ঢাকা ১১:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে স্মৃতিসৌধে প্রধান বিচারপতির শ্রদ্ধা নিবেদন সন্দ্বীপের বেড়ীবাঁধ এলাকায় চলমান তীর রক্ষা বাঁধের কাজ বাস্তবায়ন করা হবে নোয়াখালীতে ৩৬ কলেজ-মাদরাসায় ছাত্রদলের নতুন কমিটি, আনন্দ মিছিল ফরিদপুরে চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম, বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুটপাট নতুন বাংলাদেশ গড়তে সঠিক তথ্য জানতে হবে – পরিবেশ উপদেষ্টা সেনাবাহিনীসহ অনেককেই নানাভাবে মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে লেডি বাইকার এশা গ্রেপ্তার ৯ এপ্রিল থেকে দেশে শুরু হচ্ছে স্টারলিংক ইন্টারনেটের ব্যবহার এখন ফেসবুক স্টোরি থেকেও আয় করা যাবে লোহাগাড়ায় শিশু যৌন হয়রানির চেষ্টা, যুবক গ্রেফতার
অভিনেত্রী রানিয়া রাও

ব্ল্যাকমেইল করে আমাকে দিয়ে সোনাপাচার করানো হয়

বিনোদন ডেস্ক
  • Update Time : ০৪:৪৭:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫
  • / ২৬ Time View

দুবাই থেকে ১২ কোটি টাকার সোনাপাচারের অভিযোগে গ্রেফতার কন্নড় অভিনেত্রী রানিয়া রাও নিজেকে ব্ল্যাকমেইল করে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন। গত রোববার রাতে বেঙ্গালুরুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীকে গ্রেফতার করা হয়।

এদিকে এ ঘটনায় এক পুলিশ কনস্টেবলকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, তিনি অভিনেত্রীকে সোনা নিয়ে বিমানবন্দর থেকে নিরাপদে বের হয়ে যেতে সাহায্য করছিলেন।

ডিআরআই কর্তারা মনে করছেন, কন্নড় অভিনেত্রীর সঙ্গে দুবাইয়ের সোনা পাচার চক্রের গভীর যোগ রয়েছে। জানা গিয়েছে, দুবাই বিমানবন্দরেই তাঁর হাতে সোনার বার তুলে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, দুবাই বিমানবন্দরের ভিতরেই উরু, পা আর কোমরে টেপ আর ক্রেপ ব্যান্ডেজ দিয়ে সেই সোনার বার পেঁচিয়ে নিয়েছিলেন অভিনেত্রী। সেই সূত্রেই তদন্ত সংস্থার অনুমান, রানিয়া শুধু বাহক নন বরং সোনা পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য।

দুবাই থেকে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে নামার পর রানিয়া পুলিশ কনস্টেবল বাসবরাজুর সাহায্যে নিরাপত্তা তল্লাশি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর রাজ্যের এক প্রোটোকল অফিসার ইমিগ্রেশনে গিয়ে রানিয়া রাওয়ের লাগেজ নিয়ে আসতেন, যাতে চেকিং দ্রুত সম্পন্ন হয়। ফলে দেহ তল্লাশি কিংবা মেটাল ডিটেক্টর স্ক্যানিংয়ের মুখে পড়তে হত না অভিনেত্রীকে। সাধারণত নিরাপত্তা কর্মীদের সন্দেহ না হলে যাত্রীদের পুরো স্ক্যান করা হয় না।

এদিকে তার কার্যকলাপ সম্পর্কে আগে থেকেই খবর ছিল ডিআরআইয়ের কাছে। ফলে অভিনেত্রীকে সোনাসহ হাতেনাতে ধরে ফেলা সম্ভব হয়। তল্লাশি করার সময় রানিয়ার জ্যাকেটের ভেতরে ১২.৫৬ কোটি রুপি মূল্যের ১৪.২ কেজি বিদেশি সোনা পাওয়া যায়। গ্রেফতারের পরে অভিনেত্রীকে বিশদ তদন্তের জন্য নাগাভারায় ডিআরআই অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়।

ডিআরআই জানায়, “এটা প্রোটকলের অপব্যবহার।” ডিআরআই আরও জানিয়েছে, রানিয়া রাওয়ের দেওয়া তিনটি বিবৃতি থেকে যে সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে তাতে অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আরও জোরালো হচ্ছে। অধিকাংশ অভিযোগ তিনি অস্বীকারও করেননি। তাছাড়া, এই চক্রে আরও কয়েকজন জড়িত রয়েছে, তাঁদের সম্পর্কে জানতে অভিনেত্রীকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

