বোরকা পরে আসায় ৬৭ শিক্ষার্থীকে স্কুল থেকে ফেরত পাঠিয়েছে ফ্রান্স
- Update Time : ০৮:৫৯:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ২১০ Time View
ফ্রান্সে সরকারি আদেশ অমান্য করে কোনো মুসলিম নারী শিক্ষার্থী আবায়া (বোরকা) পরে স্কুলে এলে তাকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের শিক্ষা ও যুবমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল অ্যাটাল।
ফ্রান্সের স্কুলগুলো ইতোমধ্যে সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা শুরু করেছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার ছিল ফ্রান্সের স্কুল শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিন। ফ্রান্সের টেলিভিশন চ্যানেল বিএফএম ব্রডকাস্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গ্যাব্রিয়েল অ্যাটাল জানান, এই দিনে দেশের বিভিন্ন স্কুলে আবায়া পরে এসেছিলেন প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী, কিন্তু প্রতিটি স্কুল তাদের গেটে এই শিক্ষার্থীদের আটকে দিয়ে শর্ত দিয়েছে— আবায়া খুললেই কেবল তাদেরকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে।
যেসব শিক্ষার্থী স্কুল কর্তৃপক্ষের এই শর্ত মেনে আবায়া খুলেছেন, তাদেরকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে; আর যারা মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন— তাদেরকে বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
‘মঙ্গলবার বিভিন্ন স্কুল থেকে ৬৭ জন শিক্ষার্থীকে বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়েছে,’ সাক্ষাৎকারে বিএফএম ব্রডকাস্টারকে বলেন ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রী।
ধর্ম নিরপেক্ষতা ফ্রান্সের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় ভিত্তি এবং যেসব পোশাক কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে, সেগুলো রাষ্ট্রীয় এই মূলনীতির পরিপন্থি— এই যুক্তিতে গত মাসে স্কুলগুলোতে আবায়া নিষিদ্ধ করে ফ্রান্স।
ফ্রান্সের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সরকারের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও কট্টর বামদলগুলোর মতে, এই পদক্ষেপের ফলে মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে।
মঙ্গলবারের সাক্ষাৎকারে আটাল বলেন, ‘(আবায়া খুলতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে) যেসব শিক্ষার্থীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে, তাদের প্রত্যেকের হাতে অভিভাবদের উদ্দেশে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে— ধর্ম নিরপেক্ষতা কোনো বাধা নয়, এটি স্বাধীনতা।’
‘যদি এর পরেও এমন ঘটে, সেক্ষেত্রে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করব।’
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালে ‘কোনো নির্দিষ্ট ধর্মকে প্রতিনিধিত্ব করে’ এমন সব পোশাক ও প্রতীক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিষিদ্ধ করেছিল ফ্রান্স। নিষিদ্ধ হওয়া এসব পোশাক ও প্রতীকের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল মুসলিমদের হিজাব, খ্রিস্টানদের ক্রুশ এবং ইহুদিদের কিপ্পা (মাথায় পরিধানের জন্য বিশেষ টুপি)। রহস্যজনক কারণে আবায়াকে এই ধরনের পোশাক ও প্রতীকের আওতার বাইরে রাখা হয়েছিল।
আইনটি প্রণয়ন করা হলেও এক যুগেরও বেশি সময় সেটি বাস্তবায়িত হয়েছে বেশ শিথিলভাবে। তিন বছর আগে প্যারিসে স্যামুয়েল প্যাটি নামের এক শিক্ষক শ্রেনীকক্ষে ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মুহম্মদ (সা.)-এর কার্টুন চিত্র প্রদর্শন করেন। এই ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ এক মুসলিম তরুণের ছুরিকাঘাতে খুন হতে হয় তাকে।
তারপর থেকে ২০০৪ সালের ওই আইনটি আইনটি কড়াকড়িভাবে বাস্তবায়নে মনযোগী হয় ফ্রান্সের সরকার।
সূত্র : এএফপি
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়