ঢাকা ০৫:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাভারে অজ্ঞাত যুবক হত্যার রহস্য উন্মোচন; মূল হোতাসহ গ্রেফতার ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৭:২১:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৬৪ Time View
সাভারের রাজফুলবাড়ীয়ায় অজ্ঞাত যুবক হত্যার রহস্য উন্মোচনসহ ঘটনার সাথে জড়িত মূল হোতাসহ ৩ জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই ঢাকা জেলা।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন ১। আসামী মোঃ রবিউল হাসান হৃদয় (২০), ২। আসামী শেখ ফয়সাল আহম্মেদ (২২) এবং আসামী ৩। স্বরণ সরকার (২২)।
ভিকটিম রুদ্র হাসান রুদ্র (১৮), ঢাকা জেলার সাভার থানাধীন রাজফুলবাড়ীয়াস্থ পানপাড়ায় তার নানী ও মামার সাথে বসবাস করত এবং রাজমিস্ত্রীর জোগালীর কাজ করত।
গত ১৯/১২/২৪ খ্রি. তারিখ বিকাল অনুমান ০৩.০০ ঘটিকায় পর থেকে ভিকটিম বাড়িতে না আসায় তার পরিবার বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকে। পরবর্তীতে ভিকটিমের মামা জানতে পারেন যে, ভিকটিমকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা সাভার থানাধীন রাজফুলবাড়ীয়াস্থ পানপাড়া ধলেশ্বরী নদীর পাড় থেকে নৌকায় উঠায় এবং ভিকটিমসহ তারা আনন্দ ফুর্তি করতে থাকে।
গত ২১/১২/২০২৪ তারিখ বিকাল অনুমান ০৩.৩০ ঘটিকায় সাভার থানাধীন রাজফুলবাড়ীয়াস্থ পানপাড়া বউবাজার এর পশ্চিম পার্শ্বের ধলেশ্বরী নদীর পাড়ে ভিকটিমের লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন ভিকটিমের মামাসহ তার পরিবারকে সংবাদ দিলে ভিকটিমের মামা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভিকটিমের লাশ সনাক্ত করে।
এই ঘটনায় ভিকটিমের মামা মোঃ ইউসুফ আলী (২৬) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানার মামলা নং- ৪৯, তাং-৩০/১২/২০২৪ ইং, ধারা- ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড দায়ের করলে সাভার মডেল থানা পুলিশ মামলাটির তদন্ত শুরু করে। মামলার ঘটনার রহস্য উদঘাটন না হওয়ায়, সাভার মডেল থানা পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলাটির তদন্তভার পিবিআইতে হস্থান্তর করা হলে পিবিআই ঢাকা জেলা মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে।
পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি (চলতি দায়িত্বে) জনাব মোঃ মোস্তফা কামাল এর দিকনিদের্শনায় এবং পিবিআই, ঢাকা জেলার ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার জনাব জনাব মোঃ কুদরত-ই-খুদা এর সার্বিক তত্ত্বাবধান ও সহযোগিতায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) মোঃ ইমরান আহমেদ এর নেত্বত্বে  পিবিআই ঢাকা জেলার চৌকষ অভিযানিক টিম গত ৩১/১২/২০২৪ তারিখ সময়- ২৩.৩০ ঘটিকায় ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে মূল অপরাধী ১। মোঃ রবিউল হাসান হৃদয় (২০), পিতা- মোঃ দুলাল, মাতা- রোজিনা বেগম, সাং- রাজফুলবাড়ীয়া (পানপাড়া), থানা- সাভার, জেলা- ঢাকা কে রাজফুলবাড়ীয়া পানপাড়াস্থ তার নিজ বাসা হতে এবং সন্দিগ্ধ আসামী ২। শেখ ফয়সাল আহম্মেদ (২২), পিতা- মোঃ নাসির উদ্দিন, মাতা- মোসাঃ হালিমা বেগম, সাং- রাজাঘাট, পোঃ- ফুলবাড়ীয়া, থানা- সাভার মডেল, জেলা- ঢাকা কে তার ভাইয়ের শ্বশুর বাড়ি আশুলিয়া থানাধীন মির্জানগর, নবীনগর এলাকা হইতে গ্রেফতার করেন।
গত ০১/০১/২০২৫ তারিখ গ্রেফতারকৃত আসামী ১। মোঃ রবিউল হাসান হৃদয় (২০) এবং ২। শেখ ফয়সাল আহম্মেদ (২২) কে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ এর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানন্দি প্রদান করে।
