ঢাকা ০২:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
কুবির সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্তরসহ প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে শর্টকোড চালুর সিদ্ধান্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে বাস ট্র্যাকিং সিস্টেম ধর্ষণকারীর মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে গাজীপুরে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল নোয়াখালীতে নামাজ পড়তে গেলে মসজিদের শৌচাগারে শিশুকে বলৎকার বান্দরবানে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় ৪ আসামীর যাবজ্জীবন, ১ লাখ টাকা জরিমানা ধর্ষণ বিরোধী স্লোগানে মুখরিত কুবি ক্যাম্পাস বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়কসহ ৭ জন কারাগারে মেয়েকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় বাবাকে কুপিয়ে জখম কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহির্বিভাগের টিকিট বাণিজ্য

বৈধ পথে আন্তর্জাতিক কল কমায় শঙ্কায় আইজিডব্লিউ অপারেটররা

নওরোজ ডেস্ক
  • Update Time : ০১:১১:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৩৪ Time View

মোবাইল সেবা গ্রহণকারীর সংখ্যা বিগত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লেও দিন দিন দেশের মোবাইল ও টেলিফোন গ্রাহকদের মধ্যে আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদানের হার কমে যাচ্ছে। তাতে কমছে সরকারের রাজস্বও। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বিগত ২০০৮ সালে সরকার বৈধ পথে আন্তর্জাতিক অন্তর্গামী ও বহির্গামী কল আদান-প্রদানের মাধ্যমে রাজস্ব আয় নিশ্চিতে প্রথম ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লি­উ) লাইসেন্স প্রদান করে। ওই বছর প্রথমবারের মতো চারটি আইজিডব্লিউ অপারেটরকে লাইসেন্স দেয়া হয়। আর এখন পর্যন্ত বিআরটিসি থেকে বিটিসিএলসহ বিভিন্ন বেসরকারি আইজিডব্লিউ অপারেটর মিলিয়ে মোট ২৪টি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। কিন্তু সামপ্রতিক বছরগুলোতে ওসব অপারেটরের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদান উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে। যা আইজিডব্লিউ অপারেটরদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে শঙ্কায় ফেলছে। আইজিডব্লিউ অপারেটর এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আইজিডব্লিউ মূলত একটি সেবা। যার মাধ্যমে দেশের ভেতরে এবং বাইরের ফোনকল সংযুক্ত করা হয়। যখন কোনো গ্রাহক বাংলাদেশ থেকে বিদেশে কল করে বা বিদেশ থেকে বাংলাদেশে কোনো গ্রাহকের কাছে কল আসে, তখন তা আইজিডবি­উর মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। গ্রাহকরা বিদেশে কল করলে মোবাইল অপারেটররা কলটিকে আইজিডব্লিউতে পাঠায়। সেখান থেকে কলটি যে দেশে করা হয়েছে ওই নেটওয়ার্কে পৌঁছে যায়। একইভাবে যখন বিদেশ থেকে বাংলাদেশে কারো কাছে কল আসে, তখন কলটি আইজিডব্লিউর মাধ্যমে গ্রাহকের নির্ধারিত মোবাইল অপারেটরের নেটওয়ার্কে পৌঁছায়। সেখান থেকে গ্রাহক কল গ্রহণ করে।

সূত্র জানায়, বিগত ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের মোবাইল ও টেলিফোন নেটওয়ার্কে বৈধ আন্তর্জাতিক আগমনী কলের পরিমাণ ছিল ৭৩১ কোটি ৫৮ লাখ ৮১ হাজার ২৯৫ মিনিট। একই সময়ে দেশের মধ্য থেকে বহির্গামী আন্তর্জাতিক কলের পরিমাণ ছিল ৬ কোটি ২৩ লাখ ৫৩ হাজার ৪৫ মিনিট। যা আগের বছরের চেয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক আগমনী কলের পরিমাণ কমেছে ১১৬ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার ৬৩ মিনিট। একই সময়ে আগের বছরের তুলনায় বহির্গামী আন্তর্জাতিক কলের পরিমাণ ৯১ লাখ ৮০ হাজার ৯৭৬ মিনিট কমেছে। বিগত ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশের মোবাইল ও টেলিফোন নেটওয়ার্কে বৈধ আন্তর্জাতিক আগমনী কলের পরিমাণ ছিল ৮৪৭ কোটি ৮০ লাখ ৫১ হাজার ৩৫৮ মিনিট। একই সময়ে দেশের মধ্য থেকে বহির্গামী আন্তর্জাতিক কলের পরিমাণ ছিল ৭ কোটি ১৫ লাখ ৩৪ হাজার ২১ মিনিট। তাতে আগের বছরের চেয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক আগমনী কলের পরিমাণ ১৩ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ৭৪০ মিনিট কমেছে। একই সময়ে আগের বছরের তুলনায় বহির্গামী আন্তর্জাতিক কলের পরিমাণ ২৪ লাখ ৮৯ হাজার ৩৩ মিনিট কমেছে। আর ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের মোবাইল ও টেলিফোন নেটওয়ার্কে বৈধ আন্তর্জাতিক আগমনী কলের পরিমাণ ছিল ৮৬০ কোটি ৯৭ লাখ ৩২ হাজার ৯৮ মিনিট। একই সময়ে দেশের মধ্য থেকে বহির্গামী আন্তর্জাতিক কলের পরিমাণ ছিল ৭ কোটি ৪০ লাখ ২৩ হাজার ৫৪ মিনিট।

