ঢাকা ০৯:৪৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
নোয়াখালীতে বিএনপির এক পক্ষের মানববন্ধনে অপর পক্ষের বাধা, সংঘর্ষে আহত ৫ তিস্তাসহ ৫৪টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে বাসদের স্মারকলিপি পেশ কুবি ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র ডাউনলোডের সময় বৃদ্ধি বাসা থেকে প্রবেশপত্র আনতে ও পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে পৌঁছে দি‌য়ে সহায়তা ক‌র‌লেন মান‌বিক পুলিশ ফেসবুকে ইসরাইলী পণ্য বিক্রির গুজব, নিরাপত্তাহীনতায় মালিক-কর্মচারীরা টঙ্গীর শীর্ষ সন্ত্রাসী সৈকতসহ ছয় সহযোগী গ্রেফতার জবিতে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচি, মার্কিন ও সৌদি দূতাবাসে স্মারকলিপি প্রদান অতিরিক্ত শুল্কে মার্কিন নাগরিকদের ক্ষতি বেশি রংপুরে বিএনপিকর্মী নিহত, সাবেক এমপিসহ ৮ নেতার নামে মামলা গাজায় সাংবাদিকসহ গণহত্যা বন্ধের দাবিতে রংপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ

সাবেক সেনাপ্রধান বীর উত্তম কে এম সফিউল্লাহ মারা গেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৩:১৪:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৪৩ Time View

মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল বীর উত্তম কে এম সফিউল্লাহ মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন)।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকাল পৌনে ৯টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।

কে এম সফিউল্লাহর ব্যক্তিগত সহকারী জিয়াউর রহমান মনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মরহুমের প্রথম জানাজা বাদ জোহর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে কাজী আবদুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এবং দ্বিতীয় জানাজা বাদ আসর ঢাকা সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

কে এম সফিউল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েড, ফ্যাটি লিভারসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। তিনি স্ট্রেচারে চলাফেরা করতেন।

সাবেক এই সেনাপ্রধানের জন্ম ১৯৩৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে। ১৯৭১ সালে সফিউল্লাহ ছিলেন জয়দেবপুরে দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের দ্বিতীয় প্রধান। তার নেতৃত্বেই ওই রেজিমেন্টের বাঙালি সৈন্যরা বিদ্রোহ করেন।

স্বাধীনতা-পরবর্তী ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। পরে মালয়েশিয়া, কানাডা, সুইডেন ও ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।

১৯৯১ সালে দেশে ফিরলে তাকে এক বছর ওএসডি করে রাখা হয়। পরের বছর তিনি স্বেচ্ছায় অবসরে যান। ১৯৯৫ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং ১৯৯৬ সালে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে নারায়ণগঞ্জ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে প্রথম দিকে কে এম সফিউল্লাহ ৩ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন। পরে তিনটি নিয়মিত আর্মি ব্রিগেড (ফোর্স নামে পরিচিত) গঠিত হলে ‘এস’ ফোর্সের নেতৃত্বে আসেন। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ‘বীর উত্তম’ খেতাব পান।

মুক্তিযুদ্ধের জীবিত সেক্টর কমান্ডাদের নিয়ে ২০০৭ সালে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম গঠিত হলে সফিউল্লাহ ছিলেন সংগঠনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। পরে তিনি এ সংগঠনের চেয়ারম্যান হন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একদল সেনাসদস্যের হাতে যখন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে হত্যার শিকার হন, সফিউল্লাহ তখন সেনাপ্রধানের দায়িত্বে ছিলেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যার পর খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে গঠিত সরকারের প্রতি আনুগত্যও প্রকাশ করেছিলেন কে এম সফিউল্লাহ। যদিও এর কয়েকদিন পরই তাকে সেনাপ্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

 

Please Share This Post in Your Social Media

সাবেক সেনাপ্রধান বীর উত্তম কে এম সফিউল্লাহ মারা গেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
Update Time : ০৩:১৪:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫

মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল বীর উত্তম কে এম সফিউল্লাহ মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন)।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকাল পৌনে ৯টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।

কে এম সফিউল্লাহর ব্যক্তিগত সহকারী জিয়াউর রহমান মনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মরহুমের প্রথম জানাজা বাদ জোহর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে কাজী আবদুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এবং দ্বিতীয় জানাজা বাদ আসর ঢাকা সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

কে এম সফিউল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েড, ফ্যাটি লিভারসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। তিনি স্ট্রেচারে চলাফেরা করতেন।

সাবেক এই সেনাপ্রধানের জন্ম ১৯৩৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে। ১৯৭১ সালে সফিউল্লাহ ছিলেন জয়দেবপুরে দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের দ্বিতীয় প্রধান। তার নেতৃত্বেই ওই রেজিমেন্টের বাঙালি সৈন্যরা বিদ্রোহ করেন।

স্বাধীনতা-পরবর্তী ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। পরে মালয়েশিয়া, কানাডা, সুইডেন ও ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।

১৯৯১ সালে দেশে ফিরলে তাকে এক বছর ওএসডি করে রাখা হয়। পরের বছর তিনি স্বেচ্ছায় অবসরে যান। ১৯৯৫ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং ১৯৯৬ সালে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে নারায়ণগঞ্জ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে প্রথম দিকে কে এম সফিউল্লাহ ৩ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন। পরে তিনটি নিয়মিত আর্মি ব্রিগেড (ফোর্স নামে পরিচিত) গঠিত হলে ‘এস’ ফোর্সের নেতৃত্বে আসেন। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ‘বীর উত্তম’ খেতাব পান।

মুক্তিযুদ্ধের জীবিত সেক্টর কমান্ডাদের নিয়ে ২০০৭ সালে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম গঠিত হলে সফিউল্লাহ ছিলেন সংগঠনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। পরে তিনি এ সংগঠনের চেয়ারম্যান হন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একদল সেনাসদস্যের হাতে যখন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে হত্যার শিকার হন, সফিউল্লাহ তখন সেনাপ্রধানের দায়িত্বে ছিলেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যার পর খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে গঠিত সরকারের প্রতি আনুগত্যও প্রকাশ করেছিলেন কে এম সফিউল্লাহ। যদিও এর কয়েকদিন পরই তাকে সেনাপ্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।