দুইজনের প্রদত্ত ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি পর্যালোচনায়, ঘটনার সাথে স্বরণ (২২) এবং নাহিদ (২৩) নামের আরো ২ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। গত ০৩/০১/২০২৫ তারিখ রাত্রি ০২.৩০ ঘটিকায় আসামী ১। স্বরণ সরকার (২২), পিতা- শ্রী চরণ সরকার, মাতা- সবিতা সরকার, সাং- রাজাঘাট, থানা- সাভার, জেলা- ঢাকাকে সাভারের রাজফুলবাড়ীয়াস্থ রাজাঘাট এলাকাস্থ আসামীর নিজ বাসা হতে গ্রেফতার করা হয়। গত ০৩/০১/২০২৫ তারিখ তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামী  স্বরণ সরকার আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
আসামীদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনায় এবং তদন্তে জানা যায় যে, গত ১৯/১২/২০২৪ তারিখ হৃদয় নামে স্থানীয় কিশোর গ্যাং এর লিডার, মাদকসেবী মোঃ রবিউল হাসান হৃদয় (২২) সহ অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জন যুবক ভিকটিমকে রাজফুলবাড়ীয়া ধলেশ্বরী নদীতে নৌকা চালানোর জন্য নিয়ে যায়। ঐ নৌকাতে ভিকটিম ও অন্যান্য আসামীগণ মাদকসেবন করে। মাদকসেবন অবস্থায় ভিকটিম নদীতে পড়ে যায়।
ভিকটিম নৌকায় উঠার জন্য আসামীদের নিকট সাহায্য চাইলে আসামী মোঃ রবিউল হাসান হৃদয় (২০) মাদকের টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে পূর্বশত্রুতার জেরে পানিতে থাকাবস্থায় নৌকার বৈঠা দিয়ে ভিকটিমের মাথায়, নাকে, মুখে ও ঘাড়ে আঘাত করে এবং ভিকটিমকে পানি থেকে নৌকায় উঠিয়ে জোরপূর্বক দেশী মদ খাইয়ে নদীর পানিতে ডুবিয়ে রেখে চলে যায়।
এ ঘটনায় গত ০৪/০১/২০২৫ তারিখ ঘটনাস্থলে থেকে আসামীদের ব্যবহৃত নৌকার বৈঠা জব্দ করা হয়।
উল্লেখ্য যে, উপরোক্ত সকল আসামী তাদের এলাকায় কিশোর গ্যাং এর সদস্য এবং মাদকসেবী হিসেবে পরিচিত। এদের মধ্যে ০১ নং আসামী হৃদয় স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের লিডার ও মাদকসেবী। মূলত মাদক বিক্রির টাকার ভাগ বাটোয়ারার জের ধরেই ভিকটিম রুদ্র হাসান রুদ্র (১৮) কে আসামী রবিউল হাসান হৃদয় (২০) অপর আসামীদের সহযোগিতায় হত্যা করে।

Please Share This Post in Your Social Media

সাভারে অজ্ঞাত যুবক হত্যার রহস্য উন্মোচন; মূল হোতাসহ গ্রেফতার ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক
Update Time : ০৭:২১:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫
সাভারের রাজফুলবাড়ীয়ায় অজ্ঞাত যুবক হত্যার রহস্য উন্মোচনসহ ঘটনার সাথে জড়িত মূল হোতাসহ ৩ জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই ঢাকা জেলা।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন ১। আসামী মোঃ রবিউল হাসান হৃদয় (২০), ২। আসামী শেখ ফয়সাল আহম্মেদ (২২) এবং আসামী ৩। স্বরণ সরকার (২২)।
ভিকটিম রুদ্র হাসান রুদ্র (১৮), ঢাকা জেলার সাভার থানাধীন রাজফুলবাড়ীয়াস্থ পানপাড়ায় তার নানী ও মামার সাথে বসবাস করত এবং রাজমিস্ত্রীর জোগালীর কাজ করত।
গত ১৯/১২/২৪ খ্রি. তারিখ বিকাল অনুমান ০৩.০০ ঘটিকায় পর থেকে ভিকটিম বাড়িতে না আসায় তার পরিবার বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকে। পরবর্তীতে ভিকটিমের মামা জানতে পারেন যে, ভিকটিমকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা সাভার থানাধীন রাজফুলবাড়ীয়াস্থ পানপাড়া ধলেশ্বরী নদীর পাড় থেকে নৌকায় উঠায় এবং ভিকটিমসহ তারা আনন্দ ফুর্তি করতে থাকে।
গত ২১/১২/২০২৪ তারিখ বিকাল অনুমান ০৩.৩০ ঘটিকায় সাভার থানাধীন রাজফুলবাড়ীয়াস্থ পানপাড়া বউবাজার এর পশ্চিম পার্শ্বের ধলেশ্বরী নদীর পাড়ে ভিকটিমের লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন ভিকটিমের মামাসহ তার পরিবারকে সংবাদ দিলে ভিকটিমের মামা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভিকটিমের লাশ সনাক্ত করে।
