ঢাকা ১০:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভাগ্নে-ভাগ্নিকে গলা কেটে হত্যার দায়ে মামার মৃত্যুদন্ড থমথমে রংপুর: কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের দখলে রাজপথ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ মুক্ত ঘোষণা সিলেট শাবি’র হলে হলে আন্দোলকারীদের তল্লাশী, অস্ত্র উদ্ধার,ক্যাম্পাস না ছাড়ার ঘোষণা মোটরসাইকেল নিয়ে দ্বন্দ্বে ঘরে ঢুকে যুবককে গুলি করে হত্যা, গ্রেপ্তার ২ কোটাবিরোধী আন্দোলন: নোয়াখালীতে যুবদল-ছাত্রদলের ৫ নেতা গ্রেপ্তার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়তে নারাজ শিক্ষার্থীরা পুলিশের ওপর হামলা ও আগুন লাগার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে – আর‌পিএম‌পি ক‌মিশনার কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাঈদের দাফন সম্পন্ন আমার ভাই মরলো কেন! প্রশাসন জবাব চাই’ শ্লোগানে উত্তাল গাইবান্ধা

সরকারের সময় নির্ধারণ করবে জনগণ: ওবায়দুল কাদের

Reporter Name
  • Update Time : ০৮:২১:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ মে ২০২৩
  • / ২০৮ Time View

শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত জাতীয় ওলামা লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন আওয়াম লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ছবি : সংগৃহীত

বিএনপির সরকার পতনের ঝড় লন্ডন থেকে না ঠাকুরগাঁও থেকে আসবে তার দিনক্ষণ প্রকাশ করতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন,সরকারের সময় কখন শেষ হবে তা নির্ধারণ করবে এদেশের জনগণ।

শনিবার (২০মে) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ওলামা লীগের প্রথম ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আন্দোলনের ঝড়ে সরকারের পতন হবে বিএনপি মহাসচিবের এমন মন্তেব্যর তীব্র সমালোচনা করেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, সেই ঝড় কোথা থেকে আসবে ঠাকুরগাঁও থেকে, নাকি লন্ডন থেকে। কত নম্বর বিপদ সংকেত হবে। কতদিন বাকি রইল সরকারের সেটাও জানান।

তিনি আরও বলেন, দেখতে দেখতে ১৪ বছর, ঝড় হবে কোন বছর। দেখতে দেখতে ১৪ বছর, সরকার যাবে কোন বছর। গত ১০ বছর ধরে ঝড়ের কথা শুনছি। আর সময় নেই, সরকারের সময় নাই। একে একে এত কর্মসূচি পালন করলেন। এত চিল্লাপাল্লা করছেন। প্রতিদিনই বলছেন সরকারের পতন ঘটবে। সরকারের পরিবর্তন হবে কিনা, এটা নির্ধারণ করবে আল্লাহ, এ দেশের জনগণ। আমাদের ঈমান ঠিক আছে।

তিনি বলেন, সরকারকে কবে বিদায় নিতে হবে- তার দিনক্ষণ জানা থাকলে বিদায় নিতে একটি প্রস্তুতিও নিতে পারবে সরকার। বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিদিনই বলা হচ্ছে যে- সরকারের সময় শেষ। তাই, দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি মির্জা ফখরুলের কাছে জানতে চাই দিনটা কখন। গত ১০ বছর ধরেই এই কথা শুনে আসছি।

বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শক্তিও তুলে ধরেন দলের সাধারণ সম্পাদক। বলেন, আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক গভীরে। ক্ষমতাসীন দল পাতার ওপর ভোরের শিশির বিন্দুর নয় যে টোকা লাগলে পড়ে যাবে। যদি এমনটা মনে করেন তাহলে ভুল করবেন।

বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপির এখন পথ হারা পথিক এর মতো। বারবার বৈঠক করেও আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপরেখা ঠিক করতে পারছে না।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আরও ঐক্যবদ্ধ থাকতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগেরে এই জ্যেষ্ঠ নেতা। বলেন, সংগঠনের মধ্যে দলাদলি করবেন না। কর্মসূচি পালনের নামে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি করবেন না। আপনাদের যদি টাকা-পয়সার প্রয়োজন হয় তাহলে আমাকে বলবেন। আমি নেত্রীকে বলব, তিনি আপনাদের বিষয়টা দেখবেন। কিন্তু চাঁদাবাজি করে বদনাম কামাবেন না। ওলামা লীগকে একটি সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত ও বঙ্গবন্ধুর নীতি আদর্শের প্রতি অনুগত, শেখ হাসিনার আদর্শের পরীক্ষিত সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। ত্যাগীদের মূল্যায়ন করে কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।