গত ৪ মার্চ রানিয়া রাওকে গ্রেফতারের পর লাভেল রোডের নন্দওয়ানি ম্যানশনে তার বাসভবনে অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। তল্লাশিতে ২.৬৭ কোটি রুপি ও ২.০৬ কোটি মূল্যের সোনা বাজেয়াপ্ত করা হয়। অভিযানের পর কর্মকর্তারা তার বাড়ি থেকে তিনটি বড় বাক্স উদ্ধার করেন। মোট বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তির মূল্য ১৭.২৯ কোটি রুপি।

রানিয়া রাওয়ের মোবাইল এবং ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করেছে রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের অফিসাররা। তবে সেগুলো লক থাকায় এখনও তার অ্যাক্সেস পায়নি ডিআরআই। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, অভিনেত্রীর মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

১২ কোটি টাকার সোনা নিয়ে বিমানে ওঠার পরিকল্পনা ছিল কন্নড় অভিনেত্রী রানিয়া রাওয়ের। সম্পর্কে তিনি আবার আইপিএস অফিসার ড. কে রামচন্দ্র রাওয়ের কন্যা। একেবারে শেষ মুহূর্তে তাকে গ্রেফতার করে রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগ (ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স, ডিআরআই)।

এদিকে এ ঘটনার কথা জানার পরেই অভিনেত্রীর বাবা ড. কে রামচন্দ্র রাও দাবি করে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, মেয়ের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে তার কোনো রকমের যোগ নেই। মাস চারেক আগে রানিয়ার বিয়ে হয়ে গেছে। তার পর থেকে মেয়ের সঙ্গে তাদের আর কোনো যোগাযোগ নেই। রামচন্দ্র আরও বলেন, মেয়ে কিংবা তার স্বামী কী ব্যবসা করেন, সেই সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না। যা ঘটেছে, তা আমাদের বড় ধাক্কা দিয়েছে। আমরা খুবই হতাশ। তবে আইন আইনের পথেই চলবে।

পুলিশের দাবি, অভিনেত্রী তার স্বামী যতীনের সঙ্গে প্রায়ই দুবাই যান। তবে তা কোনো ব্যবসায়িক বা পারিবারিক কারণ নয়, এই সোনাপাচারের জন্যই। তদন্তে দেখা গেছে যে, বিমানবন্দরে নিরাপত্তা তল্লাশি এড়াতে রানিয়া সবসময়েই পুলিশের সাহায্য পেতেন।

অভিনেত্রীকে আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

উল্লেখ্য, রানিয়া রাও বেশ কয়েকটি কন্নড় ও তামিল ছবিতে অভিনয় করেছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

অভিনেত্রী রানিয়া রাও

ব্ল্যাকমেইল করে আমাকে দিয়ে সোনাপাচার করানো হয়

বিনোদন ডেস্ক
Update Time : ০৪:৪৭:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫

দুবাই থেকে ১২ কোটি টাকার সোনাপাচারের অভিযোগে গ্রেফতার কন্নড় অভিনেত্রী রানিয়া রাও নিজেকে ব্ল্যাকমেইল করে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন। গত রোববার রাতে বেঙ্গালুরুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীকে গ্রেফতার করা হয়।

এদিকে এ ঘটনায় এক পুলিশ কনস্টেবলকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, তিনি অভিনেত্রীকে সোনা নিয়ে বিমানবন্দর থেকে নিরাপদে বের হয়ে যেতে সাহায্য করছিলেন।

ডিআরআই কর্তারা মনে করছেন, কন্নড় অভিনেত্রীর সঙ্গে দুবাইয়ের সোনা পাচার চক্রের গভীর যোগ রয়েছে। জানা গিয়েছে, দুবাই বিমানবন্দরেই তাঁর হাতে সোনার বার তুলে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, দুবাই বিমানবন্দরের ভিতরেই উরু, পা আর কোমরে টেপ আর ক্রেপ ব্যান্ডেজ দিয়ে সেই সোনার বার পেঁচিয়ে নিয়েছিলেন অভিনেত্রী। সেই সূত্রেই তদন্ত সংস্থার অনুমান, রানিয়া শুধু বাহক নন বরং সোনা পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য।

