রংপুরে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সমাবেশ
সারাদেশে ধর্ষণ হত্যা-নির্যাতনকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই – সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম

- Update Time : ০৬:০৪:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫
- / ৩৫ Time View
সারাদেশে অব্যাহত নারী-শিশু নির্যাতন,বুলিং ২১শে ফেব্রুয়ারি ভোরে রংপুরের মিঠাপুকুরে চর্তুথ শ্রেনির ছাত্রী ধর্ষণ, মাগুরায় শিশু ধর্ষণ ও হত্যা,বাস ডাকাতিতে ধর্ষণ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থী হেনস্তাকারী নিপীড়ককে চাকুরী থেকে বহিস্কার করাসহ নারীর প্রতি সকল অন্যায়ের প্রতিবাদে ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম রংপুর মহানগরের উদ্যোগে শনিবার (৮ মার্চ) সকাল ১১টায় রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয় সংগঠক মৌসুমি আক্তার মৌ এর সঞ্চালনায় ও রিনা মুরমু’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বাসদ রংপুর জেলা সদস্য সচিব মমিনুল ইসলাম,সংগঠক হীরামনি,বিজয়া মোদক,ছাত্রফ্রন্ট নগর সভাপতি যুগেশ ত্রিপুরা,হুমায়ুন কবির প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস।১৮৫৭ সালে এইদিনে আমেরিকার নিউইয়র্কে সুতা কারখানায় নারী শ্রমিকরা ৮ ঘন্টা কর্মঘণ্টা,মজুরি বৈষম্য,অভিবাসী ও কৃষ্ণাঙ্গ শ্রমিকদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে রাস্তায় নামে।পুলিশ বর্বরোচিত হামলা করে সেই মিছিলে।নিউইয়র্কে এই আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে দেশে দেশে। পরে কমিউনিস্ট নেত্রী ক্লারা জেটকিন দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক নারী সন্মেলে ৮মার্চ নারী দিবস হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব করেন। নারীর মর্যাদা ও সমঅধিকার, সমমজুরি নিশ্চিত করার দাবি ছিল সেদিন।
বক্তারা বলেন,আজকে যখন আমরা নারী দিবস পালন করছি সারাদেশে নারী ধর্ষণ ও নির্যাতনের মাত্র চরম পর্যায়ে। আমরা দেখেছি গণঅভ্যুত্থানে নারীদের বীরোচিত ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই সময় নারীরা সমস্ত অচলায়তন ভেঙে রাজপথে বের হয়ে আসে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গসহ সকল ধরনের বৈষম্য থেকে মুক্তির আকাঙ্খায় শ্রমিক, ছাত্র, নারী, জনতা সকলে গণঅভ্যুত্থানে শামিল হয়েছিল। কিন্তু গণঅভ্যুথানের পর নারীকে আর সেভাবে মূল্যায়ন করা হলো না। বরং আগের যে কোন সময়ের তুলনায় অভ্যুত্থানের পরেই কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে একজন নারীকে পুলিশের উপস্থিতিতে ‘এক দল যুবক’ হেনস্তা মাধ্যমে তার পোশাক ও স্বাধীন চলাফেরাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। কখনো ধর্মীয় মৌলবাদীদের দ্বারা কখনও বা ‘তৌহিদী জনতার’ উচ্ছৃঙ্খল স্রোত দ্বারা। এসব ঘটনার সাথে জড়িত কাউকেই কোন শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। তাহলে কি নিরবতার মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সরকার এ সকল অপতৎপরতাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে? নারীকে নির্যাতন, নিপীড়ন, হেনস্থাধর্ষণ এমনকি হত্যা করেও পার পেয়ে যায়। এসব ঘটনায় অন্তবর্তীকালীন সরকারের নির্লিপ্ততাকে দায়ী করেন। জয়পুরহাট,দিনাজপুর, রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে নারীদের ফুটবল খেলায় বাধা,নারী রিপোর্টারকে ধর্ম উপদেষ্টার মিটিং এ প্রবেশে বাধা দেওয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বেগম রোকেয়া ও কুমিল্লায় নবাব ফয়জুন্নেসার ছবিতে কালি লেপন, নারীদের যত্র-তত্র হেনস্থা করা, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনে আলটিমেটাম দেওয়াসহ নানা রকম নারী বিদ্বেষী কর্মকান্ড চালাচ্ছে কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার এসব বন্ধে এবং দায়ীদের গ্রেফতার ও বিচারের বিষয়ে ভীষণভাবে উদাসীন।
সমাবেশ থেকে বক্তারা আরও বলেন, নারী মুক্তি আন্দোলনের পথিকৃত মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়ার ‘সুলতানার স্বপ্ন’ আজ সারা বিশ্বে সমাদৃত। স্প্যানিশ সিনেমা নির্মিত হয়েছে। বেগম রোকেয়ার জীবন সংগ্রাম, কর্ম ও লেখনী নিয়ে বিশ্বে গবেষণা হচ্ছে। যেখানে সারা বিশ্বব্যাপী বেগম রোকেয়াকে সম্মান জানানো হচ্ছে। সেখানে তারই জন্মভূমিতে তার ছবিতে কালি লেপন ও তার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের দাবি ভীষণভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে রংপুরসহ সারাদেশে সংগঠিত অপরাধের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়