সূত্র আরো জানায়, আন্তর্জাতিক বহির্গামী কল কমে আসার একটি কারণ হচ্ছে ২০১০ সালের পর বিটিআরসি কর্তৃক আন্তর্জাতিক কলের ট্যারিফ কাঠামো হালনাগাদ না করা। ওই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন দেশে কলরেট উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন হয়েছে। যার কারণে বিশ্বব্যাপী অর্ধেকের বেশি দেশে বহির্গামী কল কমে এসেছে, যা আইজিডব্লিকে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন করছে। আইএলডিটিএস নীতিমালা অনুযায়ী ইন্টারনেট ট্রাফিক বাদে সব আন্তর্জাতিক সার্ভিস আইজিডব্লির মাধ্যমে পরিচালিত হবে, যার জন্য ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) রেসপনসিবল থাকবে। কিন্তু বিটিআরসি শুধু আন্তর্জাতিক আগমনী ও বহির্গামী কল পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে। বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও দেয়া হয়নি আন্তর্জাতিক এসএমএস পরিচালনার অনুমতি। সরকার যদি আইজিডব্লিউ অপারেটরদের আন্তর্জাতিক এসএমএস পরিচালনার সুযোগ দেয়, তবে সেখান থেকে প্রতি মাসে দেড় থেকে দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করা সম্ভব। যা বর্তমান রেভিনিউ থেকে প্রায় ৯ গুণ বেশি। তাছাড়া আইজিডব্লিউগুলোকে সিগন্যালিং লিংক রোমিংয়ের সুযোগ দিলে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয় হবে। এমনটা হলে আন্তর্জাতিক ভয়েস কল কমে আসার পরিস্থিতিতেও আইজিডবি­উ অপারেটররা টিকে থাকতে পারবে।

এদিকে টেলিকম খাত বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে উলে­খযোগ্য হারে কমে আসছে গ্লোবালি ভয়েস বেজড ট্রাফিক। বাংলাদেশেও ওই ধারাবাহিকতায় কমে আসছে। পরিস্থিতি উত্তরণে পলিসি লেভেলে ডাটা অ্যাডাপ্টেশন আরো বাড়ানো প্রয়োজন। তবে তা আইজিডব্লিউর ব্যবসাকে আরো তাড়াতাড়ি সংকুচিত করবে। এটা নেতিবাচক মনে হলেও দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার জন্য ইতিবাচক দিক। কারণ ইন্টারনেট অ্যাডাপ্টেশনের সঙ্গে সঙ্গে তা ইকোনোমিক ডেভেলপমেন্টকে প্রভাবিত করে, যেটা ভয়েস বেজড ট্রাফিকে নেই। এটা অবশ্যই আইজিডব্লিউ এবং এই সম্পর্কিত ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

অন্যদিকে এ বিষয়ে আইজিডব্লিউ অপারেটর ফোরামের (আইওএফ) চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) মুশফিক মনজুর জানান, বিশ্বব্যাপী হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক মেসেঞ্জার, ভাইবার, ইমোর মতো ওটিটি অ্যাপের ব্যবহার বাড়ার কারণে প্রচলিত মাধ্যমে আন্তর্জাতিক কলের পরিমাণ কমে এসেছে। এমনকি বর্তমানে ব্যবসায়িক কথোপকথনগুলোও ওটিটি অ্যাপের মাধ্যমে হয়ে থাকে। তাছাড়া ভিওআইপি প্রযুক্তি ব্যবহার করে অসাধু ব্যক্তিদের অবৈধ কল পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির অভাব আইজিডবি­উ ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