সম্মেলন কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল মমিন সিরাজী সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন হাফেজ মাওলানা মিজানুর রহমান। এর আগে পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

ওলামা লীগকে স্বীকৃতি দিয়েছে আওয়ামী লীগ

এদিকে, ওলামা লীগকে স্বীকৃতি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে তাদের সহযোগী সংগঠন করা হবে নাকি সমমনা সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে সেটা ঠিক করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই তথ্য জানিয়েছেন।

কাদের বলেন, আওয়ামী ওলামা লীগের একটি ইচ্ছে ছিল যে সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠিত হবে। তার জন্য সময় লেগেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আজ তা সম্ভব হয়েছে। আমি ১০১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিচ্ছি যাতে ত্যাগী ও সিনিয়র নেতারা স্থান পাবেন।

তিনি বলেন, কমিটিতে যেন বাস্তবতার ও রাজনৈতিক আদর্শের প্রতিফলন থাকে। নেতাদের অবশ্যই দলীয় শৃঙ্খলায় আসতে হবে। ওয়ান ইলেভেনের সময় রাজপথে ওলামা লীগের কার্যক্রম ছিল চোখে পড়ার মতো। মাঝে কিছুটা স্বেচ্ছাচারিতা দেখা গিয়েছিল। তবে সেসব কাটিয়ে উঠে যেন একটি যোগ্য কমিটি তৈরি হয়। দলাদলি করে বদনাম কামাবেন না। এসব করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নব্বইয়ের দশকে ওলামা লীগের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৬ সালের পর থেকে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের সক্রিয়তা বাড়তে দেখা যায়। এরমধ্যেই অনেক ভাগে বিভক্ত হয়ে নানা ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডেও জড়ানোর অভিযোগ ওঠে এর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে ওলামা লীগ নামে কোনও সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক নেই দাবি করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় আওয়ামী লীগ। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের স্বীকৃতি দিলো ক্ষমতাসীন দলটি।

ওলামা লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের ছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান। দুই নেতাই তাদের বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ওলামা লীগের নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড হয়েছে। কিন্তু এখন থেকে একে আমরা একটি সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত নীতি আদর্শের প্রতি অনুগত বঙ্গবন্ধুর সত্যিকারের সৈনিক সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সংগঠনটি নেতাকর্মীদের দলাদলি ও চাঁদাবাজি বন্ধ করারও নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

ওলামা লীগ দীর্ঘদিন রাজপথের আন্দোলনে ছিল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, পুলিশের আক্রমণের মুখেও রাজপথ ছাড়েননি এবং নেত্রী যে নির্দেশ দিয়েছেন সেই নির্দেশ তারা অমান্য করেননি। দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল, তারা সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠিত হবে। সময় লেগেছে, তবে তাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশে এই সম্মেলন হচ্ছে।

ওলামা লীগের কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগের আদর্শিক রাজনীতি প্রতিফলিত হবে বলেও মনে করেন ওবায়দুল কাদের। ঢাকা মহানগরে দুটিসহ সারাদেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সংগঠনটির কমিটি গঠনের কথা বলেন কাদের।

ওলামা লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, দলদলি করবেন না। বদনাম কামাবেন না। ওলামা লীগের নামে চাঁদাবাজি করবেন না। বদনাম যেন না হয়। প্রোগ্রাম করবেন, পয়সা না থাকলে আমাকে বলবেন। নেত্রীকে আমি বলবো। আপনাদের খরচ যেটা প্রয়োজনীয় সেটা নেত্রীই বহন করবেন। কিন্তু আপনারা চাঁদাবাজি করে দুর্নাম কামাবেন না। এটা অতীতের অনেকেই করেছে। আপনার খুব ভালো করেই জানেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা ওলামা লীগকে একটি সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত নীতি আদর্শের প্রতি অনুগত বঙ্গবন্ধুর সত্যিকারের সৈনিক সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। শেখ হাসিনার পরীক্ষিত সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে অনুমতি নিয়ে এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। আপনারা লাকি। এতোদিন ওলামা লীগ বিভিন্ন ধারায় চলেছে। বিতর্কিতভাবে চলেছে। আওয়ামী লীগ এক কথা বলেছে, পেছন থেকে অন্য কথা বলেছেন। বিরোধী কথাবার্তা বলা যাবে না। শেখ হাসিনার সরকার যে কথা বলবে তার সঙ্গে মিলিয়ে আপনাদের কথা বলতে হবে। বিরোধ করা যাবে না।

