ঢাকা ০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ

‘রাহুলের বাড়িতে আগুনের ঘটনায় ধর্মের সম্পর্ক নেই’

বিনোদন ডেস্ক
  • Update Time : ১০:৫৪:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৩১ Time View

সংগীত শিল্পী রাহুল আনন্দের বাসায় আগুনের সঙ্গে তার ধর্ম, বর্ণ, জাত, সংস্কৃতির কোনো সম্পর্ক নেই বলে মন্তব্য করেছেন ফ্যাশন হাউস খুঁতের স্বত্বাধিকারী ফারহানা হামিদ।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। সরকার পতনের পর আগুন দেওয়া হয় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বাড়িতে। সে সময় পুড়ে যায় জলের গান ব্যান্ডের গায়ক রাহুল আনন্দের ভাড়া বাড়িটিও।

রাহুল আনন্দের বাড়ির অগ্নিকাণ্ড নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলা হয়, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার জেরে আগুন দেওয়া হয়েছে। তবে নতুন মোড় নিয়েছে ঘটনা। ‘জলের গান’ ব্যান্ড সামাজিকমাধ্যমে জানিয়েছে, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার শিকার নন রাহুল। বঙ্গবন্ধুর বাড়ির আগুন ছড়িয়ে পড়লে পাশেই থাকা রাহুলের বাড়িতেও আগুন লেগে যায়।

এর মধ্যেই ‘জলের গান’-এর সংগীতশিল্পী, অভিনয়শিল্পী, বাদ্যযন্ত্রী রাহুল আনন্দ ও খুঁতের অন্যতম স্বত্বাধিকারী ও চিত্রশিল্পী ঊর্মিলা শুক্লার ধানমন্ডি ৩২–এর ভাড়া বাড়িতে আগুনের ঘটনাকে কলকাতা ও ঢাকার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তেমনটাই ছড়িয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে আদ্যোপান্ত তুলে ধরে ফ্যাশন ডিজাইনার ফারহানা হামিদ গত ৯ আগস্ট ফারহানা হামিদ নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন,ধানমন্ডি ৩২–এর বঙ্গবন্ধু মিউজিয়ামকে লক্ষ্য করে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। রাহুল আনন্দের বাসাটা মিউজিয়ামের দেয়ালঘেঁষা। পরে তাঁর বাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়েছে।

জলের গান নিজেদের ফেসবুক পাতায় ফ্যাশন হাউস ‘খুঁত’র অন্যতম স্বত্বাধিকারী ফারহানা হামিদের একটি পোস্ট শেয়ার করেছে। ওই পোস্টে লেখা, ‘রাহুল আনন্দর বাসা উদ্দেশ্য করে আগুন দেওয়া, লুটপাট বা ভাঙচুর করা হয়নি। আগুন দেওয়া হয়েছে ‘৩২-এর বর্তমান বঙ্গবন্ধু মিউজিয়াম ও তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ, সেটুকুতে।’

এরপর লেখা হয়েছে, ‘রাহুলদা একটি একতলা বাসায় ভাড়া থাকতেন। একপাশে তাদের সংসার, অন্যপাশে জলের গানের স্টুডিও (অনেকের ভিডিওতে এই বাসা নিয়ে ভুলভাল কথা বলতে দেখেছি আমি)। সেই বাড়িটি ব্যক্তিমালিকানায় ছিল। ৩২-এর সেখানে আরও অনেক এমন বাসা আছে। রাহুলদা ও তার পরিবারের দুর্ভাগ্য এই মায়াময় বাসাটা নতুন মিউজিয়াম এর দেয়াল ঘেঁষে এবং সান্তুরের পেছনে ছিল,তাই তার বাসাতেও আগুন দেওয়া হয়।’

৯ আগস্ট ফারহানা হামিদের পোস্টটি ‘জলের গানের’ (রাহুল আনন্দের ব্যান্ড) অফিশিয়াল পেজ থেকে শেয়ার করে লেখা হয়েছে, ‘প্লিজ, লেখাটা পড়ুন ও সত্যটা জানুন।’