এ ব্যাপারে বিটিআরসির কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইকবাল আহমেদ (অব.) জানান, আইজিডব্লিউ অপারেটরদের দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী আন্তর্জাতিক এসএমএস পরিচালনার অনুমতি দেয়া নিয়ে বিটিআরসি ভাবছে। নতুন প্রযুক্তির আলোকে টেলিকম খাতের ব্যবসাকে পুনর্গঠন করতে নেটওয়ার্ক টপোলজি ও লাইসেন্সিং রেজিম পুনর্বিন্যাস করার কথাও ভাবা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

বৈধ পথে আন্তর্জাতিক কল কমায় শঙ্কায় আইজিডব্লিউ অপারেটররা

নওরোজ ডেস্ক
Update Time : ০১:১১:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

মোবাইল সেবা গ্রহণকারীর সংখ্যা বিগত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লেও দিন দিন দেশের মোবাইল ও টেলিফোন গ্রাহকদের মধ্যে আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদানের হার কমে যাচ্ছে। তাতে কমছে সরকারের রাজস্বও। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বিগত ২০০৮ সালে সরকার বৈধ পথে আন্তর্জাতিক অন্তর্গামী ও বহির্গামী কল আদান-প্রদানের মাধ্যমে রাজস্ব আয় নিশ্চিতে প্রথম ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লি­উ) লাইসেন্স প্রদান করে। ওই বছর প্রথমবারের মতো চারটি আইজিডব্লিউ অপারেটরকে লাইসেন্স দেয়া হয়। আর এখন পর্যন্ত বিআরটিসি থেকে বিটিসিএলসহ বিভিন্ন বেসরকারি আইজিডব্লিউ অপারেটর মিলিয়ে মোট ২৪টি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। কিন্তু সামপ্রতিক বছরগুলোতে ওসব অপারেটরের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদান উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে। যা আইজিডব্লিউ অপারেটরদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে শঙ্কায় ফেলছে। আইজিডব্লিউ অপারেটর এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আইজিডব্লিউ মূলত একটি সেবা। যার মাধ্যমে দেশের ভেতরে এবং বাইরের ফোনকল সংযুক্ত করা হয়। যখন কোনো গ্রাহক বাংলাদেশ থেকে বিদেশে কল করে বা বিদেশ থেকে বাংলাদেশে কোনো গ্রাহকের কাছে কল আসে, তখন তা আইজিডবি­উর মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। গ্রাহকরা বিদেশে কল করলে মোবাইল অপারেটররা কলটিকে আইজিডব্লিউতে পাঠায়। সেখান থেকে কলটি যে দেশে করা হয়েছে ওই নেটওয়ার্কে পৌঁছে যায়। একইভাবে যখন বিদেশ থেকে বাংলাদেশে কারো কাছে কল আসে, তখন কলটি আইজিডব্লিউর মাধ্যমে গ্রাহকের নির্ধারিত মোবাইল অপারেটরের নেটওয়ার্কে পৌঁছায়। সেখান থেকে গ্রাহক কল গ্রহণ করে।

সূত্র জানায়, বিগত ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের মোবাইল ও টেলিফোন নেটওয়ার্কে বৈধ আন্তর্জাতিক আগমনী কলের পরিমাণ ছিল ৭৩১ কোটি ৫৮ লাখ ৮১ হাজার ২৯৫ মিনিট। একই সময়ে দেশের মধ্য থেকে বহির্গামী আন্তর্জাতিক কলের পরিমাণ ছিল ৬ কোটি ২৩ লাখ ৫৩ হাজার ৪৫ মিনিট। যা আগের বছরের চেয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক আগমনী কলের পরিমাণ কমেছে ১১৬ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার ৬৩ মিনিট। একই সময়ে আগের বছরের তুলনায় বহির্গামী আন্তর্জাতিক কলের পরিমাণ ৯১ লাখ ৮০ হাজার ৯৭৬ মিনিট কমেছে। বিগত ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশের মোবাইল ও টেলিফোন নেটওয়ার্কে বৈধ আন্তর্জাতিক আগমনী কলের পরিমাণ ছিল ৮৪৭ কোটি ৮০ লাখ ৫১ হাজার ৩৫৮ মিনিট। একই সময়ে দেশের মধ্য থেকে বহির্গামী আন্তর্জাতিক কলের পরিমাণ ছিল ৭ কোটি ১৫ লাখ ৩৪ হাজার ২১ মিনিট। তাতে আগের বছরের চেয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক আগমনী কলের পরিমাণ ১৩ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ৭৪০ মিনিট কমেছে। একই সময়ে আগের বছরের তুলনায় বহির্গামী আন্তর্জাতিক কলের পরিমাণ ২৪ লাখ ৮৯ হাজার ৩৩ মিনিট কমেছে। আর ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের মোবাইল ও টেলিফোন নেটওয়ার্কে বৈধ আন্তর্জাতিক আগমনী কলের পরিমাণ ছিল ৮৬০ কোটি ৯৭ লাখ ৩২ হাজার ৯৮ মিনিট। একই সময়ে দেশের মধ্য থেকে বহির্গামী আন্তর্জাতিক কলের পরিমাণ ছিল ৭ কোটি ৪০ লাখ ২৩ হাজার ৫৪ মিনিট।

