপক্ষ বলছে, নতুন হোল্ডিং ট্যাক্স সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর মেয়াদকালেই নির্ধারণ করা হয়। বর্তমান পরিষদ তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এনিয়ে আলোচনা-সমালোচনার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে আসেন আরিফুল হক চৌধুরী। বর্ধিত হোল্ডিং ট্যাক্সের বিষয়ে তার ওপর আনা অভিযোগ প্রসঙ্গে আরিফুল হক বলেন, সিটি করপোরেশনে আমার মেয়াদে নতুন করে হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে করোনা পরিস্থিতি, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি বিবেচনা করে সেটা আর বাস্তবায়ন করা হয়নি। আমি সেটি স্থগিত করেছিলাম। সাবেক মেয়র বলেন, হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানোর আগে সেবাগ্রহীতাদের সাথে আলাপ করা উচিত ছিল। সেক্ষেত্রে গণশুনানি করে হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যথার্থ হতো। তাই বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বর্ধিত হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় স্থগিত করা উচিত।

সব বিষয়ে সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান খান বলেন, নতুন হোল্ডিং নিয়ে কারো আপত্তি থাকলে ১৪ মে পর্যন্ত আপত্তি জানাতে পারবেন। পরে রিভিউ বোর্ডে শুনানির মাধ্যমে তা নিষ্পত্তি করা হবে।

নতুন হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে নগরবাসীকে উদ্বিগ্ন না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘২০১৯-২০ সালে ভবনগুলোর আয়তন ও ধরন অনুযায়ী নতুনভাবে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে হোল্ডিং ট্যাক্সে নিয়ে যদি কোনোরূপ অসংগতি কিংবা অমিল পাওয়া যায়, অবশ্যই ফরম-ডি-এর মাধ্যমে আপত্তি জানিয়ে আবেদন করার ব্যবস্থা রয়েছে। জনগণের ভোগান্তি বা কষ্ট হয়, এমন কোনো কাগজে আমি সাক্ষর করব না। বিষয়টিও নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাব।’

Please Share This Post in Your Social Media

সিলেট সিটিতে ৫ থেকে ৫০০ গুণ বেড়েছে হোল্ডিং ট্যাক্স, জনমনে ক্ষোভ বাড়ছেই

মো.মুহিবুর রহমান, সিলেট
Update Time : ০৪:২০:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪

সিলেট নগরে এক লাফে হোল্ডিং ট্যাক্স (বার্ষিক গৃহকর) ৫ থেকে ৫০০ গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে সিটি করপোরেশন। এতে নগর জুড়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

নতুন নির্ধারিত হোল্ডিং ট্যাক্সকে অয্যেক্তিক ও অনায্য দাবি করে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন নগরের বাসিন্দারা। এমন দাবিতে প্রতিদিনই নগরে বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচিপালন করছে বিভিন্ন সংগঠন।

জানা যায়, পঞ্চবার্ষিক কর পুনর্মূল্যায়নের পর গত ৩০ এপ্রিল হোল্ডিং ট্যাক্সের নতুন তালিকা প্রকাশ করে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। নতুন তালিকায় হোল্ডিং ট্যাক্স আবাসিক ভবনের প্রতি বর্গফুট ৫ টাকা ও বাণিজ্যিক ভবনের প্রতি বর্গফুটের জন্য ৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগে আবাসিক ভবনের প্রতি বর্গফুট তিন টাকা ও বাণিজ্যিক ভবনের প্রতি বর্গফুটের জন্য পাঁচ টাকা নির্ধারিত ছিল; যদিও মেয়রের কাছে আবেদন করে অনেকে এর চেয়ে কম ট্যাক্স দিতেন।

সিটি করপোরেশনের রাজস্ব শাখা সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ সালে মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধান শেষে হোল্ডিং সংখ্যা পুননির্ধারিত হয়। এতে নগরের পুরোনো ২৭টি ওয়ার্ডে হোল্ডিং নির্ধারিত হয় ৭৫ হাজার ৪৩০টি। এসবের ট্যাক্স আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১১৩ কোটি ২৭ লাখ ৭ হাজার ৪০০ টাকা।নতুন হোল্ডিং ট্যাক্স ধার্যের সময় ধরা হয় ২০২১-২২ সাল। সেই করারোপের তালিকাই ৩০ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়েছে। তবে সিটি করপোরেশনে নতুনভাবে যুক্ত হওয়া ১৫টি ওয়ার্ডের হোল্ডিং ওই তালিকায় আসেনি।

সিসিকের রাজস্ব কর্মকর্তারা জানান, নগরের ভবনগুলোর আয়তন ও ধরন অনুযায়ী নতুনভাবে ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এতে কারও আপত্তি থাকলে তারা ১৪ মে পর্যন্ত আবেদন করে জানাতে পারবেন। আবেদন রিভিউ বোর্ডে শুনানির মাধ্যমে যৌক্তিকভাবে নিষ্পত্তি করা হবে। এরপরও রিভিউ বোর্ডের নিষ্পত্তির ওপর কারও আপত্তি থাকলে বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আপিল করার সুযোগ আছে। তবে সিটি করপোরেশনের এই অ্যাসেসমেন্টকে ত্রুটিপূর্ণ ও অযৌক্তিক বলে দাবি করছেন নগরের বাসিন্দারা।

