ঢাকা ০১:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রংপুর মহানগরীসহ বিভাগের আট জেলায় অসহনীয় লোডশেডিংয়ে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর ব‌্যু‌রো
  • Update Time : ১২:০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪
  • / ৫৩ Time View

রংপুর মহানগরীসহ বিভাগের আট জেলায় পল্লী বিদ্যুতের ঘন ঘন যাওয়া-আসার কারণে গ্রাহকের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে অব্যাহতভাবে চলছে এই লোডশেডিং। এতে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ১ ও ২ এর গ্রাহকসহ রংপুর বিভাগের প্রায় ১ কোটি গ্রাহকের দুর্ভোগ চরমে।

কয়েকদিনের বৃষ্টির পর গত চারদিন ধরে মৃদু তাপদাহ চলছে এ অঞ্চলে। এ অবস্থায় পল্লী বিদ্যুতের এমন বেহাল সেবায় গ্রাহকরা ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

তাপপ্রবাহের ধকলের সঙ্গে অসহনীয় লোডশেডিংয়ে অস্বস্তি আরও বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে বয়স্ক ও শিশুদের। তারা দ্রত সময়ের মধ্যে পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং বন্ধ করাসহ সুষ্ঠু সমাধান চেয়ে সংশ্লিষ্টদের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো জানিয়েছে, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এ ছাড়া প্রায়ই বৈদ্যুতিক লাইনে ত্রুটি দেখা দিচ্ছে। এসব কারণে ঠিকমতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না।

এদিকে গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি গ্রাহকের কাছে ইচ্ছেমত বিল আদায় করছে। মিটার ভাড়া ও ডিমার্ড চার্জ নিচ্ছে। যা একেবারেই অযৌক্তিক। অথচ সেবার মান নেই। ঘন ঘন বিদ্যুৎ যাওয়া-আসা করে। এতে গ্রাহকরা নানা সমস্যায় পড়েছেন। গত কয়েকদিনের গরমের সঙ্গে অব্যাহত লোডশেডিংয়ের কারণে অনেকে কোরবানির মাংসসহ প্রয়োজনীয় জিনিস ফ্রিজে রাখতে পারছেন না। এ ছাড়া ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে ফ্রিজসহ অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিটি সমিতির আওতায় গড়ে ৫ থেকে ৭ লাখ গ্রাহক এবং ৮ থেকে ১০ হাজার কিলোমিটারের বেশি বৈদ্যুতিক লাইন রয়েছে। প্রতিটি সমিতিতে বিদ্যুতের চাহিদা গড়ে ৭০ থেকে ১২০ মেগাওয়াট পর্যন্ত। কিন্তু চাহিদার অনেক কম বিদ্যুৎ পাচ্ছে সমিতিগুলো। ঘাটতি থেকে যাচ্ছে ৩০-৪০ মেগাওয়াট। একই অবস্থা রংপুরসহ বিভাগের আট জেলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির।

মিঠাপুকুর উপজেলার গ্রাহক মুসা মিয়া ও জাভেদ আলী বলেন, একদিকে গরম আর অন্যদিকে পল্লী বিদ্যুতের ঘনঘন যাওয়া-আসা। এতে আমরা অতিষ্ঠ। বার বার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোনো প্রতিকার পাইনি।

রংপুর নগরীর তামপাট এলাকার গ্রাহক হুমায়ন রশিদ শাহীন ও আশরাফুল আলম বলেন, প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ বার লোডশেডিং হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্রিজসহ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফ্রিজে রাখা বিশেষ করে কোরবানির মাংস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

সার্বিক বিষয়ে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার আবুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কিছুটা কম পাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বরাদ্দ ঠিকমতো পেলে গ্রাহকের আর সমস্যা থাকবে না। এছাড়াও প্রায়ই বৈদ্যুতিক লাইনে ত্রুটি দেখা দেওয়ার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় বলে তিনি দাবি করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

রংপুর মহানগরীসহ বিভাগের আট জেলায় অসহনীয় লোডশেডিংয়ে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর ব‌্যু‌রো
Update Time : ১২:০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪

রংপুর মহানগরীসহ বিভাগের আট জেলায় পল্লী বিদ্যুতের ঘন ঘন যাওয়া-আসার কারণে গ্রাহকের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে অব্যাহতভাবে চলছে এই লোডশেডিং। এতে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ১ ও ২ এর গ্রাহকসহ রংপুর বিভাগের প্রায় ১ কোটি গ্রাহকের দুর্ভোগ চরমে।

কয়েকদিনের বৃষ্টির পর গত চারদিন ধরে মৃদু তাপদাহ চলছে এ অঞ্চলে। এ অবস্থায় পল্লী বিদ্যুতের এমন বেহাল সেবায় গ্রাহকরা ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

তাপপ্রবাহের ধকলের সঙ্গে অসহনীয় লোডশেডিংয়ে অস্বস্তি আরও বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে বয়স্ক ও শিশুদের। তারা দ্রত সময়ের মধ্যে পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং বন্ধ করাসহ সুষ্ঠু সমাধান চেয়ে সংশ্লিষ্টদের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো জানিয়েছে, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এ ছাড়া প্রায়ই বৈদ্যুতিক লাইনে ত্রুটি দেখা দিচ্ছে। এসব কারণে ঠিকমতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না।

এদিকে গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি গ্রাহকের কাছে ইচ্ছেমত বিল আদায় করছে। মিটার ভাড়া ও ডিমার্ড চার্জ নিচ্ছে। যা একেবারেই অযৌক্তিক। অথচ সেবার মান নেই। ঘন ঘন বিদ্যুৎ যাওয়া-আসা করে। এতে গ্রাহকরা নানা সমস্যায় পড়েছেন। গত কয়েকদিনের গরমের সঙ্গে অব্যাহত লোডশেডিংয়ের কারণে অনেকে কোরবানির মাংসসহ প্রয়োজনীয় জিনিস ফ্রিজে রাখতে পারছেন না। এ ছাড়া ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে ফ্রিজসহ অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিটি সমিতির আওতায় গড়ে ৫ থেকে ৭ লাখ গ্রাহক এবং ৮ থেকে ১০ হাজার কিলোমিটারের বেশি বৈদ্যুতিক লাইন রয়েছে। প্রতিটি সমিতিতে বিদ্যুতের চাহিদা গড়ে ৭০ থেকে ১২০ মেগাওয়াট পর্যন্ত। কিন্তু চাহিদার অনেক কম বিদ্যুৎ পাচ্ছে সমিতিগুলো। ঘাটতি থেকে যাচ্ছে ৩০-৪০ মেগাওয়াট। একই অবস্থা রংপুরসহ বিভাগের আট জেলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির।

মিঠাপুকুর উপজেলার গ্রাহক মুসা মিয়া ও জাভেদ আলী বলেন, একদিকে গরম আর অন্যদিকে পল্লী বিদ্যুতের ঘনঘন যাওয়া-আসা। এতে আমরা অতিষ্ঠ। বার বার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোনো প্রতিকার পাইনি।

রংপুর নগরীর তামপাট এলাকার গ্রাহক হুমায়ন রশিদ শাহীন ও আশরাফুল আলম বলেন, প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ বার লোডশেডিং হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্রিজসহ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফ্রিজে রাখা বিশেষ করে কোরবানির মাংস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

সার্বিক বিষয়ে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার আবুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কিছুটা কম পাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বরাদ্দ ঠিকমতো পেলে গ্রাহকের আর সমস্যা থাকবে না। এছাড়াও প্রায়ই বৈদ্যুতিক লাইনে ত্রুটি দেখা দেওয়ার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় বলে তিনি দাবি করেন।