সূত্র আরো জানায়, আন্তর্জাতিক বহির্গামী কল কমে আসার একটি কারণ হচ্ছে ২০১০ সালের পর বিটিআরসি কর্তৃক আন্তর্জাতিক কলের ট্যারিফ কাঠামো হালনাগাদ না করা। ওই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন দেশে কলরেট উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন হয়েছে। যার কারণে বিশ্বব্যাপী অর্ধেকের বেশি দেশে বহির্গামী কল কমে এসেছে, যা আইজিডব্লিকে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন করছে। আইএলডিটিএস নীতিমালা অনুযায়ী ইন্টারনেট ট্রাফিক বাদে সব আন্তর্জাতিক সার্ভিস আইজিডব্লির মাধ্যমে পরিচালিত হবে, যার জন্য ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) রেসপনসিবল থাকবে। কিন্তু বিটিআরসি শুধু আন্তর্জাতিক আগমনী ও বহির্গামী কল পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে। বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও দেয়া হয়নি আন্তর্জাতিক এসএমএস পরিচালনার অনুমতি। সরকার যদি আইজিডব্লিউ অপারেটরদের আন্তর্জাতিক এসএমএস পরিচালনার সুযোগ দেয়, তবে সেখান থেকে প্রতি মাসে দেড় থেকে দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করা সম্ভব। যা বর্তমান রেভিনিউ থেকে প্রায় ৯ গুণ বেশি। তাছাড়া আইজিডব্লিউগুলোকে সিগন্যালিং লিংক রোমিংয়ের সুযোগ দিলে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয় হবে। এমনটা হলে আন্তর্জাতিক ভয়েস কল কমে আসার পরিস্থিতিতেও আইজিডবি­উ অপারেটররা টিকে থাকতে পারবে।

এদিকে টেলিকম খাত বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে উলে­খযোগ্য হারে কমে আসছে গ্লোবালি ভয়েস বেজড ট্রাফিক। বাংলাদেশেও ওই ধারাবাহিকতায় কমে আসছে। পরিস্থিতি উত্তরণে পলিসি লেভেলে ডাটা অ্যাডাপ্টেশন আরো বাড়ানো প্রয়োজন। তবে তা আইজিডব্লিউর ব্যবসাকে আরো তাড়াতাড়ি সংকুচিত করবে। এটা নেতিবাচক মনে হলেও দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার জন্য ইতিবাচক দিক। কারণ ইন্টারনেট অ্যাডাপ্টেশনের সঙ্গে সঙ্গে তা ইকোনোমিক ডেভেলপমেন্টকে প্রভাবিত করে, যেটা ভয়েস বেজড ট্রাফিকে নেই। এটা অবশ্যই আইজিডব্লিউ এবং এই সম্পর্কিত ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

অন্যদিকে এ বিষয়ে আইজিডব্লিউ অপারেটর ফোরামের (আইওএফ) চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) মুশফিক মনজুর জানান, বিশ্বব্যাপী হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক মেসেঞ্জার, ভাইবার, ইমোর মতো ওটিটি অ্যাপের ব্যবহার বাড়ার কারণে প্রচলিত মাধ্যমে আন্তর্জাতিক কলের পরিমাণ কমে এসেছে। এমনকি বর্তমানে ব্যবসায়িক কথোপকথনগুলোও ওটিটি অ্যাপের মাধ্যমে হয়ে থাকে। তাছাড়া ভিওআইপি প্রযুক্তি ব্যবহার করে অসাধু ব্যক্তিদের অবৈধ কল পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির অভাব আইজিডবি­উ ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

এ ব্যাপারে বিটিআরসির কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইকবাল আহমেদ (অব.) জানান, আইজিডব্লিউ অপারেটরদের দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী আন্তর্জাতিক এসএমএস পরিচালনার অনুমতি দেয়া নিয়ে বিটিআরসি ভাবছে। নতুন প্রযুক্তির আলোকে টেলিকম খাতের ব্যবসাকে পুনর্গঠন করতে নেটওয়ার্ক টপোলজি ও লাইসেন্সিং রেজিম পুনর্বিন্যাস করার কথাও ভাবা হচ্ছে।