রংপুরে সাড়া ফেলেছে পানিপুরি
- Update Time : ০২:২৩:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ মে ২০২৩
- / ৩৪৬ Time View
ভ্যানে নানা রঙের হাড়িতে হরেক রকমের টক সাজিয়ে বিক্রি হচ্ছে ভারতের বিখ্যাত পানিপুরি। খরচের ব্যয় মিটিয়ে মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করছেন বিক্রেতারা।
রংপুর নগরীর লালবাগ রেলগেট এলাকায় দুটি ভ্যানে বিক্রি করা হয় পানিপুরি। দুপুর থেকে শুরু করে বিক্রি চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। আর এই পানিপুরির স্বাদ নিতে দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন ভোজনরসিকরা।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নগরীর খামার মোড় এলাকার আনিস ও রুবেল নামে দুই বন্ধু মিলে শুরু করেন পানিপুরির ব্যবসা। ফুসকা ও চটপটির ব্যবসা থেকেই অল্প পরিসরে শুরু করা পানিপুরিতে এখন সফল তারা।
পানিপুরি বিক্রেতা আনিস মিয়ার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ভাঙাচোরা একটি ভ্যান ছিল আগে, যেটাতে আমরা কারমাইকেল কলেজে চটপটি ও ফুসকা বিক্রি করতাম। আমার এক বন্ধু ভারতের কলকাতায় গিয়ে এই পানিপুরি খেয়েছিল। সে এসে প্রথম পরামর্শ দেয় এটা টেস্ট করার। তারপর আমরা দুই বন্ধু মিলে পরামর্শ করি। বিভিন্ন জায়গায় এটা বানানোর রেসিপি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম শুরু করি পানিপুরির বিক্রি।
আনিস বলেন, প্রথম মাসেই আমরা ভালো আয় করি। কিন্তু ৫০ টাকা একটু বেশি হয়ে যায় ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য। যেহেতু আমার এখানে শিক্ষার্থীরা বেশি আসে তাই পরিমাণে কিছুটা কমিয়ে অল্প দামে বিক্রি শুরু করলাম। এখন আমাদের প্রতিদিন কমপক্ষে ৬-৭ হাজার টাকা বিক্রি হয়। আনুসাঙ্গিক খরচ বাদে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা আয় থাকছে।
আনিসের বন্ধু রুবেল জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে ৫০ হাজারের মতো খরচ হয়েছে আমাদের। এখন মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে পানিপুরি খেতে আসছে। অল্প দামে তাদের খাওয়াতে পেরে আমাদেরও ভালো লাগছে। তবে দিন দিন জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে আমাদের খরচও বেড়েছে। প্রায় ১৫ পদের টক বানাতে হয়। সব মিলে নতুন ব্যবসা হিসেবে ভালোই চলছে। ভালো জায়গা হলে পানিপুরির ব্যবসা বাড়ানোর পরিকল্পনাও আছে।
মুখরোচক এ খাবারের সঙ্গে দেওয়া হয় তেঁতুল টক, পুদিনা পাতা টক, ধনিয়া টক, লেমন টক, খাট্টা টক, বারো মসলা টক, দই টক, ঝাল টক, নাগা টক, জলপাই টক ইত্যাদি।
পানিপুরি খেতে আসা কারমাইকেল কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সুমাইয়া বলেন, এর আগে তো পানিপুরি এখানে ছিল না। এখন এখানে পানিপুরি খেতে পারছি, ভালো লাগছে। যেহেতু বিভিন্ন টক দিয়ে এই পানিপুরি পাওয়া যায় তাই প্রায়ই খেতে আসছি বন্ধু-বান্ধবী মিলে। অল্প দামে নানা টক দিয়ে মুখরাচক খাবার হিসেবে ভালোই লাগে।
ঋতি নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, পানিপুরির বিষয়টি রংপুরে ব্যতিক্রম। কারণ আমরা এর আগে সাধারণত ফুসকা খেতাম। ফুচকাতে শুধু একটা টক থাকতো কিন্তু এই পানিপুরিতে প্রায় ৭-৮ ধরনের টক দিয়ে দিচ্ছে। মুখরোচক খাবার হিসেবে ভালোই লাগছে।
পানিপুরি খেতে আসা ষাটোর্ধ্ব মজিবর মিয়া বলেন, মেসে ছেলেকে রেখে শখে পানিপুরি খেতে আসছি। অনেক শুনেছি, পানিপুরি রংপুরে পাওয়া যাবে ভাবতে পারিনি। খেতে অনেকটা ফুচকার মতো, তবে এটাতে কয়েক ধরনের টক দেওয়া। ফুচকার টক পাতলা আর এটার টকগুলো গাঢ়। ভালোই লাগলো, দামও কম।
প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত পাওয়া যায় এই পানিপুরি। পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকেও নগরীর লালবাগে পানিপুরির স্বাদ নিতে আসছে নানা বয়সী মানুষ।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়