দুবাই থেকে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে নামার পর রানিয়া পুলিশ কনস্টেবল বাসবরাজুর সাহায্যে নিরাপত্তা তল্লাশি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর রাজ্যের এক প্রোটোকল অফিসার ইমিগ্রেশনে গিয়ে রানিয়া রাওয়ের লাগেজ নিয়ে আসতেন, যাতে চেকিং দ্রুত সম্পন্ন হয়। ফলে দেহ তল্লাশি কিংবা মেটাল ডিটেক্টর স্ক্যানিংয়ের মুখে পড়তে হত না অভিনেত্রীকে। সাধারণত নিরাপত্তা কর্মীদের সন্দেহ না হলে যাত্রীদের পুরো স্ক্যান করা হয় না।

এদিকে তার কার্যকলাপ সম্পর্কে আগে থেকেই খবর ছিল ডিআরআইয়ের কাছে। ফলে অভিনেত্রীকে সোনাসহ হাতেনাতে ধরে ফেলা সম্ভব হয়। তল্লাশি করার সময় রানিয়ার জ্যাকেটের ভেতরে ১২.৫৬ কোটি রুপি মূল্যের ১৪.২ কেজি বিদেশি সোনা পাওয়া যায়। গ্রেফতারের পরে অভিনেত্রীকে বিশদ তদন্তের জন্য নাগাভারায় ডিআরআই অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়।

ডিআরআই জানায়, “এটা প্রোটকলের অপব্যবহার।” ডিআরআই আরও জানিয়েছে, রানিয়া রাওয়ের দেওয়া তিনটি বিবৃতি থেকে যে সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে তাতে অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আরও জোরালো হচ্ছে। অধিকাংশ অভিযোগ তিনি অস্বীকারও করেননি। তাছাড়া, এই চক্রে আরও কয়েকজন জড়িত রয়েছে, তাঁদের সম্পর্কে জানতে অভিনেত্রীকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

গত ৪ মার্চ রানিয়া রাওকে গ্রেফতারের পর লাভেল রোডের নন্দওয়ানি ম্যানশনে তার বাসভবনে অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। তল্লাশিতে ২.৬৭ কোটি রুপি ও ২.০৬ কোটি মূল্যের সোনা বাজেয়াপ্ত করা হয়। অভিযানের পর কর্মকর্তারা তার বাড়ি থেকে তিনটি বড় বাক্স উদ্ধার করেন। মোট বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তির মূল্য ১৭.২৯ কোটি রুপি।

রানিয়া রাওয়ের মোবাইল এবং ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করেছে রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের অফিসাররা। তবে সেগুলো লক থাকায় এখনও তার অ্যাক্সেস পায়নি ডিআরআই। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, অভিনেত্রীর মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

১২ কোটি টাকার সোনা নিয়ে বিমানে ওঠার পরিকল্পনা ছিল কন্নড় অভিনেত্রী রানিয়া রাওয়ের। সম্পর্কে তিনি আবার আইপিএস অফিসার ড. কে রামচন্দ্র রাওয়ের কন্যা। একেবারে শেষ মুহূর্তে তাকে গ্রেফতার করে রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগ (ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স, ডিআরআই)।

এদিকে এ ঘটনার কথা জানার পরেই অভিনেত্রীর বাবা ড. কে রামচন্দ্র রাও দাবি করে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, মেয়ের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে তার কোনো রকমের যোগ নেই। মাস চারেক আগে রানিয়ার বিয়ে হয়ে গেছে। তার পর থেকে মেয়ের সঙ্গে তাদের আর কোনো যোগাযোগ নেই। রামচন্দ্র আরও বলেন, মেয়ে কিংবা তার স্বামী কী ব্যবসা করেন, সেই সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না। যা ঘটেছে, তা আমাদের বড় ধাক্কা দিয়েছে। আমরা খুবই হতাশ। তবে আইন আইনের পথেই চলবে।

পুলিশের দাবি, অভিনেত্রী তার স্বামী যতীনের সঙ্গে প্রায়ই দুবাই যান। তবে তা কোনো ব্যবসায়িক বা পারিবারিক কারণ নয়, এই সোনাপাচারের জন্যই। তদন্তে দেখা গেছে যে, বিমানবন্দরে নিরাপত্তা তল্লাশি এড়াতে রানিয়া সবসময়েই পুলিশের সাহায্য পেতেন।

অভিনেত্রীকে আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

উল্লেখ্য, রানিয়া রাও বেশ কয়েকটি কন্নড় ও তামিল ছবিতে অভিনয় করেছেন।