ঢাকা ১১:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শ্রমিক অসন্তোষে টঙ্গীর ভিয়েলাটেক্স কারখানা বন্ধ

মোঃ হানিফ হোসেন
  • Update Time : ০২:১২:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫
  • / ৫৪১ Time View

গাজীপুরের টঙ্গীর খৈরতল সাতাইশ রোডে অবস্থিত ভিয়েলাটেক্স লিমিটেড (ভিয়েলাটেক্স গ্রুপ) শ্রমিকদের মধ্যে ইনসেন্টিভ বণ্টন নিয়ে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা ও গুজবের জেরে আজ সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে।

শ্রম আইনের ২০০৬ সালের ১৩(১) ধারার আওতায় হঠাৎ এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভোর থেকেই কারখানার গেটে তালা ঝুলিয়ে অফিসিয়াল নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হলে শ্রমিকদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

নোটিশে বলা হয়েছে, বিদেশি বায়ারের বরাদ্দ করা ইনসেন্টিভ নিয়ে কিছু শ্রমিকের মধ্যে বিভ্রান্তি ও গুজব ছড়িয়ে পড়ে, যা অযৌক্তিক উত্তেজনা তৈরি করে। ব্যবস্থাপনার সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই শ্রমিকদের একটি অংশ কাজ বন্ধ করে দিলে উৎপাদন ব্যাহত হয় এবং শ্রম পরিবেশ অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। কর্মপরিবেশ নিরাপদ না থাকায় শ্রম আইনের ১৩(১) ধারা অনুযায়ী ৩ নভেম্বর থেকে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

সকালে কাজে এসে গেটে তালা ঝুলতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন শ্রমিক সুমিত্রা রানীসহ অনেক শ্রমিক। তাঁদের ভাষ্য, “নোটিশ লাগানো আর চারদিকে পুলিশ দেখে মনে হচ্ছিল বড় কোনো ঘটনা ঘটেছে।” সকাল ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে প্রায় তিন থেকে চার শতাধিক শ্রমিক কারখানার সামনে জড়ো হন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কায় শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে। পরে তারা আশপাশের গলি ও এলাকায় ছড়িয়ে অবস্থান নেন।

পরিস্থিতি সম্পর্কে শিল্প পুলিশের এএসপি সেলিম বলেন, “বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে আছে।”

এদিকে সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া সাংবাদিকদের কারখানার ভেতরে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীরা অভিযোগ করেন, ব্যবস্থাপনা কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না, ফলে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না।

ঘটনার বিষয়ে জানতে ভিয়েলাটেক্স লিমিটেডের জিএমসহ দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ব্যবস্থাপনার পক্ষ থেকে এইচআর অ্যাডমিন মাহবুব বলেন, “আমাদের এখানে কোনো ঘটনা ঘটেনি। নিয়ম অনুযায়ী নোটিশ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেই মোতায়েন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমি বিস্তারিত বলতে পারব না।”

প্রায় ২ হাজার ৬৫০ শ্রমিকের এই বৃহৎ গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ থাকায় কর্মসংস্থান ও আর্থিক নিরাপত্তা নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। শিল্প পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি যাতে আবার উত্তপ্ত না হয় সেজন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে এলাকা স্থিতিশীল রাখা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

শ্রমিক অসন্তোষে টঙ্গীর ভিয়েলাটেক্স কারখানা বন্ধ

মোঃ হানিফ হোসেন
Update Time : ০২:১২:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫

গাজীপুরের টঙ্গীর খৈরতল সাতাইশ রোডে অবস্থিত ভিয়েলাটেক্স লিমিটেড (ভিয়েলাটেক্স গ্রুপ) শ্রমিকদের মধ্যে ইনসেন্টিভ বণ্টন নিয়ে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা ও গুজবের জেরে আজ সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে।

শ্রম আইনের ২০০৬ সালের ১৩(১) ধারার আওতায় হঠাৎ এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভোর থেকেই কারখানার গেটে তালা ঝুলিয়ে অফিসিয়াল নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হলে শ্রমিকদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

নোটিশে বলা হয়েছে, বিদেশি বায়ারের বরাদ্দ করা ইনসেন্টিভ নিয়ে কিছু শ্রমিকের মধ্যে বিভ্রান্তি ও গুজব ছড়িয়ে পড়ে, যা অযৌক্তিক উত্তেজনা তৈরি করে। ব্যবস্থাপনার সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই শ্রমিকদের একটি অংশ কাজ বন্ধ করে দিলে উৎপাদন ব্যাহত হয় এবং শ্রম পরিবেশ অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। কর্মপরিবেশ নিরাপদ না থাকায় শ্রম আইনের ১৩(১) ধারা অনুযায়ী ৩ নভেম্বর থেকে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

সকালে কাজে এসে গেটে তালা ঝুলতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন শ্রমিক সুমিত্রা রানীসহ অনেক শ্রমিক। তাঁদের ভাষ্য, “নোটিশ লাগানো আর চারদিকে পুলিশ দেখে মনে হচ্ছিল বড় কোনো ঘটনা ঘটেছে।” সকাল ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে প্রায় তিন থেকে চার শতাধিক শ্রমিক কারখানার সামনে জড়ো হন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কায় শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে। পরে তারা আশপাশের গলি ও এলাকায় ছড়িয়ে অবস্থান নেন।

পরিস্থিতি সম্পর্কে শিল্প পুলিশের এএসপি সেলিম বলেন, “বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে আছে।”

এদিকে সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া সাংবাদিকদের কারখানার ভেতরে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীরা অভিযোগ করেন, ব্যবস্থাপনা কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না, ফলে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না।

ঘটনার বিষয়ে জানতে ভিয়েলাটেক্স লিমিটেডের জিএমসহ দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ব্যবস্থাপনার পক্ষ থেকে এইচআর অ্যাডমিন মাহবুব বলেন, “আমাদের এখানে কোনো ঘটনা ঘটেনি। নিয়ম অনুযায়ী নোটিশ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেই মোতায়েন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমি বিস্তারিত বলতে পারব না।”

প্রায় ২ হাজার ৬৫০ শ্রমিকের এই বৃহৎ গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ থাকায় কর্মসংস্থান ও আর্থিক নিরাপত্তা নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। শিল্প পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি যাতে আবার উত্তপ্ত না হয় সেজন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে এলাকা স্থিতিশীল রাখা হয়েছে।