এ ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমকে রাহুল আনন্দ জানান, ‘দেশের ভিখারি থেকে উঁচুতলার মানুষ আমাকে ভালোবাসে। আমার বাড়িতে আগুন দিতে যায়নি। এখানে হাজার হাজার মানুষের মধ্যে অতি উৎসাহীরা এটা করেছে।’

ফ্যাশন হাউস খুঁতের স্বত্বাধিকারী ফারহানা হামিদ লিখেছেন, ‘রাহুলদাকে উদ্দেশ্য করে আগুন দিলে তারা এই পরিবারকে এভাবে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ দিত না। আর সুযোগ না দিলে সেই বাসা থেকে বের হওয়া অসম্ভব। রাহুলদার বাসায় আগুনের সঙ্গে রাহুলদার ধর্ম, বর্ণ, জাত, সংস্কৃতির কোনো সম্পর্ক নেই। তাই এমন গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ করছি। দেশের পরিস্থিতিতে যেকোনো গুজব ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। আমরা সচেতন হই।’

ফারহানা হামিদ লিখেছেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে কোথাও আগুন দেওয়ার পক্ষেই না। বঙ্গবন্ধু মিউজিয়ামের মতো দেশের একটা গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাসে আগুন দেওয়ার পক্ষে তো অবশ্যই না। এই সময়ে সংখ্যালঘুর ওপর আক্রমণের বিষয়ে আমি অবগত এবং এর ঘোর বিপক্ষে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে ভাষা, ধর্ম, বর্ণ, জাত, সংস্কৃতির কারণে আক্রমণ করা হয় নাই কিন্তু কোনো কারণে গুজব ছড়াচ্ছে আর সেই গুজবকে গুজব বলা যাবে না।’

এই পোস্টটি শেয়ার দিয়ে জলের গান ক্যাপশনে লিখেছে, ‘প্লিজ, লেখাটা পড়ুন ও সত্যটা জানুন। আমরাই গড়ব সাম্যের বাংলাদেশ। ভালোবাসি আমার সোনার বাংলা। আগামী সুন্দর হোক।’

পোস্টের লিংক

Please Share This Post in Your Social Media

‘রাহুলের বাড়িতে আগুনের ঘটনায় ধর্মের সম্পর্ক নেই’

বিনোদন ডেস্ক
Update Time : ১০:৫৪:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৪

সংগীত শিল্পী রাহুল আনন্দের বাসায় আগুনের সঙ্গে তার ধর্ম, বর্ণ, জাত, সংস্কৃতির কোনো সম্পর্ক নেই বলে মন্তব্য করেছেন ফ্যাশন হাউস খুঁতের স্বত্বাধিকারী ফারহানা হামিদ।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। সরকার পতনের পর আগুন দেওয়া হয় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বাড়িতে। সে সময় পুড়ে যায় জলের গান ব্যান্ডের গায়ক রাহুল আনন্দের ভাড়া বাড়িটিও।

রাহুল আনন্দের বাড়ির অগ্নিকাণ্ড নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলা হয়, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার জেরে আগুন দেওয়া হয়েছে। তবে নতুন মোড় নিয়েছে ঘটনা। ‘জলের গান’ ব্যান্ড সামাজিকমাধ্যমে জানিয়েছে, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার শিকার নন রাহুল। বঙ্গবন্ধুর বাড়ির আগুন ছড়িয়ে পড়লে পাশেই থাকা রাহুলের বাড়িতেও আগুন লেগে যায়।

এর মধ্যেই ‘জলের গান’-এর সংগীতশিল্পী, অভিনয়শিল্পী, বাদ্যযন্ত্রী রাহুল আনন্দ ও খুঁতের অন্যতম স্বত্বাধিকারী ও চিত্রশিল্পী ঊর্মিলা শুক্লার ধানমন্ডি ৩২–এর ভাড়া বাড়িতে আগুনের ঘটনাকে কলকাতা ও ঢাকার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তেমনটাই ছড়িয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে আদ্যোপান্ত তুলে ধরে ফ্যাশন ডিজাইনার ফারহানা হামিদ গত ৯ আগস্ট ফারহানা হামিদ নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন,ধানমন্ডি ৩২–এর বঙ্গবন্ধু মিউজিয়ামকে লক্ষ্য করে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। রাহুল আনন্দের বাসাটা মিউজিয়ামের দেয়ালঘেঁষা। পরে তাঁর বাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়েছে।

