যমুনা রেল সেতুতে ১২০ কিলোমিটার গতিতে চললো পরীক্ষামূলক ট্রেন
- Update Time : ০৮:০৯:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৩৪ Time View
যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দেশের সর্ববৃহৎ রেলওয়ে সেতু দিয়ে ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলল পরীক্ষামূলক ট্রেন। রবিবার (৫ জানুয়ারি) দ্বিতীয় বারের মতো রেলসেতুর ওপর দিয়ে একযোগে উভয়প্রান্ত থেকে দু’টি ট্রেন পরীক্ষামূলকভাবে চলাচল করে।
চলতি মাসের শেষ অথবা আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে যমুনা রেলসেতু উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। মেধা ও শ্রমের বিনিময়ে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে কাজ করে ইতিহাসের সাক্ষী হতে পারায় উচ্ছ্বাসিত প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয়রা বলছেন, সেতুটি চালু হলে ব্যবসায় নতুন মাত্রা যোগ হবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, রবিবার সকাল সাড়ে ৯ টায় হুইসেল বাজিয়ে ৪টি কোচ ও একটি ইঞ্জিন নিয়ে একযোগে রেল সেতুতে ট্রেন চলাচল করে। প্রথম পর্যায়ে ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন দু’টি পারাপারের পর ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরপর ৬০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করে।
যমুনার ওপর নির্মিত যমুনা রেলওয়ে সেতুর চিফ সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. মাইনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রবিবার পরীক্ষামূলকভাবে পূর্ণ গতিতে ট্রেন চলবে। এর অংশ হিসেবে প্রথমে সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার গতিতে দুটি ট্রেন সেতুর পূর্ব পাড় থেকে পশ্চিম পাড়ে ও পশ্চিম পাড় থেকে পূর্ব পাড়ে ছেড়ে যায়।
তিনি আরো জানান,এরপর ১০টা ২০ মিনিটের দিকে দ্বিতীয়বার ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার গতিতে দুই পাশ থেকে ট্রেন দুটি সেতু অতিক্রম করে। এরপর ১১টা ১ মিনিটে একটি ট্রেন সেতু পশ্চিম পাড় থেকে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে সেতুতে ওঠে ও ১১টা ৫ মিনিটে পূর্ব পাড় থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি পশ্চিম পাড়ের সেতুর শেষ অংশ অতিক্রম করে।
এর কিছু সময় পর আরেকটি ট্রেন ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার গতিতে সেতুটি পার হয়। এর পর ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার গতিতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, সেতুটি চালুর পর উভয়প্রান্তের স্টেশনে রেল ক্রসিং এর সময় বাঁচানোর পাশাপাশি ব্যবসা বাণিজ্যেও আরো গতি ফিরবে।
এ দিকে যমুনা সেতুর ৩০০ মিটার উত্তরে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ৪.৮ কিলোমিটার যমুনা রেলওয়ে সেতু জাইকার অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। রেল সেতুটি চালু হলে একদিকে যেমন যাত্রীদের সময় বাঁচবে, অন্যদিকে যমুনা বহুমুখী সেতুতে চাপ কমবে।
প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসউদুর রহমান বলেন, সোমবার জাইকার কর্মকর্তা, সেতুর কর্তৃপক্ষ ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল করা হবে।
আবু ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান আরও জানান, এই পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর মধ্য দিয়ে ভুলত্রুটি চিহ্নিত করার জন্য কাজ অব্যাহত থাকবে। পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে শিগগিরই রেলসেতুটি উদ্বোধন করা হবে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের আগস্ট মাসে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রকল্পটির কাজ ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরে সময়সীমা ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬-এ প্রকল্পটি অনুমোদন করে। সেতুটির ঠিকাদার হিসেবে কাজ করে জাপানি কোম্পানি ওটিজি ও আইএইচআই জয়েন্ট ভেঞ্চার।