এই ঘটনায় ভিকটিমের মামা মোঃ ইউসুফ আলী (২৬) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানার মামলা নং- ৪৯, তাং-৩০/১২/২০২৪ ইং, ধারা- ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড দায়ের করলে সাভার মডেল থানা পুলিশ মামলাটির তদন্ত শুরু করে। মামলার ঘটনার রহস্য উদঘাটন না হওয়ায়, সাভার মডেল থানা পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলাটির তদন্তভার পিবিআইতে হস্থান্তর করা হলে পিবিআই ঢাকা জেলা মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে।
পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি (চলতি দায়িত্বে) জনাব মোঃ মোস্তফা কামাল এর দিকনিদের্শনায় এবং পিবিআই, ঢাকা জেলার ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার জনাব জনাব মোঃ কুদরত-ই-খুদা এর সার্বিক তত্ত্বাবধান ও সহযোগিতায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) মোঃ ইমরান আহমেদ এর নেত্বত্বে  পিবিআই ঢাকা জেলার চৌকষ অভিযানিক টিম গত ৩১/১২/২০২৪ তারিখ সময়- ২৩.৩০ ঘটিকায় ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে মূল অপরাধী ১। মোঃ রবিউল হাসান হৃদয় (২০), পিতা- মোঃ দুলাল, মাতা- রোজিনা বেগম, সাং- রাজফুলবাড়ীয়া (পানপাড়া), থানা- সাভার, জেলা- ঢাকা কে রাজফুলবাড়ীয়া পানপাড়াস্থ তার নিজ বাসা হতে এবং সন্দিগ্ধ আসামী ২। শেখ ফয়সাল আহম্মেদ (২২), পিতা- মোঃ নাসির উদ্দিন, মাতা- মোসাঃ হালিমা বেগম, সাং- রাজাঘাট, পোঃ- ফুলবাড়ীয়া, থানা- সাভার মডেল, জেলা- ঢাকা কে তার ভাইয়ের শ্বশুর বাড়ি আশুলিয়া থানাধীন মির্জানগর, নবীনগর এলাকা হইতে গ্রেফতার করেন।
গত ০১/০১/২০২৫ তারিখ গ্রেফতারকৃত আসামী ১। মোঃ রবিউল হাসান হৃদয় (২০) এবং ২। শেখ ফয়সাল আহম্মেদ (২২) কে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ এর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানন্দি প্রদান করে।
দুইজনের প্রদত্ত ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি পর্যালোচনায়, ঘটনার সাথে স্বরণ (২২) এবং নাহিদ (২৩) নামের আরো ২ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। গত ০৩/০১/২০২৫ তারিখ রাত্রি ০২.৩০ ঘটিকায় আসামী ১। স্বরণ সরকার (২২), পিতা- শ্রী চরণ সরকার, মাতা- সবিতা সরকার, সাং- রাজাঘাট, থানা- সাভার, জেলা- ঢাকাকে সাভারের রাজফুলবাড়ীয়াস্থ রাজাঘাট এলাকাস্থ আসামীর নিজ বাসা হতে গ্রেফতার করা হয়। গত ০৩/০১/২০২৫ তারিখ তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামী  স্বরণ সরকার আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
আসামীদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনায় এবং তদন্তে জানা যায় যে, গত ১৯/১২/২০২৪ তারিখ হৃদয় নামে স্থানীয় কিশোর গ্যাং এর লিডার, মাদকসেবী মোঃ রবিউল হাসান হৃদয় (২২) সহ অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জন যুবক ভিকটিমকে রাজফুলবাড়ীয়া ধলেশ্বরী নদীতে নৌকা চালানোর জন্য নিয়ে যায়। ঐ নৌকাতে ভিকটিম ও অন্যান্য আসামীগণ মাদকসেবন করে। মাদকসেবন অবস্থায় ভিকটিম নদীতে পড়ে যায়।
ভিকটিম নৌকায় উঠার জন্য আসামীদের নিকট সাহায্য চাইলে আসামী মোঃ রবিউল হাসান হৃদয় (২০) মাদকের টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে পূর্বশত্রুতার জেরে পানিতে থাকাবস্থায় নৌকার বৈঠা দিয়ে ভিকটিমের মাথায়, নাকে, মুখে ও ঘাড়ে আঘাত করে এবং ভিকটিমকে পানি থেকে নৌকায় উঠিয়ে জোরপূর্বক দেশী মদ খাইয়ে নদীর পানিতে ডুবিয়ে রেখে চলে যায়।
এ ঘটনায় গত ০৪/০১/২০২৫ তারিখ ঘটনাস্থলে থেকে আসামীদের ব্যবহৃত নৌকার বৈঠা জব্দ করা হয়।
উল্লেখ্য যে, উপরোক্ত সকল আসামী তাদের এলাকায় কিশোর গ্যাং এর সদস্য এবং মাদকসেবী হিসেবে পরিচিত। এদের মধ্যে ০১ নং আসামী হৃদয় স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের লিডার ও মাদকসেবী। মূলত মাদক বিক্রির টাকার ভাগ বাটোয়ারার জের ধরেই ভিকটিম রুদ্র হাসান রুদ্র (১৮) কে আসামী রবিউল হাসান হৃদয় (২০) অপর আসামীদের সহযোগিতায় হত্যা করে।