Please Share This Post in Your Social Media

সরকারের সময় নির্ধারণ করবে জনগণ: ওবায়দুল কাদের

Reporter Name
Update Time : ০৮:২১:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ মে ২০২৩

বিএনপির সরকার পতনের ঝড় লন্ডন থেকে না ঠাকুরগাঁও থেকে আসবে তার দিনক্ষণ প্রকাশ করতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন,সরকারের সময় কখন শেষ হবে তা নির্ধারণ করবে এদেশের জনগণ।

শনিবার (২০মে) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ওলামা লীগের প্রথম ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আন্দোলনের ঝড়ে সরকারের পতন হবে বিএনপি মহাসচিবের এমন মন্তেব্যর তীব্র সমালোচনা করেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, সেই ঝড় কোথা থেকে আসবে ঠাকুরগাঁও থেকে, নাকি লন্ডন থেকে। কত নম্বর বিপদ সংকেত হবে। কতদিন বাকি রইল সরকারের সেটাও জানান।

তিনি আরও বলেন, দেখতে দেখতে ১৪ বছর, ঝড় হবে কোন বছর। দেখতে দেখতে ১৪ বছর, সরকার যাবে কোন বছর। গত ১০ বছর ধরে ঝড়ের কথা শুনছি। আর সময় নেই, সরকারের সময় নাই। একে একে এত কর্মসূচি পালন করলেন। এত চিল্লাপাল্লা করছেন। প্রতিদিনই বলছেন সরকারের পতন ঘটবে। সরকারের পরিবর্তন হবে কিনা, এটা নির্ধারণ করবে আল্লাহ, এ দেশের জনগণ। আমাদের ঈমান ঠিক আছে।

তিনি বলেন, সরকারকে কবে বিদায় নিতে হবে- তার দিনক্ষণ জানা থাকলে বিদায় নিতে একটি প্রস্তুতিও নিতে পারবে সরকার। বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিদিনই বলা হচ্ছে যে- সরকারের সময় শেষ। তাই, দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি মির্জা ফখরুলের কাছে জানতে চাই দিনটা কখন। গত ১০ বছর ধরেই এই কথা শুনে আসছি।

বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শক্তিও তুলে ধরেন দলের সাধারণ সম্পাদক। বলেন, আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক গভীরে। ক্ষমতাসীন দল পাতার ওপর ভোরের শিশির বিন্দুর নয় যে টোকা লাগলে পড়ে যাবে। যদি এমনটা মনে করেন তাহলে ভুল করবেন।

বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপির এখন পথ হারা পথিক এর মতো। বারবার বৈঠক করেও আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপরেখা ঠিক করতে পারছে না।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আরও ঐক্যবদ্ধ থাকতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগেরে এই জ্যেষ্ঠ নেতা। বলেন, সংগঠনের মধ্যে দলাদলি করবেন না। কর্মসূচি পালনের নামে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি করবেন না। আপনাদের যদি টাকা-পয়সার প্রয়োজন হয় তাহলে আমাকে বলবেন। আমি নেত্রীকে বলব, তিনি আপনাদের বিষয়টা দেখবেন। কিন্তু চাঁদাবাজি করে বদনাম কামাবেন না। ওলামা লীগকে একটি সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত ও বঙ্গবন্ধুর নীতি আদর্শের প্রতি অনুগত, শেখ হাসিনার আদর্শের পরীক্ষিত সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। ত্যাগীদের মূল্যায়ন করে কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।

সম্মেলন কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল মমিন সিরাজী সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন হাফেজ মাওলানা মিজানুর রহমান। এর আগে পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

