সংবিধান কারও বাপের না: সারজিস আলম
- Update Time : ০১:২৮:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫
- / ২৮ Time View
সংবিধান কারও বাপের না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
আজ বুধবার বিকালে নরসিংদী শিবপুর ইটাখোলা তাহমিদ চত্তরে পথ সভায় একথা বলেন তিনি।
সারজিস আলম বলেন, ‘সংবিধান কারো বাপের না। বংশগত আর রক্তের বড়াই দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের যে অসম সুবিধা দেওয়া হতো, আজকাল সংবিধান কমিটির সদস্যদের সন্তানদের সেরকম অসমভাবে মুজিববাদী সংবিধানের পক্ষে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে।’
তিনি বলেছেন, যে কমিটি এই ৭২ এর সংবিধান করেছে, সে কমিটি পাকিস্তানের সংবিধান বানানোর ম্যান্ডেট নিয়ে তারা ভোট পেয়েছিলেন।
গত ৪ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্যদের সন্তানেরা বাহাত্তরের সংবিধান নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানকে ‘ছুড়ে ফেলে দেওয়া’ বা ‘কবর দেওয়া’র মতো কথা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কথা মহান মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও সংবিধান প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের সর্বোপরি দেশের জনসাধারণকে অবজ্ঞা করার শামিল।
সারজিস বলেন, অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকেই মহান মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও সংবিধানকে টার্গেট (লক্ষ্যবস্তু) করা হয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের সংবিধানকে ‘মুজিববাদী সংবিধান’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। সংবিধান ‘ছুড়ে ফেলা’ এমনকি সংবিধানের ‘কবর রচনা’ করার কথাও বলা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই অন্যতম সমন্বয়ক আরও বলেন, একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে যে সংবিধান রচিত হয়েছে, তার সঙ্গে এই দেশের প্রত্যেক মানুষের আবেগ, অনুভূতি ও স্বপ্ন-সাধনা জড়িত। আমরা এ–ও মনে করি, ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানে এ পর্যন্ত অনেক সংশোধনী আনা হয়েছে, যার সব কটি দেশ ও জনগণের স্বার্থে করা হয়নি।
সংবিধানকে অধিকতর গণতান্ত্রিক করা এবং দেশের গণতন্ত্র সুসংহত করতে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে এই সংবিধানে সংশোধন ও পরিমার্জন, পরিবর্তন করতে পারেন। কিন্তু সংবিধান ‘পুনর্লিখন’ বা ‘ছুড়ে ফেলে দেওয়া’ কিংবা ‘কবর দেওয়া’র মতো কথা বলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি বলেন, ফ্যাস্টিস্ট সরকার বিগত দিনে যেভাবে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজী করে লুটপাট করেছে আর কেউ যেন তা করতে না পারে তার জন্য সংবিধান নতুন করে লিখতে হবে। আর বংশগত ও রক্তের বড়াই দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের যে অসম সুবিধা দেওয়া হত, আজকাল সংবিধান কমিটির সদস্যদের সন্তানদের সেরকম অসমভাবে মুজিববাদী সংবিধানের পক্ষে দাড়িয়ে আছে।
সারজিস আলম আরো বলেন, আর ফ্যাস্টিস্ট সরকারের মত আর কেউ যেন চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাজি করতে না পারে তার জন্য সকলকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
আমরা এই ঘোষনা পত্র সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরেছি, যাতে তারা দেশের কল্যাণে এগিয়ে আসতে পারে। আর সকল মানুষকে এই ঘোষনা পত্রের সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
পথসভা শেষে ঘোষনা পত্র বিতরন কার্যক্রম শুরু করেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ন আহ্বায়ক সারোয়ার আলম,শিবপুর উপজেলা আহ্বায়ক তারিফ আহসান,মনোহরদী উপজেলার মাসুম বিল্লাহ,নরসিংদী সদরের গোলাম রাশেদ তলম,পলাশের সাইদুল ইসলামসহ হাজারো ছাত্র ছাত্রীরা অংশ গ্রহন করেন।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ইটাখোলা,ভেলানগর জেলখানার মোড়,বড় বাজারসহ পথসভা ও লিফলেট বিতরণ করেন তাঁরা।