সহজ শর্তে লোন করিয়ে দেওয়ার নামে দুই কোটি টাকা আত্নসাৎ, গ্রেফতার-২

- Update Time : ০৫:০৮:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
- / ৮৬ Time View
সহজ শর্তে বিদেশি ব্যাংক থেকে লোন করিয়ে দেওয়ার নামে ২ কোটি ৬ লক্ষ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতারসহ প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করেছে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর)।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন মোঃ সফিকুল ইসলাম এবং ডঃ সিপার আহমেদ।
দিনাজপুর জেলার চিলাহাটি থানার এম. এইচ. ব্রিক ফিল্ড এবং অটো রাইস মিলের মালিক মোঃ নুর আমিন শাহকে ৫% সুদে বিনা ডকুমেন্টে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লোন করিয়ে দেওয়ার নামে প্রতারক চক্র মিথ্যা নাটক ও প্রতারণার ফাঁদে ফেলে ২,০৬,০০,০০০/- (দুই কোটি ছয় লক্ষ) টাকা হাতিয়ে নেয়। এই ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে প্রতারক চক্রের তিন সদস্যের বিরুদ্ধে ডিএমপি বনানী থানায় মামলা করেন।
গত ১৯ জুন তারিখে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। মোঃ সফিকুল ইসলামকে ঢাকার পল্লবী থানা এলাকার নিজ ভাড়া বাসা থেকে এবং ডঃ সিপার আহমেদকে বনানী থানা এলাকার নিজ ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতার করে।
তাদের হেফাজত হতে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ০৪টি মোবাইল, ০১টি কালো রঙের টয়োটা ক্লুগা প্রাইভেট কার(টয়োটা ক্লুগার), ০৮টি সিমকার্ড, ভিকটিমের সঙ্গে কথোপকথনের ভয়েস রেকর্ড, নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে প্রস্তুতকৃত ০৬টি ভুয়া চুক্তিপত্র এবং অগ্রণী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংকের ১৩টি চেক জব্দ করা হয়।
পিবিআই-এর তদন্ত এবং গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভুক্তভোগী মোঃ নুর আমিন শাহ দিনাজপুর জেলার চিলাহাটি থানার এম. এইচ. ব্রিক ফিল্ড ও অটো রাইস মিলের মালিক। ব্যবসার সুবাদে পরিচিত ব্যবসায়ী খন্দকার শাহ আলমের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং ব্যবসা সম্প্রসারণে অর্থসংক্রান্ত সমস্যার বিষয়ে তিনি শাহ আলমকে জানান।
খন্দকার শাহ আলম তার পরিচিত আসামি মোঃ সফিকুল ইসলামকে ব্যাংকের বড় কর্মকর্তা পরিচয়ে পরিচয় করিয়ে দেন, যিনি দাবি করেন, লঙ্কাবাংলা ও ব্র্যাক ব্যাংকসহ বিদেশি ব্যাংক থেকে ৫০ কোটি টাকা লোন করে দিতে পারবেন।
ভুক্তভোগী এবং খন্দকার শাহ আলম ঢাকায় এসে শেরাটন হোটেলের লবিতে সফিকুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করেন, যিনি তখন তাকে তার বস ডঃ সিপার আহমেদকে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। যদিও বাস্তবে তিনি বেসিক ব্যাংক ও প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত।
তারা দাবি করেন, ২% কমিশন ও নানাবিধ খরচ দিলে তারা বিদেশি ব্যাংক থেকে লোন করিয়ে দিতে পারবেন। বনানীর মহাখালী আমতলী পর্যটন হোটেলের ক্যান্টিনে বসে প্রথমে নগদ ১০ লক্ষ টাকা, পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ধাপে নগদ ৭৬ লক্ষ টাকা এবং ব্যাংকের মাধ্যমে ১ কোটি ২ লক্ষ টাকা ও বিকাশ/নগদে ২৬ লক্ষ টাকা নিয়ে মোট ২ কোটি ৬ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে।
বিশ্বাস স্থাপন করতে আসামিরা ১ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকার ১৩টি চেক প্রদান করে এবং নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্র করে। এছাড়া, জাইকা থেকে ৭ কোটি টাকা অনুদান এনে দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে আরও ৮টি চেক নেয়।
এ বিষয়ে জনাব মোঃ এনায়েত হোসেন মান্নান পিপিএম-সেবা বলেন, “আমরা আসামিদ্বয়ের বিরুদ্ধে অভিনব কৌশলে প্রতারণা করে ২ কোটি ৬ লক্ষ টাকা আত্মসাতের সত্যতা পেয়েছি এবং তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং এতে আর কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়