ঢাকা ০২:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরেও ইসরায়েলের হামলা, ৭৩ ফিলিস্তিনি নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : ০৭:৩৫:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ১৪৫ Time View

গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে চুক্তি হওয়ার পরেও হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। অবরুদ্ধ এই উপত্যকার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, গাজাজুড়ে এখনও হামলা চলছে। সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরেও সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা বন্ধ হয়নি। এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৭৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ২০ জন শিশু এবং ২৫ জন নারী। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ২৩০ জনের বেশি মানুষ।

উদ্ধারকারী সংস্থা জানিয়েছে, গাজা সিটিতে প্রায় ৬১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। প্রায় ৪৬০ দিন ধরে চলা সংঘাতে গাজায় ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের পর যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে জানান, চুক্তিটি আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর কমিশনার-জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, এই চুক্তি গাজার জনগণ এবং ইসরায়েলি বন্দীদের জন্য স্বস্তি এনে দেবে। গাজা সংঘাতের কারণে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা সমাধানে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বিশ্ব খাদ্য সংস্থা জানিয়েছে, গাজায় ১০ লাখের বেশি মানুষকে তারা সহায়তা দিতে প্রস্তুত। তবে এক্ষেত্রে সব সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেওয়া দরকার।

এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, তিনি যুদ্ধবিরতির খবরে বেশ স্বস্তি পেয়েছেন এবং জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচারের ওপরও জোর দিতে হবে।

অপরদিকে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেছেন যে, এই চুক্তি গাজার শিশুদের এবং ফিলিস্তিনি পরিবারের জন্য কিছুটা স্বস্তি বয়ে আনবে। এই যুদ্ধ গাজার শিশুদের ওপর একটি ভয়াবহ ক্ষতি বয়ে এনেছে। সেখানে কমপক্ষে ১৪ হাজার ৫০০ শিশু প্রাণ হারিয়েছে।

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ায় নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ধন্যবাদ দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। বুধবার তিনি ট্রাম্প এবং বাইডেনের সঙ্গে কথা বলেছেন। তার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় জিম্মিদের মুক্তির জন্য একটি চুক্তি নিশ্চিত করতে সহায়তা করার জন্য তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন নেতানিয়াহু।

গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তির কথা স্বীকার করে নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে জিম্মিদের মুক্তিতে সহায়তা করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন নেতানিয়াহু। শিগগির ট্রাম্পের সঙ্গে ওয়াশিংটনে দেখা করার বিষয়েও সম্মতি জানিয়েছেন তিনি। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু প্রেসিডেন্ট বাইডেনকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং তার সঙ্গে কথা বলেছেন।

গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময়ের চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার খবরে হাজারও ফিলিস্তিনি রাস্তায় নেমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে মধ্যস্থতাকারী কাতার বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এই চুক্তির ঘোষণা দেয়।

গাজায় এরই মধ্যে উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছে। লোকজন একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আনন্দ প্রকাশ করছেন। ক্যামেরাবন্দি করা হচ্ছে স্মরণীয় মুহূর্তগুলো।

Please Share This Post in Your Social Media

যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরেও ইসরায়েলের হামলা, ৭৩ ফিলিস্তিনি নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Update Time : ০৭:৩৫:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫

গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে চুক্তি হওয়ার পরেও হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। অবরুদ্ধ এই উপত্যকার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, গাজাজুড়ে এখনও হামলা চলছে। সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরেও সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা বন্ধ হয়নি। এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৭৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ২০ জন শিশু এবং ২৫ জন নারী। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ২৩০ জনের বেশি মানুষ।

উদ্ধারকারী সংস্থা জানিয়েছে, গাজা সিটিতে প্রায় ৬১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। প্রায় ৪৬০ দিন ধরে চলা সংঘাতে গাজায় ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের পর যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে জানান, চুক্তিটি আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর কমিশনার-জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, এই চুক্তি গাজার জনগণ এবং ইসরায়েলি বন্দীদের জন্য স্বস্তি এনে দেবে। গাজা সংঘাতের কারণে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা সমাধানে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বিশ্ব খাদ্য সংস্থা জানিয়েছে, গাজায় ১০ লাখের বেশি মানুষকে তারা সহায়তা দিতে প্রস্তুত। তবে এক্ষেত্রে সব সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেওয়া দরকার।

এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, তিনি যুদ্ধবিরতির খবরে বেশ স্বস্তি পেয়েছেন এবং জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচারের ওপরও জোর দিতে হবে।

অপরদিকে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেছেন যে, এই চুক্তি গাজার শিশুদের এবং ফিলিস্তিনি পরিবারের জন্য কিছুটা স্বস্তি বয়ে আনবে। এই যুদ্ধ গাজার শিশুদের ওপর একটি ভয়াবহ ক্ষতি বয়ে এনেছে। সেখানে কমপক্ষে ১৪ হাজার ৫০০ শিশু প্রাণ হারিয়েছে।

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ায় নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ধন্যবাদ দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। বুধবার তিনি ট্রাম্প এবং বাইডেনের সঙ্গে কথা বলেছেন। তার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় জিম্মিদের মুক্তির জন্য একটি চুক্তি নিশ্চিত করতে সহায়তা করার জন্য তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন নেতানিয়াহু।

গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তির কথা স্বীকার করে নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে জিম্মিদের মুক্তিতে সহায়তা করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন নেতানিয়াহু। শিগগির ট্রাম্পের সঙ্গে ওয়াশিংটনে দেখা করার বিষয়েও সম্মতি জানিয়েছেন তিনি। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু প্রেসিডেন্ট বাইডেনকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং তার সঙ্গে কথা বলেছেন।

গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময়ের চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার খবরে হাজারও ফিলিস্তিনি রাস্তায় নেমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে মধ্যস্থতাকারী কাতার বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এই চুক্তির ঘোষণা দেয়।

গাজায় এরই মধ্যে উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছে। লোকজন একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আনন্দ প্রকাশ করছেন। ক্যামেরাবন্দি করা হচ্ছে স্মরণীয় মুহূর্তগুলো।