জলের গান নিজেদের ফেসবুক পাতায় ফ্যাশন হাউস ‘খুঁত’র অন্যতম স্বত্বাধিকারী ফারহানা হামিদের একটি পোস্ট শেয়ার করেছে। ওই পোস্টে লেখা, ‘রাহুল আনন্দর বাসা উদ্দেশ্য করে আগুন দেওয়া, লুটপাট বা ভাঙচুর করা হয়নি। আগুন দেওয়া হয়েছে ‘৩২-এর বর্তমান বঙ্গবন্ধু মিউজিয়াম ও তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ, সেটুকুতে।’

এরপর লেখা হয়েছে, ‘রাহুলদা একটি একতলা বাসায় ভাড়া থাকতেন। একপাশে তাদের সংসার, অন্যপাশে জলের গানের স্টুডিও (অনেকের ভিডিওতে এই বাসা নিয়ে ভুলভাল কথা বলতে দেখেছি আমি)। সেই বাড়িটি ব্যক্তিমালিকানায় ছিল। ৩২-এর সেখানে আরও অনেক এমন বাসা আছে। রাহুলদা ও তার পরিবারের দুর্ভাগ্য এই মায়াময় বাসাটা নতুন মিউজিয়াম এর দেয়াল ঘেঁষে এবং সান্তুরের পেছনে ছিল,তাই তার বাসাতেও আগুন দেওয়া হয়।’

৯ আগস্ট ফারহানা হামিদের পোস্টটি ‘জলের গানের’ (রাহুল আনন্দের ব্যান্ড) অফিশিয়াল পেজ থেকে শেয়ার করে লেখা হয়েছে, ‘প্লিজ, লেখাটা পড়ুন ও সত্যটা জানুন।’

এ ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমকে রাহুল আনন্দ জানান, ‘দেশের ভিখারি থেকে উঁচুতলার মানুষ আমাকে ভালোবাসে। আমার বাড়িতে আগুন দিতে যায়নি। এখানে হাজার হাজার মানুষের মধ্যে অতি উৎসাহীরা এটা করেছে।’

ফ্যাশন হাউস খুঁতের স্বত্বাধিকারী ফারহানা হামিদ লিখেছেন, ‘রাহুলদাকে উদ্দেশ্য করে আগুন দিলে তারা এই পরিবারকে এভাবে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ দিত না। আর সুযোগ না দিলে সেই বাসা থেকে বের হওয়া অসম্ভব। রাহুলদার বাসায় আগুনের সঙ্গে রাহুলদার ধর্ম, বর্ণ, জাত, সংস্কৃতির কোনো সম্পর্ক নেই। তাই এমন গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ করছি। দেশের পরিস্থিতিতে যেকোনো গুজব ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। আমরা সচেতন হই।’

ফারহানা হামিদ লিখেছেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে কোথাও আগুন দেওয়ার পক্ষেই না। বঙ্গবন্ধু মিউজিয়ামের মতো দেশের একটা গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাসে আগুন দেওয়ার পক্ষে তো অবশ্যই না। এই সময়ে সংখ্যালঘুর ওপর আক্রমণের বিষয়ে আমি অবগত এবং এর ঘোর বিপক্ষে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে ভাষা, ধর্ম, বর্ণ, জাত, সংস্কৃতির কারণে আক্রমণ করা হয় নাই কিন্তু কোনো কারণে গুজব ছড়াচ্ছে আর সেই গুজবকে গুজব বলা যাবে না।’

এই পোস্টটি শেয়ার দিয়ে জলের গান ক্যাপশনে লিখেছে, ‘প্লিজ, লেখাটা পড়ুন ও সত্যটা জানুন। আমরাই গড়ব সাম্যের বাংলাদেশ। ভালোবাসি আমার সোনার বাংলা। আগামী সুন্দর হোক।’

পোস্টের লিংক