ওলামা লীগকে স্বীকৃতি দিয়েছে আওয়ামী লীগ

এদিকে, ওলামা লীগকে স্বীকৃতি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে তাদের সহযোগী সংগঠন করা হবে নাকি সমমনা সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে সেটা ঠিক করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই তথ্য জানিয়েছেন।

কাদের বলেন, আওয়ামী ওলামা লীগের একটি ইচ্ছে ছিল যে সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠিত হবে। তার জন্য সময় লেগেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আজ তা সম্ভব হয়েছে। আমি ১০১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিচ্ছি যাতে ত্যাগী ও সিনিয়র নেতারা স্থান পাবেন।

তিনি বলেন, কমিটিতে যেন বাস্তবতার ও রাজনৈতিক আদর্শের প্রতিফলন থাকে। নেতাদের অবশ্যই দলীয় শৃঙ্খলায় আসতে হবে। ওয়ান ইলেভেনের সময় রাজপথে ওলামা লীগের কার্যক্রম ছিল চোখে পড়ার মতো। মাঝে কিছুটা স্বেচ্ছাচারিতা দেখা গিয়েছিল। তবে সেসব কাটিয়ে উঠে যেন একটি যোগ্য কমিটি তৈরি হয়। দলাদলি করে বদনাম কামাবেন না। এসব করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নব্বইয়ের দশকে ওলামা লীগের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৬ সালের পর থেকে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের সক্রিয়তা বাড়তে দেখা যায়। এরমধ্যেই অনেক ভাগে বিভক্ত হয়ে নানা ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডেও জড়ানোর অভিযোগ ওঠে এর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে ওলামা লীগ নামে কোনও সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক নেই দাবি করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় আওয়ামী লীগ। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের স্বীকৃতি দিলো ক্ষমতাসীন দলটি।

ওলামা লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের ছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান। দুই নেতাই তাদের বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ওলামা লীগের নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড হয়েছে। কিন্তু এখন থেকে একে আমরা একটি সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত নীতি আদর্শের প্রতি অনুগত বঙ্গবন্ধুর সত্যিকারের সৈনিক সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সংগঠনটি নেতাকর্মীদের দলাদলি ও চাঁদাবাজি বন্ধ করারও নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

ওলামা লীগ দীর্ঘদিন রাজপথের আন্দোলনে ছিল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, পুলিশের আক্রমণের মুখেও রাজপথ ছাড়েননি এবং নেত্রী যে নির্দেশ দিয়েছেন সেই নির্দেশ তারা অমান্য করেননি। দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল, তারা সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠিত হবে। সময় লেগেছে, তবে তাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশে এই সম্মেলন হচ্ছে।

ওলামা লীগের কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগের আদর্শিক রাজনীতি প্রতিফলিত হবে বলেও মনে করেন ওবায়দুল কাদের। ঢাকা মহানগরে দুটিসহ সারাদেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সংগঠনটির কমিটি গঠনের কথা বলেন কাদের।

ওলামা লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, দলদলি করবেন না। বদনাম কামাবেন না। ওলামা লীগের নামে চাঁদাবাজি করবেন না। বদনাম যেন না হয়। প্রোগ্রাম করবেন, পয়সা না থাকলে আমাকে বলবেন। নেত্রীকে আমি বলবো। আপনাদের খরচ যেটা প্রয়োজনীয় সেটা নেত্রীই বহন করবেন। কিন্তু আপনারা চাঁদাবাজি করে দুর্নাম কামাবেন না। এটা অতীতের অনেকেই করেছে। আপনার খুব ভালো করেই জানেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা ওলামা লীগকে একটি সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত নীতি আদর্শের প্রতি অনুগত বঙ্গবন্ধুর সত্যিকারের সৈনিক সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। শেখ হাসিনার পরীক্ষিত সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে অনুমতি নিয়ে এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। আপনারা লাকি। এতোদিন ওলামা লীগ বিভিন্ন ধারায় চলেছে। বিতর্কিতভাবে চলেছে। আওয়ামী লীগ এক কথা বলেছে, পেছন থেকে অন্য কথা বলেছেন। বিরোধী কথাবার্তা বলা যাবে না। শেখ হাসিনার সরকার যে কথা বলবে তার সঙ্গে মিলিয়ে আপনাদের কথা বলতে হবে। বিরোধ করা যাবে না।