সিলেট নগরের সুবিদবাজার এলাকায় বাসা রাসেল আহমদের। আগে তাকে বছরে হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে হতো ৮০০ টাকা। তবে পুনর্মূল্যায়নের পর তার হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারিত হয়েছে ১ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। ফলে তার হোল্ডিং ট্যাক্স বেড়েছে দুই শ গুণেরও বেশি।এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাসেল আহমদ বলেন, গত ৮/১০ বছরে আমার বাসার কোনো পরিবর্তন হয়নি। একই রকমই আছে। তবু ট্যাক্স দুই শ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা একেবারেই অযৌক্তিক।হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণে সিটি করপোরেশনের অ্যাসেমেন্টকে ত্রুটিপূর্ণ দাবি করে তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে অ্যাসেসমেন্ট করে ট্যাক্স পুনর্র্নিধারণের কথা বলা হলেও আদতে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে যাননি। অফিসে বসেই ইচ্ছে মাফিক তারা কর নির্ধারণ করে দিয়েছেন।কেবল রাসেল আহমদ নয়, এমন অভিযোগ নগরের প্রায় সব ভবন মালিকদেরই। পুননির্ধারিত হোল্ডিং ট্যাক্স সম্পর্কে অবহিত ও আপত্তিগ্রহণ করতে নগর ভবনের সামনে আলাদা বুথ স্থাপন করেছে সিসিক। প্রায় প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ এই বুথে ভিড় করেছেন। তারা সবাই নতুন নির্ধারিত হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছেন। নগরের ২৬ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল হক হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধির হারে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, নগরের প্রায় পৌনে এক লাখ ভবন মালিকের হোল্ডিং ট্যাক্স ৫ থেকে ৫০০ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এটা নগরবাসীর উপর এক ধরনের জুলুম। একলাফে এতটা কর বাড়তে পারে না। এই অনায্য কর বাতিলের দাবি জানান তিনি।হোল্ডিং ট্যাক্সের এই নতুন হার বাতিলের দাবিতে ৩০ এপ্রিলের পর থেকে প্রতিদিনই নগরে বিক্ষোভ প্রতিবাদ করছে বিভিন্ন সংগঠন।

সিটি মেয়রের কাছে স্মারকলিপি দিয়েও এই দাবি জানানো হচ্ছে। সিলেট চেম্বার, মেট্রোপলিটন চেম্বার, সিলেট রিয়েল এস্টেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে পৃথক বিবৃতি দিয়েও হোল্ডিং বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত করে নতুন করে অ্যাসেসমেন্টের দাবি জানানো হয়েছে।

এদিকে নগর কর্তৃপক্ষ বলছে, নতুন হোল্ডিং ট্যাক্স সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর মেয়াদকালেই নির্ধারণ করা হয়। বর্তমান পরিষদ তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এনিয়ে আলোচনা-সমালোচনার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে আসেন আরিফুল হক চৌধুরী। বর্ধিত হোল্ডিং ট্যাক্সের বিষয়ে তার ওপর আনা অভিযোগ প্রসঙ্গে আরিফুল হক বলেন, সিটি করপোরেশনে আমার মেয়াদে নতুন করে হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে করোনা পরিস্থিতি, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি বিবেচনা করে সেটা আর বাস্তবায়ন করা হয়নি। আমি সেটি স্থগিত করেছিলাম। সাবেক মেয়র বলেন, হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানোর আগে সেবাগ্রহীতাদের সাথে আলাপ করা উচিত ছিল। সেক্ষেত্রে গণশুনানি করে হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যথার্থ হতো। তাই বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বর্ধিত হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় স্থগিত করা উচিত।

সব বিষয়ে সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান খান বলেন, নতুন হোল্ডিং নিয়ে কারো আপত্তি থাকলে ১৪ মে পর্যন্ত আপত্তি জানাতে পারবেন। পরে রিভিউ বোর্ডে শুনানির মাধ্যমে তা নিষ্পত্তি করা হবে।

নতুন হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে নগরবাসীকে উদ্বিগ্ন না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘২০১৯-২০ সালে ভবনগুলোর আয়তন ও ধরন অনুযায়ী নতুনভাবে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে হোল্ডিং ট্যাক্সে নিয়ে যদি কোনোরূপ অসংগতি কিংবা অমিল পাওয়া যায়, অবশ্যই ফরম-ডি-এর মাধ্যমে আপত্তি জানিয়ে আবেদন করার ব্যবস্থা রয়েছে। জনগণের ভোগান্তি বা কষ্ট হয়, এমন কোনো কাগজে আমি সাক্ষর করব না। বিষয়টিও নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাব।’