ঢাকা ০৩:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শর্তসাপেক্ষে বসতে চায় যুক্তরাষ্ট্র, নাকচ করল ইরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : ১০:২১:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ২৩ Time View

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও নতুন করে আলোচনা শুরুর শর্ত নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বিপরীত অবস্থান তুলে ধরেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক মার্কিন মিশনের কাউন্সেলর মরগান অর্টাগাস বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনো আনুষ্ঠানিক আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তবে এর শর্ত হলো—তেহরানকে সরাসরি ও অর্থবহ সংলাপে বসতে হবে। ইরানের ভেতরে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।

এর জবাবে ইরানের জাতিসংঘে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানি স্পষ্টভাবে যুক্তরাষ্ট্রের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, ইরান কোনো চাপ বা ভয়ভীতির কাছে মাথা নত করবে না। ‘শূন্য সমৃদ্ধকরণ’ নীতি পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (এনপিটি) সদস্য হিসেবে ইরানের আইনগত অধিকার ও দায়বদ্ধতার পরিপন্থি।

ইরাভানি আরও বলেন, বর্তমান সংকটের মূল কারণ হলো ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একতরফাভাবে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি (জেসিপিওএ) থেকে সরে যাওয়া। পাশাপাশি তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সামরিক হামলার অভিযোগও তোলেন।

এদিকে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা ২০১৫ সালের রেজুলেশন ২২৩১-এর ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়া নিয়ে বিভক্ত অবস্থানে রয়েছেন। এই রেজুলেশনের মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর ১০ বছরের নজরদারি ও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল।

ইরানের দাবি, ১৮ অক্টোবর সেই মেয়াদ শেষ হয়েছে এবং এর ফলে সংশ্লিষ্ট সব নিষেধাজ্ঞাও বাতিল হয়েছে। ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের চেষ্টা করলেও তেহরান তা প্রত্যাখ্যান করছে। ইরানের এই অবস্থানকে সমর্থন দিয়েছে চীন ও রাশিয়া।

অন্যদিকে, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির মতে, ইরানের অননুগত্যের কারণেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিষেধাজ্ঞা ফিরে এসেছে। তবে চীন ও রাশিয়া বলছে, যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে সরে যাওয়ায় এই ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়া আর কার্যকর করার সুযোগ নেই।

Please Share This Post in Your Social Media

শর্তসাপেক্ষে বসতে চায় যুক্তরাষ্ট্র, নাকচ করল ইরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Update Time : ১০:২১:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও নতুন করে আলোচনা শুরুর শর্ত নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বিপরীত অবস্থান তুলে ধরেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক মার্কিন মিশনের কাউন্সেলর মরগান অর্টাগাস বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনো আনুষ্ঠানিক আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তবে এর শর্ত হলো—তেহরানকে সরাসরি ও অর্থবহ সংলাপে বসতে হবে। ইরানের ভেতরে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।

এর জবাবে ইরানের জাতিসংঘে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানি স্পষ্টভাবে যুক্তরাষ্ট্রের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, ইরান কোনো চাপ বা ভয়ভীতির কাছে মাথা নত করবে না। ‘শূন্য সমৃদ্ধকরণ’ নীতি পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (এনপিটি) সদস্য হিসেবে ইরানের আইনগত অধিকার ও দায়বদ্ধতার পরিপন্থি।

ইরাভানি আরও বলেন, বর্তমান সংকটের মূল কারণ হলো ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একতরফাভাবে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি (জেসিপিওএ) থেকে সরে যাওয়া। পাশাপাশি তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সামরিক হামলার অভিযোগও তোলেন।

এদিকে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা ২০১৫ সালের রেজুলেশন ২২৩১-এর ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়া নিয়ে বিভক্ত অবস্থানে রয়েছেন। এই রেজুলেশনের মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর ১০ বছরের নজরদারি ও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল।

ইরানের দাবি, ১৮ অক্টোবর সেই মেয়াদ শেষ হয়েছে এবং এর ফলে সংশ্লিষ্ট সব নিষেধাজ্ঞাও বাতিল হয়েছে। ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের চেষ্টা করলেও তেহরান তা প্রত্যাখ্যান করছে। ইরানের এই অবস্থানকে সমর্থন দিয়েছে চীন ও রাশিয়া।

অন্যদিকে, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির মতে, ইরানের অননুগত্যের কারণেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিষেধাজ্ঞা ফিরে এসেছে। তবে চীন ও রাশিয়া বলছে, যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে সরে যাওয়ায় এই ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়া আর কার্যকর করার সুযোগ নেই।